Advertisment

"বিদেশি সাংবাদিক সেজে মোহনবাগানের গুপ্তচর ইস্টবেঙ্গলে"

ডার্বির ঢাকে কাঠি পড়েই গিয়েছে। মাঝে আর তিনদিন। তারপরেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বাঙালির আবেগের মহারণ। হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। দুর্গা পুজোর আগে বঙ্গজ ফুটবলপ্রেমীদের মিনি ফেস্টিভ্যাল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Eastbengal cleebration

জয়ের পর ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি-শশী ঘোষ।

ডার্বির ঢাকে কাঠি পড়েই গিয়েছে। মাঝে আর তিনদিন। তারপরেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বাঙালির আবেগের মহারণ। হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। দুর্গা পুজোর আগে বঙ্গজ ফুটবলপ্রেমীদের মিনি ফেস্টিভ্যাল।

Advertisment

বুধবার ডার্বির আগে দুই শিবিরই ফাইনাল স্টেজ রিহারস্যাল সেরে নিল। কলকাতায় ইস্টবেঙ্গল খেলল জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে, ওদিকে কল্যাণীতে মোহনবাগান খেলল এরিয়ানের সঙ্গে। বড় ম্যাচের আগে ইস্ট-মোহন জয় পেয়েই মাঠ ছাড়ল। শিল্টন ডি'সিলভা ও ডিপান্ডা ডিকার গোলে মোহনবাগান ২-০ জিতল। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের শুরুতে জাস্টিস মর্গ্যানের গোলে পিছিয়ে পড়েও ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নিল। লাল-হলুদের হয়ে গোল করেন মেহতাব সিং ও কৌশিক সরকার। কল্যাণীতে ১০,০০০ সমর্থক এসেছিলেন মোহনবাগানের জন্য। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দলের হয়ে গলা ফাটালেন।

আরও পড়ুন: ‘আইটিসি’ জট কাটিয়ে ডার্বিতে মাঠে নামছেন অ্য়াকোস্টা, জানিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল

এদিন ম্যাচের পর দু'টি ঘটনায় কিছুটা হলেও তাল কাটল প্রাক ডার্বির আমেজে। বেশ কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থক ক্লাব তাঁবুতে জটলা পাকিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন একজন দর্শকের উদ্দেশ্যে। তাঁদের দাবি, ম্যাচ চলাকালীন তিনি নাকি নিজের মোবাইল থেকে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের গালিগালাজ ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি (কলকাতা ময়দানের পরিচিত দৃশ্য) রেকর্ড করছিলেন। ইস্টবেঙ্গলকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই এই কাজ তিনি করেন বলে অভিযোগ। এক লাল-হলুদ সমর্থক বলেন, "এসব রেকর্ড করে ফেসবুকে ছেড়ে আমাদের ক্লাবকে ছোট করার প্রচেষ্টা। প্রথমে নিজেকে বিদেশি সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়েছিল। তারপর আমার বুঝলাম এ মোহনবাগানের ফ্যান। ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গলে গুপ্তচর সেজে এসেছে।" পুলিশের মধ্যস্থতায় বিষয়টির নিষ্পত্তি হয় দ্রুত। ওদিকে পুরো ঘটনায় খানিক স্তম্ভিত ইস্টবেঙ্গলের 'লজেন্স মাসি' বলে পরিচিত যমুনা দাস। তিনি সমর্থকদের ঠান্ডা করতে বললেন, "ওকে ক্ষমা করে দে। আজ আমরা জিতেছি।"

Eastbengal জয়ের পর উচ্ছ্বাস লাল-হলুদ ফুটবলারদের। ছবি: শশী ঘোষ

অন্যদিকে এদিন ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের গোলদাতা মেহতাব পড়ে যান। এরপর রেফারি বাঁশি বাজাতেই লাল-হলুদ খেলা শুরু করে দেয়। জর্জের কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য ফেয়ার-প্লের দাবি তুলে বলেন যে, ইস্টবেঙ্গলের বলটা তাদের সীমানায় বাড়ানো উচিত ছিল। যদিও ইস্টবেঙ্গল কোচ বাস্তব রায় বিষয়টা মানতে নারাজ। এমনকি ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকার বলেই দিলেন, "মাঠে রেফারি ছিলেন। যা দেখার দেখেছেন।" এছাড়াও প্রশ্ন উঠেছে ইস্টবেঙ্গলের জয়সূচক গোল নিয়ে। লাল-হলুদ শিবির জানিয়েছে, গোলটা ক্যাপ্টেন কৌশিকের। যদিও ম্যাচ কমিশনার ভোলানাথ দত্তের রিপোর্ট বলছে অন্য কথা। তিনি স্কোরার হিসেবে কাশিম আইদারার কথাই উল্লেখ করেছেন। ঘটনাচক্রে কৌশিকের মারা শটে শেষ মুহূর্তে কাশিম পা ছুঁইয়েছিলেন। কাশিম আর জোবি অফসাইডে থাকা নিয়েও ম্যাচ রেফারি ও টিভির ফুটেজে মতপার্থক্য রয়ে যাচ্ছে।

Eastbengal গোলের সেই মুহূর্ত। ছবি: শশী ঘোষ

ডার্বির আগে আট ম্যাচ খেলে ইস্ট-মোহন দাঁড়িয়ে ১৯ পয়েন্টে। গোল পার্থক্যে এগিয়ে সবুজ-মেরুন। এদিন মোহনবাগানের জয়ের খবর পৌঁছে গিয়েছিল বাস্তবের কানেও। লাল-হলুদ কোচ বললেন, "আমি মোহনবাগানের জয় নিয়ে চিন্তিত নই। ইস্টবেঙ্গল ভাল খেলে জিতেছে।" ডার্বি নিয়ে বাস্তবের সংযোজন, "ডার্বি স্নায়ুর লড়াই। ফিফটি-ফিফটি চান্স।" বাস্তবের সুরেই গলা মেলালেন খেলা দেখতে আসা প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলার দীপঙ্কর রায়। তিনিও বলছেন, ডার্বি ফিফটি-ফিফটি। অন্যদিকে দেবব্রত জানালেন যে, এখনও পর্যন্ত লাল-হলুদ কোচের নতুন কোনও বিদেশিকে মনে ধরেনি। কথাবার্তা চলছে। ডার্বির পরেই সম্ভবত তারা নতুন বিদেশি চূড়ান্ত করে ফেলবে। সব মিলিয়ে ডার্বির আগে চেনা উত্তাপ অনুভব করা যাচ্ছে।

Eastbengal Kolkata Football Mohun Bagan
Advertisment