এটিকের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলা ছিল। সেই ম্যাচ খেলে উঠেই সুখবর পেলেন দুজনে- দিলীপ ওঁরাও, মনোতোষ চাকলাদার। সন্তোষে বাংলার রূপকথার উড়ানের দুই কারিগর। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস স্বয়ং দুজনকে ফোন করে ৯ তারিখে তাঁর দফতরে যোগাযোগ করতে বলেছেন।
ম্যাচের উত্তেজনা তখনও গলা থেকে নামেনি। তাঁর আগেই সুসংবাদ। বাংলা দলের সতীর্থরা শুভেচ্ছা জানানোর জানিয়েছেন। তারপরে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র ফোনে ঘোর গলায় মনোতোষ বলছিলেন, "অনেক বড় স্বীকৃতি। রাজ্য সরকার এত বড় সম্মান দিল। অনেক বড় পাওনা হয়ে থাকছে আমার কাছে।"
বাড়িতে তখনও জানানোর সুযোগ পাননি দিলীপ, মনোতোষ। সন্তোষের ফাইনালে বাংলাকে এগিয়ে দেওয়ার নায়কের গলাতেও সব পেয়েছির আস্বাদ। মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে দিলীপ জানাচ্ছিলেন, "আরও ভাল খেলতে হবে। এই স্বীকৃতিতে আরও ভালো পারফর্ম করার ইচ্ছা বাড়িয়ে দিল। বাড়িতে ফিরে বাবা-মা'কে সুসংবাদ দেব।"
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল অফার প্রত্যাখ্যান ISL স্বপ্নে শান দিতে! বড় দলের ডাকের অপেক্ষায় রাজমিস্ত্রি-পুত্র মনোতোষ
দিলীপের বাবা পুরসভার সাফাই কর্মী। মা পরিচারিকার কাজ করেন। নাগেরবাজারে একচিলতে ঘরে দিলীপের অভাবের সংসার। অভাব-অনটনের রাজ্যের বাসিন্দা সন্তোষে বাংলার ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামা মনোতোষেরও। ব্যান্ডেলে বাবা এখনও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অনেক কষ্ট করে বোনের বিয়ে দিয়েছেন। মা-ও পরিচারিকা।
অরূপ বিশ্বাসের কাছ থেকে ফোন পেয়ে সঙ্গেসঙ্গেই মনোতোষ ঠিক করে ফেলেছেন, বাবা-মা'কে নতুন উপহার কী দেবেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে মনোতোষ জানালেন, "বাড়িতে ফিরেই বাবা-মা'কে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বলব, তোমাদের সমস্ত দায়িত্ব নিলাম। আর কাজে বেরোতে হবে না। এটাই হবে বাবা-মা' প্রতি আমার উপহার।"
মনোতোষ, দিলীপদের সারা বছর রেখে ফুটবল অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন কল্যাণীতে, থাকা, খাওয়া সব দায়িত্ব নিয়ে। ছোট ভাইয়ের মত আগলে রাখা ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন, "ওদের চাকরি আমাদের বড়ো প্রাপ্তি। অনেক ধন্যবাদ দিদি। অনেক ধন্যবাদ অরূপ দা।"