মারাদোনার মৃত্যুর পর ছয় মাস কেটে গেলেও বিতর্ক থামার লক্ষণ নেই। পরিকল্পনা করেই মারাদোনাকে হত্যা করা হয়েছিল কিনা, সেই বিষয়েই এবার তদন্ত চলছে আর্জেন্টিনায়। সোর্স মারফত সংবাদসংস্থা এএফপি জানতে পেরেছে সাত জনের বিরুদ্ধে খুনের তদন্ত চলছে।
অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন মারাদোনার ব্যক্তিগত নিউরোসার্জন লিওপোল্ড লুপে, মনোবিদ অগাস্টিনা কসচভ এবং মনোবিজ্ঞানী কার্লোস দিয়াজ। অপরাধ প্রমাণিত হলে প্রত্যেকের ৮-২৫ বছর পর্যন্ত জেল হাজত হতে পারে। আপাতত অভিযুক্তদের দেশ ছাড়তে বারণ করা হয়েছে। ৩১ মে থেকে ১৪ জুনের মধ্যে তদন্তে ডাকলেই হাজিরা দিতে হবে তাঁদের।
আরো পড়ুন: করোনার শিকার এবার মিলখা সিং! বাড়িতেই জ্বরে কাবু উড়ন্ত শিখ
মারাদোনার মৃত্যুর পর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই রিপোর্টেই বলা হয়েছে, মারাদোনার চিকিৎসায় একাধিক ক্ষেত্রে গাফিলতি ছিল। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অগ্রিম চিকিৎসা করানো হয়নি। কার্যত মৃত্যু মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল কিংবদন্তিকে।
ফুটবল ঈশ্বরের মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তারপরেই ক্রমশ মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়েন তিনি। আর মৃত্যুর পরেই মারাদোনার দুই কন্যা চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা নিউরো সার্জন লিওপোল্ড লুপের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন। আর্জেন্টিনীয় আইনজীবীদের ধারণা চিকিৎসকরা গাফিলতি করেন নি। তবে তাঁরা ভালো ভাবেই জানত, মারাদোনা মারা যাবেন। তা জেনেও কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেননি।
মারাদোনার কন্যাদের নিয়োগ করা কৌঁসুলিদের হাতে কিছু অডিও, টেক্সট মেসেজ এসেছে, সেখান থেকে ধারণা করা হচ্ছে, মারাদোনা যে অস্ত্রোপচারের পরেও মদ্যপান করছিলেন, মারিজুয়ানা নিচ্ছেন, তা ভালমতই জানতেন তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। তা সত্ত্বেও মারাদোনাকে আসক্তি থেকে সরানোর কোনো প্রচেষ্টাই করেননি তাঁরা।
সেই মেডিকেল রিপোর্টের আরো লেখা হয়েছে, মৃত্যুর আগে মারাদোনার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল, এমনকি উপসর্গ দেখা দিলেও তা উপেক্ষাই করা হয়েছে।
মারাদোনার মৃত্যুর তদন্তের সঙ্গেই আরো একটি বিষয়ে আইনি জটিলতা চলছে। কিংবদন্তির মৃত্যুর পর সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে ইতোমধ্যেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাঁর পাঁচ সন্তান, আইনজীবী ম্যাটিয়াস মোরলা এমনকি মারাদোনার ভাইয়েরাও সম্পত্তির দাবি করছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন