ইস্টবেঙ্গল: ২, ৫ (মহেশ, নন্দকুমার)
নর্থইস্ট: ২, ৩ ( জাবোকো, ফাল্গুনী)
ঘরের মাঠে দুর্ধর্ষ কামব্যাক ঘটাল ইস্টবেঙ্গল। নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে ডুরান্ড সেমিতে স্বপ্নভঙ্গের মঞ্চে টুর্নামেন্টের সেরা ম্যাচ উপহার দিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। সেমিতে জিতলেই ফাইনালে ডার্বির স্বপ্নের ম্যাচ হওয়ার সম্ভবনা। দুই সেমিতে ইস্ট-মোহন জিতলেই শহরে ফের একবার অকাল ফুটবলের মহাযজ্ঞের আসর। এমন আবহে খেলতে নেমে ০-২ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় সেরা ম্যাচ উপহার দিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল।
লাল-হলুদ দর্শকদের সামনে ইস্টবেঙ্গল দুই অর্ধে জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েছিল। নর্থইস্ট জাবাকো এবং ফাল্গুনীর জোড়া গোলে কার্যত শেষ করে দিয়েছিল কলকাতার জায়ান্টদের। ভাবা হয়েছিল হয়ত প্ৰথম দল হিসেবে ডুরান্ডের ফাইনালে পৌঁছে যাওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা নর্থইস্টের।
তবে শেষবেলায় কাহানি মে টুইস্ট। ৫৭ মিনিটে ০-২ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ইস্টবেঙ্গল ১-২ করে ৭৭ মিনিটে। তখনও ভাবা যায়নি কুয়াদ্রাতের ছেলেরা ম্যাচ এরকম উত্তেজক জায়গায় নিয়ে যাবেন। নির্ধারিত সময় খেলা শেষে ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে ৯৬ মিনিটে নন্দকুমার দুরন্তভাবে গোল করে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যান।
শেষবেলায় জোড়া গোলশোধ করার পর ইস্টবেঙ্গল টাইব্রেকারে নর্থইস্টকে দুরমুশ করল ৫-৩ ব্যবধানে। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ক্লিটন, ক্রেসপো, বোরহা, মহেশ নন্দকুমার সকলেই গোল করে যান। তবে নর্থইস্টের হয়ে স্পট কিক থেকে মিস করে বসেন পার্থিব গগৈ।
কুয়াদ্রাত দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বপ্নের ফর্মে জয়রথ ছুটছিল ইস্টবেঙ্গলের। ডার্বি জয়ের পর পাঞ্জাব এফসি, গোকুলাম ম্যাচেও ইস্টবেঙ্গল সহজেই জয় পেয়েছে। সেমিতে নর্থইস্ট ম্যাচেও ফেভারিট ছিল কুয়াদ্রাতের দল। ম্যাচের আগে স্প্যানিশ কোচ স্বয়ং নর্থইস্টকে শক্তিশালী দল বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর সেই আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হল ম্যাচে।
ম্যাচের শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গলকে জোর টক্কর দিচ্ছিল নর্থইস্ট। ইস্টবেঙ্গল বল পজেশন বেশি রেখে মিডফিল্ড দখল করার চেষ্টা করলেও নর্থইস্ট মোটেই সহজে জমি ছাড়ছিল না। আর ম্যাচের মাত্র ২২ মিনিটেই গোলের সন্ধান পেয়ে যায় পাহাড়ি দলটি। ফাল্গুনীর ক্রস থেকে মাইকেল জাবাকো দুরন্ত হেডে ফিনিশ করে নর্থইস্টকে লিড এনে দেন। ইস্টবেঙ্গল প্রথমার্ধে বল পজেশনে এগিয়ে থাকলেও নর্থইস্ট রক্ষণে কার্যত দাঁত ফোটাতে পারেননি মহেশ, সিভেরিওরা।
বিরতির পরেই কুয়াদ্রাত জোড়া বদল ঘটান। নিশুকে তুলে সৌভিক এবং পারদোর বদলে নামিয়ে দেন বোরহা হেরেরাকে। তবে জোড়া বদল ঘটিয়েও সুবিধা করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ৫৭ মিনিটে ডান পায়ের চমৎকার ফিনিশে ফাল্গুনী ইস্টবেঙ্গলের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন। দুই গোলেই রইল ফাল্গুনীর অবদান।
এরপরে ৭৭ মিনিটে ক্রেসপো দুর্দান্তভাবে গোলের বল বাড়িয়ে দেন মহেশের জন্য। যেখান থেকে ব্যবধান বাড়াতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি নাওরেম। শেষবেলায় গোলের স্বাদ পেয়ে যাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল আরও তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ শানাতে থাকে। ৮৭ মিনিটে বক্সের মধ্যে সিভেরিও পড়ে গেলেও ফাউল দেননি রেফারি। ছয় মিনিটের অতিরিক্ত সময়েই শেষমেশ কার্যোদ্ধার করে ইস্টবেঙ্গল। ৯৬ মিনিটে মিরশাদ প্ৰথমে শট বাঁচিয়ে দিলেও ক্লিটন এবং তারপর নন্দকুমারের হেডে বল জালে জড়িয়ে যায়।
ইস্টবেঙ্গল: প্রভসুখন গিল, হরমনজোৎ খাবরা, জর্ডন এলসে, নুঙ্গা, মন্দার রাও দেশাই, পারদো, সাউল ক্রেসপো, নিশু কুমার, নন্দকুমার, নাওরেম মহেশ, জেভিয়ের সিভেরিও