Advertisment

নামি ফুটবলার এখন ফেরিওয়ালা, ছবি দেখে কাঁদছে বিশ্ব

রক্ষণে নির্ভরযোগ্য হওয়ার কারনে দলের সতীর্থরা তাঁকে কোম্পানি বলে ডাকেন। বিখ্যাত বেলজিয়ান ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানির আদলে। তবে মাহরুসের আদর্শ লিভারপুলের ভার্জিল ভ্যান জিক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নিজে দেশের অন্যতম উঠতি প্রতিভা। মহম্মদ সালাহের সঙ্গে খেলতে দেখা যেতেই পারে তাঁকে। মিশরের অন্যতম সেই তারকা ফুটবলার মাহরুস মাহমুদ অবশ্য এখন পুরোদস্তুর রাস্তার ফেরিওয়ালা হয়ে গিয়েছেন।

Advertisment

শনিবারের প্রবল গরমেই যেমন তাঁকে দেখা গেল কায়রোর রাস্তায় রাস্তায় জিনিসপত্র ফেরি করতে। করোনা সবাইকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে মিশরের উঠতি তারকা মাহরুস মাহমুদকেও যে এভাবে রাস্তায় নামিয়ে দেবে, তা ভাবাই যায়নি।

সাধারণ সময়ে মিশরের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব বেনি সুয়েফ এর হয়ে মাঠ কাঁপাতে দেখা যায় তাঁকে। তবে করোনায় আর্থিক পরিস্থিতি তাঁকে আপাতত ফেরিওয়ালা বানিয়ে ছেড়েছে। প্যানকেক ও পেস্ট্রি নিজে হাতে বানিয়ে উত্তর ইজিপ্টের ভিড়ে ঠাসা বাজারে ধাক্কা ধাক্কি করে বিক্রি করছেন তিনি।

মহামারীর আগে মাহরুস প্রতিমাসে ক্লাবের হয়ে খেলে ২০০ মার্কিন ডলার আয় করতেন। সেই সঙ্গে তিন জনের সংসারে পার্টটাইম কাজও করতেন।

ফুটবলই তাঁর উপার্জনের প্রধান উৎস। মিশরের দ্বিতীয় ডিভিশনের ফুটবল লিগ চালু হওয়ার কথা ছিল মার্চের মাঝামাঝি থেকে। তবে ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সরকার কঠোরভাবে কারফিউ জারি করে গোটা দেশ জুড়ে। রাতারাতি ক্যাফে, শপিং মল এবং অন্যান্য দোকান পাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘরেই থাকতে। তবে পেটের জ্বালায় মাহরুসকে বাইরে বেরোতেই হচ্ছে।

নীল নদের পাশে ছোট শহর আসিউত এমনিতে দারিদ্র্যতায় পরিপূর্ণ। অতিমারীর আগে থেকেই এই শহর আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত। পরিসংখ্যান বলছে, আসিউতের ৩৩ মিলিয়ন মানুষের প্রাত্যহিক উপার্জন গড়ে ১.৪৫ মার্কিন ডলার।

২৮ বছরের মাহরুস পরিবারের দুই সন্তানের মধ্যে বড়। পার্টটাইম ড্রাইভার হিসাবে কাজ করতেন তাঁর পিতা। তবে হৃদযোগের কারণে বাড়িতেই এখন থাকেন। তিন তলা বাড়ির একতলায় ভাই, বাবা, মায়ের সঙ্গে থাকেন মাহরুস। তিনি বলছিলেন, "পরিবারের সবাইকে খাওয়াতে আমাকে বাইরে বেরোতেই হবে।"

ফুটবলার হওয়ার আগে স্থানীয় ক্লাবে বক্সিং করতেন। তারপর হ্যান্ডবল এবং অবশেষে ফুটবলকে নিজের কেরিয়ার বানিয়ে নেন তিনি।

রক্ষণে নির্ভরযোগ্য হওয়ার কারনে দলের সতীর্থরা তাঁকে কোম্পানি বলে ডাকেন। বিখ্যাত বেলজিয়ান ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানির আদলে। তবে মাহরুসের আদর্শ লিভারপুলের ভার্জিল ভ্যান জিক।

দুরন্ত খেলে মাহরুস নিজের দলকে দ্বিতীয় ডিভিশনের শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এবার প্রথম ডিভিশনে খেলার স্বপ্ন ছিল তাঁর। তবে তার আগেই বিপর্যয়। ফুটবল নয়, তাঁর সঙ্গী এখন ঝোলা ব্যাগ আর কেক-পেস্ট্রি।

Football
Advertisment