গোটা বিশ্ব আপাতত ভাইরাসের সংক্রমণে কাবু। লাখো লাখো মানুষ আপাতত মারণ ভাইরাসের প্রকোপে নাস্তানাবুদ। চীন থেকে প্রথম সারির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা ভাইরাসের মোকাবিলায় এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ। সংক্রমণ না কমলেও দু-তিন মাস লকডাউনে গৃহবন্দি থাকার পরে মানুষ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে।
ভাইরাসের আঁচ থেকে মুক্ত নয় ভারতও। দেশের রাজধানী দিল্লি থেকে বাণিজ্য নগরী করোনা হানায় বিপর্যস্ত। আপাতত গোটা বিশ্বেই খেলা বন্ধ। আর্থিক ক্ষতির মুখে সাধারণ মানুষ থেকে ক্রীড়াবিদরাও।
দিল্লি নিবাসী ফুটবল কোচ সন্দীপ ঢোলে এই লকডাউনেই অনন্য নজির তৈরি করে ফেলেছেন। অনলাইনে ক্লাস চালু রেখে।
বহুদিনই দিল্লির বাসিন্দা সন্দীপবাবু। দ্বিতীয় ডিভিশনের হিন্দুস্তান এফসি-র সঙ্গে জড়িয়ে ছ’বছরেরও উপরে। ফুটবলার হিসেবে দিল্লি পাড়ি দেওয়া নদিয়ার বঙ্গসন্তান প্রায় দু’দশকের কাছাকাছি রাজধানীতে রয়েছেন।
হিন্দুস্থান এফসি-র বাঙালি কোচ বর্তমানে এয়ারফোর্সে কর্মরত। এয়ারফোর্স স্কুলের হয়ে কোচিং করানো সন্দীপবাবু অ্যাকাডেমিও খুলেছেন সম্প্রতি। সন্দীপবাবুর হাতে গড়া বহু ছাত্র আজ ভারতীয় ফুটবলের সম্পদ।
লকডাউনের কারণে প্রাথমিকভাবে সমস্যায় পড়েছিলেন তিনিও। মাঠে নামা তো দূর অস্ত। ফুটবলে পা ছোঁয়াতেই পারেননি কয়েকমাস। এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিজেই মুশকিল আসান করেন।
খুদেদের অনলাইনে পাঠ সন্দীপবাবুর
ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনলাইনেই চালু রেখেছেন ক্লাস। ঘরের মধ্যে পুত্রের সঙ্গেই গা ঘামিয়েছেন। কেমন ছিলেন লকডাউনে? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, "সংক্রমণ কবে কমবে তা এখনও ঠিক নেই। তা বলে কি কোচিং থেমে থাকবে! অনলাইনেই ক্লাস করে গিয়েছি ছাত্রদের সঙ্গে।"
প্রতিদিন নিয়ম মেনে জুম ভিডিও এপে লগ ইন করে ছাত্রদের দিয়েছেন, ঘরে বন্দি থেকেও সুস্থ থাকার চাবিকাঠি! কী কী মন্ত্র দিলেন প্রিয় ছাত্রদের? সন্দীপবাবু পরপর ভিডিও পাঠিয়ে যোগাযোগ রেখেছেন ছাত্রদের সঙ্গে। সেই ভিডিওয় (জাম্পিং জ্যাকস, ওয়াল সিটস, পুশ আপস, সিট আপস, স্টেপ আপ) খুঁটিনাটি আলোচনা করা হয়েছে।
নিজের পুত্রের সঙ্গে ঘরের মধ্যেই শরীরচর্চা বাঙালি কোচের
কতক্ষন ধরে এই অনুশীলন চলবে, মাঝে বিরতির জন্য বরাদ্দ সময় কতক্ষণ- সব বিষয়েই তিনি ভিডিও চ্যাটে বুঝিয়েছেন।
পাশাপাশি, ফুটবলের স্কিল নিয়েও বহু সেশন আলোচনা করেছেন তিনি। ছাত্রদের গুরুদায়িত্ব নিয়ে লকডাউনে ফিটনেস ধরে রাখার জন্য বিশেষভাবে ডায়েট চার্টও তৈরি করে দিয়েছেন ফুটবল শিক্ষার্থীদের।
কিছুদিন আগেই ওড়িশা এফসির গ্রাসরুট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে অংশ নেন তিনি। আইএসএল খেলা দলের শিশু ফুটবলারদের অনলাইনে বিশেষ ক্লাস নিয়েছেন।
সব মিলিয়ে লকডাউন থামিয়ে রাখতে পারেনি সন্দীপবাবুর জীবন।