Advertisment

ICC World Cup 2019: হারলেও ‘সত্যিকারের বড় দল’ হওয়ার বার্তা দিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দল ভাল খেলছে। নিয়মিত জিতছে। কিছু কিছু ম্যাচে হচ্ছে লড়াই। চারদিকে বাজছে ‘বড় দলে’ পরিণত হওয়ার গান। আসলেই কি তাই? একবাক্যে উত্তর দেওয়া কঠিন। ‘হ্যাঁ’ বলতে গেলে নানা যুক্তি দিতে হবে। ‘না’ বলতে গেলে সেই যুক্তি খণ্ডাতে হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bangladesh's spirited resistance stands out in narrow loss to Kiwis

হারলেও ‘সত্যিকারের বড় দল’ হওয়ার বার্তা দিল বাংলাদেশ (ছবি-টুইটার/আইসিসি)

বাংলাদেশ দল ভাল খেলছে। নিয়মিত জিতছে। কিছু কিছু ম্যাচে হচ্ছে লড়াই। চারদিকে বাজছে ‘বড় দলে’ পরিণত হওয়ার গান। আসলেই কি তাই? একবাক্যে উত্তর দেওয়া কঠিন। ‘হ্যাঁ’ বলতে গেলে নানা যুক্তি দিতে হবে। ‘না’ বলতে গেলে সেই যুক্তি খণ্ডাতে হবে।

Advertisment

কেনিংটন ওভালের নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে সেই যুক্তিতর্কের খেলা খেলা যেতে পারে। তার আগে একটু পেছনের কথা বলতে হবে। আপনি কয়েক বছর ধরে ঘরের মাঠে জিতছেন। দারুণ ভালো খেলছেন। এতটুকুতে আপনাকে কোনোমতে ‘বড় দল’ বলা গেলেও কিছুতেই ‘সত্যিকারের বড় দল’ বলা যাবে না। আপনাকে নিজের মহাদেশে যেমন জিততে হবে, তেমনি বাইরেও জিততে হবে। আপনাকে স্পিনিং উইকেটে যেমন স্বাভাবিক খেলতে হবে, তেমনি পেস সহায়ক উইকেটেও বলতে হবে, ‘আসুন খেলা হবে!’

আরও পড়ুন: আজ ময়দানে ‘আসল’ পরীক্ষার সামনে বাংলাদেশ

আপনার ভান্ডারে টপঅর্ডারে থাকতে হবে খেলাটা ধরার মতো ব্যাটসম্যান। মিডল, লোয়ার অর্ডারে থাকতে হবে জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসার মতো কয়েকজন। বাংলাদেশ দলে এমন কয়েকজন আছেন বলেই ঘরের মাঠে গত কয়েক বছরে শিহরিত হওয়ার মতো সাফল্য এসেছে। আর পরের মাঠে কী করছে, সেটি যদি ভুলে যান তবে শুধু এশিয়া কাপের কথা মনে করুন। ফাইনালে ভারতের কাছে অন্তিম মুহূর্তে হারার আগে, যে লড়াইটা টিম টাইগার্স উপহার দেয় সেটির দৌলতে ‘সত্যিকারের বড় দল’ না বলা গেলেও একটা বার্তা অন্তত ছিল। এর পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফি তো থাকলই। আর? বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের কথা নিশ্চয়ই আপনি ভুলে যান নি। অমন বিরুদ্ধ পরিবেশে যে অনিন্দ্য ইতিহাস মাশরাফীরা লিখেছেন, সেটি ক্রিকেটের ‘অন্য লেভেলে’র বিজ্ঞাপন।

এবার আসা যাক বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে। সত্যিকারের বড় দলের নিয়ামক হিসেবে অনেকেই এই মেগা টুর্নামেন্টকে মাপকাঠি বিবেচনা করেন। সেই বিবেচনায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে কোনোভাবেই ফেলে দেওয়া যায় না। দক্ষিণ আফ্রিকাকে টাইগাররা আগেও হারিয়েছে। হোয়াইটওয়াশ পর্যন্ত করেছে। সেটা নিজেদের দেশে। ইংলিশ কন্ডিশনে তাদের ওই পেস বল সামলে ৩৩০ রান তুলে ওইভাবে হারানো বাংলাদেশের জন্য একটু আলাদা অভিজ্ঞতা।

এরপর এলো দ্বিতীয় ম্যাচ। এদিন ট্রেন্ট বোল্টের সুইং, ম্যাট হেনরির ধারাবাহিক ১৪০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির বল, সঙ্গে লকি ফার্গুসনের ‘সাপের ছোবল’ সাকিবরা কতটা স্বাভাবিকভাবে সামলান, সেটিই ছিল মূলত আলোচনায়। প্রতিপক্ষ শিবির থেকে শর্টবল আসবে। জানা ছিল। উঠবে গতির ঝড়। সেটাও ছিল জানা। এই জানা-শোনার মাঝে তামিম, মিথুন, মিরাজরা পরাস্ত হলেও রান চলে যায় ২৪৪’এ। আগের দিন থাকলে দেড়শ’র আগে বুক হওয়া নিয়ে চিন্তা করতো হতো। প্রতিপক্ষ দলে এক-দুজন ভালো বোলার থাকলে তাদের দেখেশুনে খেলে দিলেই হয়। কিন্তু একসঙ্গে তিন-চারজন থাকলে আপনাকে স্কিল আর মানসিক শক্তির সর্বোচ্চ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

‘সত্যিকারের বড় দলে’র কাতারে আসার পথে থাকা বাংলাদেশ সেই পরীক্ষায় পাস মার্কস পেয়েছে, এটি বললে অত্যুক্তি হওয়ার কথা নয়। বুধবার ২০ থেকে ৩০ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশ মুশফিকুর রহিমের ওই রানআউটের পরও ৬৯ রান তোলে। এই অংশটুকু আরেকটু বড় করতে পারলে নিউজিল্যান্ড আরও বিপদে পড়ে যেত।

নিউজিল্যান্ডের এই দলটি বোলিংয়ে যেমন, ব্যাটিংয়েও তেমন। তাদের ওপেনিং বোলার টিম সাউদি এখনো ইনজুরিতে। তিনি ফিরলে দলটির শক্তি কোথায় যাবে, সেটি ভাববার বিষয়। এই দলটির ব্যাটিং লাইনআপ কতটা শক্তিশালী, এবার সেই আলোচনায় আসা যাক। নিজেদের প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের ১৩৬ রান দেখতে দেখতে পার করে ফেলেন দুই কিউই ওপেনার কলিন মানরো এবং মার্টিন গাপটিল, মাত্র ১৬.১ ওভারে। চার নম্বরে আছেন আরেকজন। নাম তাঁর টেইলর।

২০১৫ বিশ্বকাপের পর ওয়ান-ডেতে তাঁর চেয়ে একমাত্র বিরাট কোহলির গড় ভালো, ৬৮.৮। তাদের লোয়ার অর্ডারও যারপরনাই শক্তিশালী। এই দশকে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে কিউইদের শেষদিকের ব্যাটিং সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। ২০১০ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডের ৮ থেকে ১১ নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যানের গড় ১৭.৫, স্ট্রাইক রেট ৯১। গতকালও তাদের দাপট দেখা গেছে। শেষ তিন ব্যাটসম্যান ২৩ বলে ২৭ তুলে ম্যাচ শেষ করেন। তিনজনের স্ট্রাইক রেটের গড় ১১৬.৩৪! এমন দলের বিপক্ষে, এমন উইকেটে যারা ২৪৪ রান নিয়ে দুই উইকেটে হারে, তারা ‘সত্যিকারের বড় দল’ না হলেও সেই বার্তা যে ছড়াচ্ছে, সেটি নিশ্চয়ই বলা যায়।

New Zealand Bangladesh Cricket World Cup
Advertisment