scorecardresearch

বিদায়! মাঠ ছাড়লেন ফুটবলের রাজপুত্র, উজ্জ্বল স্মৃতিতে মজে বিশ্ব

তিনি যেন ফুটবলেরই। পৃথিবীতে এসেছিলেন খেলার মঞ্চ মাতাবেন বলেই। পায়ের নিখুঁত কারসাজিতেই হৃদয়জয় করেছিলেন কোটি কোটি মানুষের।

বিদায়! মাঠ ছাড়লেন ফুটবলের রাজপুত্র, উজ্জ্বল স্মৃতিতে মজে বিশ্ব

কিংবদন্তি, অমর, সেরার সেরা আর এরপর দিয়েগো মারাদোনা। ফুটবলের ‘রাজপুত্র’ পাড়ি দিলেন ঈশ্বরের দেশে। বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৬০ বছরেই যখন বিদায় দিলেন বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের তখন চোখের কোণ চিকচিক, তাঁদেরও বুকে ব্যথা।

তিনি যেন ফুটবলেরই। পৃথিবীতে এসেছিলেন খেলার মঞ্চ মাতাবেন বলেই। পায়ের নিখুঁত কারসাজিতেই হৃদয়জয় করেছিলেন কোটি কোটি মানুষের। পাস থেকে ড্রিবল, পেনাল্টি, মাঠের এই ঈশ্বর সবসমই ঠিক। ভুল কেবল জীবনে। ড্রাগস, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগ, বিশ্বকাপের ইতিহাসে তাঁর ওই হাত ছোঁয়ানো বিতর্কিত গোল অনেকে মনে রেখেছেন। কিন্তু বুধবার যখন পাড়ি দিলেন অন্য কোনও ময়দানে সব বিতর্ককেও লং শটে একেবারে চুপ করিয়ে দিলেন।

বিতর্ক, সমালোচনা থাকবেই, কিংবদন্তীদের জীবনে তা থাকে। মারাদোনা আসলে ম্যাজিকাল। জীবন থেকে মাঠ নিজের মতো করে নিয়েছিলেন। দুই রাজ্যের তিনিই সম্রাট। ছোট থেকে বড় হওয়া, মাঠে দাপিয়ে বেড়ানো, ফুটবলের পুঁথিগত বিদ্যাকে উল্টে পাল্টে দেওয়া, একাধিক বান্ধবী, মাদক দ্রব্যে নাম জড়ানো… কিছু যায় আসে না। বিপক্ষের প্লেয়ারদের নাস্তানাবুদ করা ওইসব ড্রিবলিং মনে করাবে তিনি ম্যাজিকাল, তিনি মারাদোনা।

একটা বল, একটা মাঠ, দুটো গোলপোস্ট, বিপক্ষের ১১ জন প্লেয়ার, একজোড়া পায়ের কাছে এসব কোন বাধাই নয়, ছিলও না কোনওদিন। দেশ, ক্লাবকে বিশ্বকাপ, লিগের ট্রফির স্বাদ দিয়েছিলেন তিনিই। তিনি দীর্ঘাবয়ব নন, তাই হয়ত ১৯৮৬ সালের ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর ‘হাত ছোঁয়ানো গোল’ নিয়ে আজও ফিসফিসিয়ে পিছনে কথা বলেন অনেকে।

কিন্তু গোলের নেপথ্যে ওই দৌড়টা দেখেছিলেন? মাঝ মাঠ থেকে আক্রমণ। গ্লেন হডল পাস করলেন মারাদোনাকে, তখন সেন্টার লাইন ক্রস করেননি রাজপুত্র। অগত্যা একেবারে টুইস্ট। পায়ের অমন মোচরে বিপক্ষের দুই প্লেয়ার তখন পাথর। আশ্চর্য! বল তখনও রাজপুত্রের পায়েই সেঁটে। এরপর লম্বা ছুট। শেষ ধাপে স্টপারদের শক্তির বিরুদ্ধে ডান দিকে বল ড্রিবল করেই দাগলেন কামান। তখনই হয়ত হাতটা… অবিশ্বাস্য এই গোল দেখে স্প্যানিশ কমেন্টেটরও এমন উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন ২ লিটার জল খেয়ে শান্ত হতে হয়েছিল তাঁকে। এটা অবশ্য শোনা কথা।

সেই দৌড়

তিনি মারাদোনা, ব্যাক হিলের ওই কারুকাজ, বিপক্ষকে কাটিয়ে দেওয়া, ডাইভ, আর্জেন্তেনিয় পুত্রের খেলার মাধুর্য্য তাঁকে মনে করাবে বারংবার। পেলের পর তিনিই প্রথম প্লেয়ার যিনি নির্দিষ্ট পজিশন নয়, সারা মাঠ জুড়ে খেলতেন। তাই তিনি অদ্বিতীয়। মারাদোনারা বহু হন না। দিকশূন্যপুরের পথে যাওয়া মানুষটির অফুরন্ত শক্তি যখন থামল, হয়তো সমালোচনা ফুরোল, কিন্তু তিনি মাঠের জাদুকর। রেফারির বাঁশিতে খেলা শেষ হল ঠিকই তবে আজ অবশ্য লাল কার্ডের জন্য নয়, নিজেই মাঠ ছাড়লেন, সময়ের অনেক আগেই। বিশ্বের ফুটবল ইতিহাসে তিনি ‘রাজপুত্র’, অনুরাগীদের ভালোবাসায় ডিয়েগো মারাদোনা ‘ঈশ্বর’! আর একথা কে না জানে, ঈশ্বর অবিনশ্বর হন!

Read the story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Sports news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Diego maradona and his hand with god mourns world