সারদা-কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি (ED) ফের ডেকে পাঠাল ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারকে। ময়দানে নিতু দা নামে পরিচিত এই ইস্টবেঙ্গল কর্তা। ১০ মার্চ তাঁকে জেরা করা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার তরফে চিঠি পাঠিয়ে দেবব্রত সরকারকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে বলা হয়েছে। যদিও দেবব্রত সরকার জানিয়েছেন, কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্যই এই চিঠি।
দেবব্রতর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেবি-র সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা শুনিয়ে সারদা গ্রুপের মালিক সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তিনি সম্পর্ক গড়েন। আর সেই সূত্রে ক্লাবের জন্য চার কোটি টাকা নিয়েছিলেন। এই কাণ্ডে সুদীপ্ত সেনের সহযোগী ও সারদা গ্রুপের এজেন্ট অরিন্দম দাসকেও বৃহস্পতিবার ইডি তলব করেছে।
কিন্তু কেন দেবব্রত সরকারের কাছে বারবার ইডি ও সিবিআইয়ের চিঠি আসছে? বিনিয়োগকারী শ্রী সিমেন্টের পাঠানো চূড়ান্ত চুক্তিতে এখনও সই করেননি লাল-হলুদ কর্তারা। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের একাংশের দাবি দেবব্রত সরকারকে চাপে রাখার জন্যই নাকি বিনিয়োগকারী সংস্থা পরোক্ষ ভাবে চাপ তৈরি করছে।
তবে শুধু সারদা নয়, রোজভ্যালি কাণ্ডেও ক্লাবের নাম জড়িয়ে গিয়েছিল। এই চিটফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে চলা মামলায় লাল-হলুদের হিসাবরক্ষক তথা ক্লাব কর্তা দেবদাস সমাজদারের নাম সামনে এসেছিল। এই বিষয়ে একবার নয়, দুবার সিবিআইয়ের তরফ থেকে বেশ কড়া ভাষায় চিঠি দেওয়া হয়।
গত ২৯ ডিসেম্বর লাল-হলুদ তাঁবুতে এই বিষয়ে প্রথম চিঠি দেয় সিবিআই। কর্তা দেবদাস সমাজদারকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে ক্লাবের সঙ্গে রোজভ্যালির কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। যদিও সেই চিঠির কোনও জবাব সিবিআইকে দেওয়া হয়নি। তাই গত ৫ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে দ্বিতীয় চিঠি পাঠানো হয়। তবে এটি পাঠানো হয়েছিল ক্লাব সভাপতি ডাক্তার প্রণব দাশগুপ্তকে।
এদিকে, ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তৎপরতা তুঙ্গে বাংলায়। এবার সারদা কাণ্ডে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে জেরা করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল বলে খবর। এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছিলেন, তিনি অবশ্যই যাবেন।
প্রসঙ্গত, কুণাল ঘোষ সারদা মিডিয়া গ্রুপের সিইও ছিলেন একসময়। ২০১৩ সালে সারদা চিটফান্ড গ্রুপের কেলেঙ্কারির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৩ সালে তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ ৩৪ মাস জেলে ছিলেন রাজ্য পুলিশ এবং সিবিআইয়ের হেফাজতে। গত ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্তি পান।