ফাইনাল ডেস্টিনেশন লর্ডস। এজবাস্টন থেকে সড়কপথে হোম অফ ক্রিকেটের দূরত্ব প্রায় ২ ঘণ্টার কাছাকাছি। কিন্তু গতবারের ও মোট পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের কাছে এই দূরত্বটা প্রায় অসীম হয়ে গেল। এবারের মতো আর অজিদের লর্ডসে যাওয়া হলো না। খেলা হবে না বিশ্বকাপ ফাইনাল। আয়োজক দেশ ইংল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে হেরেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
এজবাস্টনে টস জিতে ইয়ন মর্গ্য়ানদের ফিল্ডিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অ্যারন ফিঞ্চ। আর এটাই ভুল হয়ে গেল তাঁর দলের জন্য়। পেস আর স্পিনের যুগলবন্দিতে অস্ট্রেলিয়াকে মাটি ধরিয়ে দিল ইংল্য়ান্ড। ক্রিস ওকস আর আদিল রাশিদ তুলে নিলেন হাফ ডজন উইকেট। জোফ্রা আর্চার পান জোড়া উইকেট। একসময় ১৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে স্টিভ স্মিথ একা দলকে টানলেন। টপ অর্ডারের ব্য়র্থতা সামলে দলকে একটা ভদ্রস্থ স্কোর উপহার দিলেন তিনি। ২০১ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ১১৯টি বল খেলে করলেন ৮৫ রান। স্মিথ যদি এই ইনিংস না-খেলতেন তাহলে অস্ট্রেলিয়ার কী অবস্থা হতো তা বলা মুশকিল! স্মিথের পরে অ্যালেক্স ক্য়ারির কথাও বলতে হবে আলাদা করে শুধু ৭০ বলে ৪৬ রানের ইনিংসই খেললেন না তিনি, পরিচয় দিলেন সাহসিকতার। জোফ্রা আর্চারের বাউন্সারে তাঁর থুতনি ফাটিয়ে দিয়েছিল। গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। এরপরেও ব্য়াট করে গেলেন তিনি। স্মিথ-ক্য়ারির ব্য়াটেই নির্ধারিত ওভারে অস্ট্রেলিয়া ২২৩ রান তুলতে সমর্থ হয়।
আরও পড়ুন : অস্ট্রেলিয়ার দর্পচূর্ণ, বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রিটিশরা
অতি বড় ক্রিকেট ভক্তও বলে দিত পারবে যে, ইংল্যান্ডের মতো টিমকে এই রানের মধ্য়ে বেঁধে রাখতে গেলে অত্যাশ্চর্য ঘটনাই ঘটাতে হতো। কিন্তু সেটা পারল না অজিরা। কিন্তু রান তাড়া করতে নেমে জনি বেয়ারস্টো আর জেসন রয়ের ওপেনিং জুটিই ১২৪ রান তুলে অজিদের ম্য়াচ থেকে বার করে দেয়। রয় আউট হন ৬৫ বলের ঝোড়ো ৮৫ রানের ইনিংস খেলে। তখন ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ১৯.৪ ওভারে ১৪৭। এরপর বাকি কাজটা করে দেন জো রুট (৪৬ বলে ৪৯) ও ইয়ন মর্গ্য়ান (৩৯ বলে ৪৫)। ১০৭ বল বাকি থাকতে ইংল্য়ান্ড আট উইকেটে জিতে যায়।
বিশ্বকাপের পরেই শুরু হচ্ছে অ্যাশেজ। তার আগেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সেমিফাইনালের দ্বৈরথ বিশ্বকাপে আলাদা মাত্রা যোগ করেছিল। কিন্তু দেখতে গেলে একপেশে ম্য়াচে ইংরেজরা শুরু থেকে আধিপত্য় দেখিয়ে পৌঁছে গেল বিশ্বকাপের ফাইনালে। ১৯৯২ সালে শেষবার ফাইনাল খেলছিল তারা। ২৭ বছর পর ফের বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড।