Advertisment

ভালবাসার নিদর্শন: ইস্টবেঙ্গল ভক্তের লাল-হলুদ বাড়ি

দেড় কাঠা জমিতে বানিয়ে ফেলেছেন একটা লাল-হলুদ বাড়ি। এক ঝলক দেখলে মনে হবে এ যেন খোদ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবেরই একটা এক্সটেনশন। বাড়ির বাইরের দেওয়ালে লিখিয়েছেন, 'হৃদয় জুড়ে শুধুই ইস্টবেঙ্গল'।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Eastbengal Fan Express Photo Shashi Ghosh

নিজের বাড়ির দিকে তাকিয়ে তন্ময় ভৌমিক। ছবি: শশী ঘোষ

ডানকুনি স্টেশন থেকে টোটোতে মিনিট দশেক কালিপুর। সেখান থেকে হাঁটা পথে পূর্বাশা পাড়া। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই পাড়ায় একজন ভীষণভাবে খবরে উঠে এসেছেন। টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিতে কর্মরত বছর উনত্রিশের তন্ময় ভৌমিক। যিনি মোহনবাগানের ডেরায় বানিয়ে ফেলেছেন ইস্টবেঙ্গল ভিলা।

Advertisment

কলকাতা লিগের ভরা বাজারে কাজে কাজেই খবরে তন্ময়। দেড় কাঠা জমিতে বানিয়ে ফেলেছেন একটা লাল-হলুদ বাড়ি। এক ঝলক দেখলে মনে হবে এ যেন খোদ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবেরই একটা এক্সটেনশন। বাড়ির বাইরের দেওয়ালে লিখিয়েছেন, 'হৃদয় জুড়ে শুধুই ইস্টবেঙ্গল'। নিচে বিশাল এক ক্লাবের লোগো। এখানেই শেষ নয়, বাড়ির অন্দরসজ্জাতেও লাল-হলুদ আবেগ ফুটে উঠছে। দরজা-জানলা থেকে পর্দার কাপড়, এমনকি ছাদের ওপরের জলের ট্যাঙ্কও শোনাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল প্রীতির গল্প।

East Bengal Fan Express Photo Shashi Ghosheastbengal-1122-002 এই সেই ইস্টবেঙ্গল ভিলা। ছবি: শশী ঘোষ।

২০১৫-তে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা দিয়ে কেনা জমিতে আট মাসে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে তন্ময়ের ইস্টবেঙ্গল ভিলা। স্বপ্নের নির্মাণে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে রঙের জন্য তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার। তন্ময় বলছেন, "ফুটবলের জ্ঞান আসার পর থেকেই শুধু ইস্টবেঙ্গলকে চিনেছি। ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল, কখনও নিজে বাড়ি করতে পারলে সেখানে লাল-হলুদ আবেগ থাকবে। ক্লাবের রঙ থেকে লোগো, সবই দেওয়ার চেষ্টা করব। আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। এই অনুভূতিই আলাদা। ভাষায় বোঝাতে পারব না। ডিজাইন থেকে কনসেপ্ট, সবটাই আমার। এর আগে কেউ এরকম কিছু করেছে বলে শুনিও নি।"

East Bengal Fan Express Photo Shashi Ghosheastbengal-1265-003 তন্ময়ের লাল-হলুদ আবেগ ফুটে উঠেছে বাড়ির জানলাতেও। ছবি: শশী ঘোষ

তন্ময়ের হাতের ট্যাটু থেকে ফোনের ব্যাক কভার, স্কুটির গ্রাফিক্সেও শুধুই ইস্টবেঙ্গল। গত ১৯ অগাস্ট তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন প্রাক্তন ফুটবলারকে। যদিও এসেছিলেন লাল-হলুদের দুই প্রাক্তন, পেন ওরজি এবং সৌমিক দে। ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের বিখ্যাত 'লজেন্স মাসি' যমুনা দাস। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন সৌমিক বলছেন, "মজা করেই কথাটা বলছি, তন্ময় সত্যিই ইস্টবেঙ্গলের পাগল ফ্যান। ওর বাড়ি বানানোর খবরটা রাষ্ট্র হয়ে গেছে। এরকম কিছু আমি আগে দেখিনি। উদ্বোধন করতে এসে দারুণ লেগেছিল। খুবই ভাল উদ্যেগ এটা। আশা করি ও ভবিষ্যতেও এরকম কিছু করবে।" সৌমিক নিজের খেলার একটা জার্সিও উপহার দিয়েছিলেন তন্ময়কে।

East Bengal Fan Express Photo Shashi Ghosheastbengal-1328-001 ভিলা এবং ভিলার মালিক। ছবি: শশী ঘোষ

ইস্টবেঙ্গলের আসিয়ান কাপ জয়ের সময় থেকেই নিয়মিত খেলা দেখা শুরু করেন তন্ময়। ২০০৬-০৭ থেকে ইস্টবেঙ্গল মাঠে আসছেন তিনি। তন্ময়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ডানকুনির মতো মোহনবাগান অধ্যুষিত এলাকায় তিনি কীভাবে এই কাজটা করলেন? তন্ময় বলছেন, "সত্যি বলতে, আমার পাড়ায় আমি একাই ইস্টবেঙ্গলের কট্টর সমর্থক। কিন্তু এই বাড়ি বানানোর পর আমাকে মোহনবাগানের ফ্যানেরা কোনও কটুক্তি বা ব্যঙ্গ করেনি। অনেকে ভালও বলেছে। আমি কিন্তু মোহনবাগানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি।" তন্ময়ের মতো ফুটবল ফ্যানেদের জন্যই বোধহয় জনগণের ক্লাবগুলো এভাবে বেঁচে থাকে মানুষের মনে।

East Bengal Kolkata Football Mohun Bagan
Advertisment