ইস্টবেঙ্গল হৃদয়ে। দুই মরশুম অতন্দ্র রক্ষীর মত লাল হলুদ দুর্গ আটকে হয়ে গিয়েছিলেন সমর্থকদের ফ্যান-ফেভারিট। মাদ্রিদে বসে বোরহা গোমেজ পেরেজ বৃহস্পতিবার উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন 'বন্ধু'র ইস্টবেঙ্গলে আগমনের খবর পেয়ে। ইভান গঞ্জালেজ এবং তাঁর নাড়ির টানে মিশে আছে যে একই ক্লাবের ফুটবল শিক্ষা- রিয়াল মাদ্রিদ।
দুজনেই রিয়াল মাদ্রিদের ইউথ প্রোডাক্ট। খেলেছেন একই সময়ে। তবে পাশাপাশি খেলা হয়ে উঠেনি। তা স্বত্ত্বেও বন্ধুত্বের সূত্রপাত সেই দেড় দশক আগে থেকেই।
ইস্টবেঙ্গল এখনও বোরহার হৃদয়ে (ফেসবুক)
হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বোরহা উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে বলছিলেন, "ইস্টবেঙ্গলে নতুন লিডার এসে গিয়েছে। নয়া জমানা শুরু হতে চলেছে কলকাতায়। সেই জমানায় লেখা থাকবে আরও দ্রুতগতির ফুটবল, আরও আক্রমণাত্মক ধাঁচের ফুটবল।"
আরও পড়ুন: রোনাল্ডো-মার্সেলোদের সঙ্গে ট্রেনিং, নাচোর ডিফেন্স-পার্টনার! নামি তারকাকে সই করিয়ে চমক ইস্টবেঙ্গলের
একসঙ্গে খেলেননি কখনও। তবু পরিচিত স্প্যানিশ ফুটবলে খেলার সূত্রে। স্যার আলের জমানায় কোলাডো-অ্যাকোস্তা ব্রিগেডের অন্যতম সেরা তারকা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে অনর্গল বলে চলেছিলেন, "ওঁকে বহুদিন চিনি। আমার থেকে আকারে ছোটখাটো। তবে গতিতে অনেকের ঘুম উড়িয়ে দেবে। খুব আগ্রাসী সেন্টার ব্যাক ও।"
এফসি গোয়ার রক্ষণে সেরা অস্ত্র ছিলেন ইভান (ফেসবুক)
যোগাযোগ রয়েছে এখনও। বন্ধু ইভান যে তাঁর ফেলে আসা ক্লাবে নাম লেখাতে চলেছেন আঁচ পেয়েছিলেন কয়েকদিন আগেই। ইভান জিজ্ঞাসা করছিলেন কলকাতা এবং ফুটবল সংস্কৃতি নিয়ে। বোরহা বন্ধুকে বুঝিয়েছেন কলকাতা ফুটবলে ডার্বিতে রাতারাতি সুপারস্টারের তকমা পাওয়া যায়। "ওঁকে বলেছি, শহরের ফুটবল পালস বুঝতে হলে ডার্বি খেলো। বুঝে যাবে কলকাতায় ফুটবল উন্মাদনা কী জিনিস! তাছাড়া বাঙালি খাবার, শহরের ফুটবল সমর্থকদের কথাও বুঝিয়েছি। একদিন কলকাতায় যাব, তখন ওঁকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দেব।"এক নিঃশ্বাসে বলে চলেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের যুব থেকে উঠে আসা ফুটবল তারকা।
স্প্যানিশ ফুটবলে বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ইভান (ফেসবুক)
কলকাতায় খেলার সময়েই ভয়ঙ্কর ট্র্যাজেডি আছড়ে পড়েছিল বোরহার জীবনে। পুত্র মাউরো ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বোরহা জানাচ্ছেন, পুত্র অনেকটাই বিপন্মুক্ত। তবে চিকিৎসা।চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল কর্তার ঐতিহাসিক চুক্তি নরওয়ের ভাইকিংয়ের সঙ্গে, পাশে পেলেন শঙ্করলালকেও
প্ৰথম মরশুমে কলকাতায় নিজের স্প্যানিশ জাত সশব্দে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। জনি অ্যাকোস্তার সঙ্গে রক্ষণে জুটি বেঁধে প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারদের মনে আতঙ্কের সঞ্চার করতেন। রক্ষিত দাগার, মনোজ মহম্মদদের সঙ্গে ম্যাচ চলাকালীন চিৎকার করে যোগসূত্র রক্ষা করতেন। বোরহার মত তাঁর বন্ধু ইভান-ও সমর্থকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারবেন কিনা, সেটাই দেখার।