England vs New Zealand highlights: অভাবনীয়! অবিশ্বাস্য! ফাইনালের নিষ্পত্তি হলো সুপার ওভারে! কাগজে কলমে বিজয়ী হিসেবে লেখা থাকল ইংল্যান্ডের নাম, কিন্তু আসলে জিতল ক্রিকেট। ইতিহাসে এই প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালের নিষ্পত্তি হলো সুপার ওভারে। তাও টানটান উত্তেজনায় সমর্থকদের কার্যত হার্ট বন্ধ করে দিয়ে শেষ হলো ম্যাচ।
ইংল্যান্ডের সামনে ব্ল্যাক ক্যাপস-রা টার্গেট রেখেছিল ২৪২। এবং ভাবা গিয়েছিল, প্রবল প্রতাপশালী ব্রিটিশ ব্যাটিং অনায়াসেই পেরিয়ে যাবে বৈতরণী। কিন্তু আন্ডারডগ নিউজিল্যান্ডের যোদ্ধারা অন্যরকম ভেবেছিলেন। গতকাল উইলিয়ামসন বলেছিলেন, "It is not about the size of the dog in the fight. It is about the size of the fight in the dog.” আন্ডারডগদের যুদ্ধের মাত্রা কোন পর্যায়ে যেতে পারে, তার সাক্ষী থাকল ক্রিকেটবিশ্ব।
ENG vs NZ highlights: England vs New Zealand
কুড়ি ওভারের মধ্যে চার উইকেট খুইয়ে হোঁচট খায় ইংল্যান্ড, কিন্তু ম্যাচের শেষার্ধে এসে মনে হচ্ছিল, ব্যর্থ হতে চলেছে কিউইদের আপ্রাণ চেষ্টা। ১৯৭৫ সালে শুরু হওয়া ক্রিকেট বিশ্বকাপ সম্ভবত প্রথমবার আসতে চলেছে 'হোম অফ ক্রিকেট'-এ, সৌজন্যে জস বাটলার এবং বেন স্টোকস। এর পরেই ভোলবদল! জ্বলে উঠলেন লকি ফার্গুসন, ইংল্যান্ডকে ফের ঠেলে দিলেন ব্যাকফুটে।
তাঁর কলামে আমাদের বিশ্বকাপ বিশেষজ্ঞ
শরদিন্দু মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, "একটা জায়গায় কিউয়িরা কিন্তু ব্রিটিশদের থেকে পিছিয়ে আছে বলব। ওদের ওপেনাররা রান পাচ্ছেন না। ব্যাটসম্যান বলতে সেই কেন উইলিয়ামসন আর রস টেলর। তাঁরাই দলটাকে টানছেন। নিজেদের অভিজ্ঞতা আর ব্যাটিং নৈপুণ্য কাজে লাগিয়ে খেলে যাচ্ছেন। চাপের মধ্যে নিউজিল্যান্ড কিন্তু এই দুজনের দিকেই তাকিয়ে থাকছে। শেষের দিকে নিশামের মতো অলরাউন্ডাররা মাঝেমধ্যে জ্বলে উঠছেন। ফলে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং নিয়ে যথেষ্ট চিন্তার কারণ রয়েছে। ইংল্যান্ড ওদের এই দুর্বলতাটাকেই কাজে লাগাবে।"
বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
নিউজিল্যান্ডের 'ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক' বললেন, "চূড়ান্ত হতাশ আমরা, কিন্তু এর চেয়ে ভালো ফাইনাল হতে পারত কি? যে কোনও সময় যে কোনও দিকে ঘুরে যেতে পারত। হয়তো আমাদের কপালেই ছিল না। আমি আমার টিমকে ধন্যবাদ দিতে চাই, অভিনন্দন জানাতে চাই। দীর্ঘ লড়াই লড়ে হেরেছি আমরা।"
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ অবশ্যই বেন স্টোকস। পুরস্কার প্রদান মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে শচীন তেন্ডুলকরের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করে বললেন, "কথা খুঁজে পাচ্ছি না। চার বছর ধরে এত পরিশ্রমের পর এখানে আসা, এবং তারপর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া, এর কোনও তুলনা হয় না। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলা সবসময়ই একটা বিশেষ ব্যাপার। ওরা সত্যিই দুর্দান্ত টিম। কেন-এর সঙ্গে কথা বলেছি, ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি (ম্যাচের শেষ ওভারে স্টোকসের ব্যাটে বল লেগে ওভারথ্রো-এর জন্য)।"
জস বাটলার: 'আমার ধারণা ছিল ক্রিকেটে সব দেখা হয়ে গেছে, কিন্তু এই ম্যাচে যা হলো, এক কথায় হাস্যকর। আমার ভাষা নেই, বিশ্বাস করুন। বিশেষ করে শেষটায় যে কী হলো, আমার মাথায় ঢুকছে না। অবিশ্বাস্য।'
জনি বেয়ারস্টো: "এক পৃথিবী সমবেদনা নিউজিল্যান্ডের জন্য। এক চুলের তফাৎ ছিল। যেভাবে ওরা সুপার ওভারে ফেরত এল, অকল্পনীয়। আর স্টোকস যে কত বড়, তা বর্ণনা করতে পারব না।"
সুপার ওভারে শেষ হাসি ইংল্যান্ডের! আর্চারের ওভারের প্রথম বল ওয়াইড, এবং দ্বিতীয় বলে নিশামের ছক্কা! পরের দু'বলে দুটো করে রান। শেষ দুই বলে দরকার ছিল তিন। পঞ্চম বলে হল এক! শেষ বলে দরকার ছিল দুই! দুইই! এক হলে জিতবে ইংল্যান্ড, যেহেতু তারা ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি মেরেছে (পরিসংখ্যান বলছে ২৬, সেখানে নিউজিল্যান্ডের ১৭)। নিয়ম সেটাই। শেষ বলে দুই হলো না নিউজিল্যান্ডের। রান আউট! কাপ ইংল্যান্ডের! জিতল মর্গ্যান-ব্রিগেড, কিন্তু নিউজিল্যান্ডই বা হারল কই? এভাবে বাউন্ডারির হিসেবে হারাকে কি আর হারা বলে? স্কোরবোর্ড বলবে, ইতিহাস বলবে, ২০১৯-এর বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। ক্রিকেট অন্য কথা বলবে। বলবে, " আমিই জিতেছিলাম শেষ পর্যন্ত। ইংল্যান্ডও জেতেনি, নিউজিল্যান্ডও হারেনি!"
সুপার ওভারে ইংল্যান্ড করল ১৫, বিশ্বকাপ জিততে হলে কিউইদের চাই ১৬। পাল্লা কিছুটা হলেও ঝুঁকে ইংল্যান্ডের দিকে। স্টোকস-বাটলারের জুটি দুরন্ত ব্যাট করলেন বোল্টের ওভারে। পারবে নিউজিল্যান্ড? ইংল্যান্ডের হয়ে বল হাতে জফ্রা আর্চার।
ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করবে। নিউজিল্যান্ড বেছে নেবে কোন দিক থেকে বোলিং করতে চায় তারা। দুই উইকেট পড়লে শেষ হবে সুপার ওভারের ইনিংস। এর পরেও যদি ম্যাচ টাই হয়, তবে সারা ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে জিতবে ইংল্যান্ড। দলের হয়ে সুপার ওভার খেলতে নামলেন জস বাটলার এবং বেন স্টোকস।
অভাবনীয়! অবিশ্বাস্য! ফাইনালের নিষ্পত্তি হতে চলেছে সুপার ওভারে ! ইতিহাসে এই প্রথম! ইংল্যান্ডের সামনে ব্ল্যাক ক্যাপস-রা টার্গেট রেখেছিল ২৪২। এবং ভাবা গিয়েছিল, প্রবল প্রতাপশালী ব্রিটিশ ব্যাটিং অনায়াসেই পেরিয়ে যাবে বৈতরণী। কিন্তু আন্ডারডগ নিউজিল্যান্ডের যোদ্ধারা অন্যরকম ভেবেছিলেন। গতকাল উইলিয়ামসন বলেছিলেন, "It is not about the size of the dog in the fight. It is about the size of the fight in the dog.” আন্ডারডগদের যুদ্ধের মাত্রা কোন পর্যায়ে যেতে পারে, তার সাক্ষী থাকল ক্রিকেটবিশ্ব। নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর তুখোড় ফিল্ডিংয়ে ইংল্যান্ডকে শেষ হাসি হাসতে দিল না নিউজিল্যান্ড। ম্যাচ টাই হয়ে গড়াল সুপার ওভারে! কাপ-ইতিহাসের অন্যতম শ্বাসরোধকারী ফাইনালে শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৫, ভরসা বলতে ছিলেন বেন স্টোকস। আপ্রাণ চেষ্টা করলেন, কিন্তু হলো না। বোল্টের দুরন্ত শেষ ওভারে তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকালেন স্টোকস, চতুর্থ বলে দুই রান নিতে গিয়ে ফেরার সময়ে থ্রো ব্যাটে লেগে বাউন্ডারিতে! ভাগ্যজোরে ছয় রান। পরের বলে রান আউট! শেষ বলে দরকার ছিল দুই! এবং ফের রান আউট! টাই! এর থেকে থ্রিলিং ফাইনাল কখনও দেখেনি ক্রিকেট! কেউ জিতছে না এই ম্যাচে, জিতছে ক্রিকেট!
ওভারের শেষ বলে আউট জফ্রা আর্চার! এক ওভার বাকি, চাই ১৫ রান, আশা ভরসা বলতে সেই বেন স্টোকস। কোথাও যাবেন না, চোখের পাতা পর্যন্ত ফেলবেন না। শেষ বল পর্যন্ত ফলো করুন এই ম্যাচ! নিরপেক্ষ সমর্থকদেরও হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়, এমন ম্যাচ আর কটা আসে বলুন?
আগের আপডেট লেখা শেষ না হতেই প্লাঙ্কেট আউট! নিশামের বল, ট্রেন্ট বোল্টের ক্যাচ! স্রেফ পেসের অভাবে বাউন্ডারি ছাড়াতে পারল না প্লাঙ্কেটের শট। ম্যাচে ফিরতে পারবে ইংল্যান্ড? কাপ কি হাতছাড়া হয়ে গেল? কিউইদের শরীরী ভাষায় ঝরে পড়ছে আত্মপ্রত্যয়।
জলের মতো সোজা হিসেব। ১২ বল, মানে দুই ওভার বাকি, জিততে হলে চাই ২৪। বল হাতে নিশাম, তাঁর মুখোমুখি লিয়াম প্লাঙ্কেট। দমবন্ধ করে রয়েছে সারা মাঠ। প্রায় পিন পতন নীরবতা।
ফের আউট! এবার অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস! এবং কার বলে, তা আন্দাজ করতে পারলে কোনও পুরস্কার নেই। সেই আদি অকৃত্রিম লকি ফার্গুসন! দুই বলে দুই উইকেট! আচমকাই জেগে উঠেছেন কিউই সমর্থক বাহিনী, কারণ এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের চাই ২১ বলে ৩৮ রান, হাতে স্রেফ চার উইকেট। পাশা কি পাল্টাচ্ছে?
আউট! বাটলার আউট! ফের লকি ফার্গুসনের হাতযশ! অনবদ্য স্লোয়ার বলে গতি আনতে গিয়ে শট শূন্যে তুলে দিলেন সেট হয়ে যাওয়া বাটলার! প্রথমে বলের ফ্লাইট বুঝতে না পেরে পরে পড়িমরি করে ক্যাচ ধরলেন সাবস্টিউট ফিল্ডার টিম সাউদি। একটু কি আশার আলো দেখছে নিউজিল্যান্ড?
৫০ পেরোলেন বাটলার, হাততালিতে ফেটে পড়ল মাঠ। বিশ্বকাপ হাতে আসতে আর চাই স্রেফ ৫৩ রান, হাতে ৩৭ বল, এবং সেই ছয় উইকেট। এতক্ষণে যেন কিঞ্চিৎ দিশেহারা দেখাচ্ছে নিউজিল্যান্ডকে। যেন আর স্ট্র্যাটেজি খুঁজে পাচ্ছেন না কেন উইলিয়ামসন। লিখতে লিখতেই বেন স্টোকসও ৫০ ছুঁলেন। এবার বোধহয় নিশ্চিন্তেই বলা যায়, জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।
অনেকক্ষণ সংযত থাকার পর স্বভাবসিদ্ধ দাপুটে ব্যাটিং শুরু করেছেন জস বাটলার। ৪২ ওভারের শেষে যার ফলে ইংল্যান্ডের স্কোর ১৭৭-৪। ৪৮ বলে ৪৪ করেছেন বাটলার, ৭৭ বলে ৪৭ করেছেন বেন স্টোকস। এই দুজন ক্রিজে থাকলে অনায়াসেই বিশ্বকাপ বৈতরণী পেরিয়ে যাবে ইংল্যান্ড। মাঠের চারদিকে সমর্থকদের উল্লাস দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরাও বুঝেছেন এই সার সত্য।
৩৬ ওভার পার, ইংল্যান্ডের স্কোর ১৪৩-৪। এর পরের ১৪ ওভারে তুলতে হবে ৯৯ রান, হাতে ছয় উইকেট। কাগজে কলমে এখনও ম্যাচের রাশ ইংল্যান্ডের হাতেই, কিন্তু স্টোকস-বাটলার জুটি ভাঙতে পারলেই রে রে করে ম্যাচে ফিরবে নিউজিল্যান্ড। মনে থাকে যেন, প্রয়োজনীয় রান রেট এখন সাত।
জমে ক্ষীর লর্ডসে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল। স্কোরবোর্ড বলছে, এখনও ছয় উইকেট হাতে রয়েছে ইংল্যান্ডের। কিন্তু স্কোরবোর্ড এও বলছে, ৩০ ওভারের শেষে ইংল্যান্ডের রান মাত্র ১১৫। এবং এই অবস্থায় আক্রমণে নামলেন স্যান্টনার। তুখোড় ক্যাপ্টেন্সি উইলিয়ামসনের। এমন সময় স্পিনার নামালেন, যখন রানের জন্য মরিয়া ইংল্যান্ড, কাজেই স্যান্টনারকে মারতে গিয়ে উইকেট হারানোর সমূহ সম্ভাবনা।
আউট! উইকেট নম্বর চার! মর্গ্যান আউট! নিশামের বলে স্কোয়ার কাটটা মাটিতে রাখতে পারলেন না ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন, ডিপ পয়েন্টে ঝাঁপিয়ে দুরন্ত ক্যাচ নিলেন ফার্গুসন।ম্যাচের রাশ এখন নিউজিল্যান্ডের হাতে। ইতিহাস গড়তে চলেছে উইলিয়ামসনের টিম? তবে যে-ই জিতুক শেষমেষ, দুর্দান্ত ম্যাচ হচ্ছে। এই না হলে বিশ্বকাপ ফাইনাল! স্কোর ৮৯-৪, ২৪ ওভার শেষ।
এখনও স্যান্টনারের হাতে বল তুলে দেননি উইলিয়ামসন, তবে দেবেন শীঘ্রই। স্যান্টনারের বাঁ হাতি স্পিন সেমিফাইনালে ভারতকে হারাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। আজ কী হবে? অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে স্যান্টনারের আসন্ন স্পেল। ক্রিজে দুই বাঁ-হাতি ব্যাট, এবং কে না জানে ন্যাটা ব্যাটারদের প্রিয় খাদ্য হল ন্যাটা স্পিনারই। স্টোকসরা টার্গেট করতে চাইবেন স্যান্টনারকে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে উইকেট হারানোর ঝুঁকিও থাকছে ষোল আনা। স্কোর এখন? ২৩ ওভারে ৮৬-৩।
আউট! বেয়ারস্টো বোল্ড! ফার্গুসনের বলে অফ ড্রাইভ মারতে গিয়ে প্লেইড-অন! ৩৬ করে ফিরছেন বেয়ারস্টো, ইংল্যান্ড রাতারাতি বেকায়দায়। লর্ডসে ব্রিটিশদের বিখ্যাত 'বার্মি আর্মি'-কে বজ্রাহত দেখাচ্ছে। কুড়ি ওভারের শেষে ইংল্যান্ড ৭২-৩। ক্রিজে এখন মর্গ্যানের সঙ্গী বেন স্টোকস। ব্যাটিং গভীরতা অনন্ত এই টিমের, এর পরেও আছেন বাটলার, ওকস। কিন্তু মোমেন্টাম বলে ক্রিকেটে একটা কথা আছে। সেটা এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও কিউইদের দিকে।
তেতে গিয়েছে উইলিয়ামসনের টিম, এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ছে না কিউইরা। অভ্রান্ত নিশানায় টাইট বোলিং করছেন ফার্গুসন-গ্র্যান্ডহোম, সঙ্গে কিউইদের স্বভাবসিদ্ধ দুর্ধর্ষ ফিল্ডিং। উইকেট বেশ কিছুটা স্লো হয়ে এসেছে, স্ট্রোকপ্লে করা যাচ্ছে না ইচ্ছেমতো। ইংল্যান্ড যদি জেতেও, জয়ের রাস্তাটা হাইওয়ে দিয়ে ড্রাইভ করার মতো মসৃণ হতে যাচ্ছে না।
আউট! জো রুট আউট! গ্র্যান্ডহোমের চতুর্থ ওভারে একটু বেশিই ছটফট করছিলেন রুট, বাড়াতে চাইছিলেন স্ট্রাইকরেট। এবং এগিয়ে এসে চালাতে গিয়ে খোঁচা সোজা কিপার ল্যাথামের তালুবন্দি। ৫৯-২, রুটের আউট বিশাল ধাক্কা মর্গ্যানদের কাছে। আর একটা উইকেট চটজলদি পড়লেই ম্যাচে প্রবলভাবে ফিরবে নিউজিল্যান্ড। জমজমাট ম্যাচ হতে যাচ্ছে?
পনের ওভার শেষ। ২৪২-এর টার্গেট সামনে রেখে ইংল্যান্ড ৫৬ -১। মরিয়া চেষ্টা করছেন কিউই বোলাররা, দ্বিতীয় উইকেট তবু এখনও অধরা। রুট ২৪ বলে ব্যাটিং ৬, ক্রমশ জমে যাচ্ছেন ক্রিজে। বেয়ারস্টো ৪৫ বলে ৩১ নট আউট। ম্যাচের রাশ হাতে নেওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে মর্গ্যান-ব্রিগেড।
নিজের প্রথম এবং ইনিংসের এগারো নম্বর ওভারের শেষ বলে বেয়ারস্টোর সহজতম কট অ্যান্ড বোল্ড ছাড়লেন গ্র্যান্ডহোম। এই ক্যাচ গলির ক্রিকেটেও মিস করে না কেউ। বেয়ারস্টো এই সময় আউট হয়ে গেলে তুমুল চাপে পড়ে যেত ব্রিটিশরা। এই মিস ভোগাবে নিউজিল্যান্ডকে।
পাওয়ার প্লে-র দশ ওভার শেষ। বোর্ডে ৩৯-১। প্রথম স্পেলে বোল্ট-হেনরি দু'জনেই সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন, কিন্তু প্রাপ্তি বলতে শুধু রয়ের উইকেট। আবার লিখি, এই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৪১ রানের মধ্যবিত্ত পুঁজি নিয়ে লড়তে হলে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট চাই নিউজিল্যান্ডের। একটা ৭০-৮০ রানের পার্টনারশিপ হলেই যে ইংল্যান্ড ম্যাচ বার করে নেবে, সেটা বুঝতে ক্রিকেটবোদ্ধা হওয়ার দরকার হয় না।
আউট! জেসন রয় আউট! হেনরির নিখুঁত আউটসুইং ব্যাটের কানায় আলতো চুমু খেয়ে কিপার ল্যাথামের হাতে। ঠিক এটাই দরকার ছিল কিউইদের। পনের ওভারের মধ্যে আর গোটাদুয়েক উইকেট পড়ে গেলে চাপে পড়ে যাবে ইংল্যান্ড। ক্রিজে এলেন রুট। ইংল্যান্ড সপ্তম ওভারে ২৮-১।
তিন ওভারে ইংল্যান্ড ১২-o। সতর্কভাবেই শুরু করেছেন রয়-বেয়ারস্টো জুটি। জানেন, বোল্ট আর হেনরির প্রথম স্পেলটা সামলে দিতে পারলে ম্যাচের রাশ হাতে চলে আসার সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়বে। অন্যদিকে পাওয়ার-প্লে উইকেটহীন গেলে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়বে উইলিয়ামসনের।
ফের মাঠে দুই দল, দ্বিতীয় ইনিংস শুরু। ম্যাচের প্রথমদিকে ঘাস থাকায় এই পিচে যে গতি ছিল, তা ধীরে ধীরে কমে এসেছে। ইংল্যান্ডের কাজটা আপাত সহজ মনে হলেও ময়দানের ভাষায় 'বল নড়ছে'। কাজেই ইংল্যান্ডের জিত যতটা সোজা মনে হচ্ছে, এই পিচে ততটা নাও হতে পারে। নিউজিল্যান্ডের একজন ব্যাটসম্যানকেও স্বচ্ছন্দ মনে হয় নি আজ, ফলে লড়াই তো শেষ হয়েই গেছে, এমন মনে করার কোনও কারণ নেই। তবে প্রথম দশ ওভার। প্রথম দশ ওভারে ইংল্যান্ড টপ অর্ডারকে জোরদার ধাক্কা দিতেই হবে কিউয়িদের। না হলে ২৪২-এর টার্গেট এই প্রবল পরাক্রান্ত ব্রিটিশ ব্যাটিংয়ের কাছে তেমন কোন চ্যালেঞ্জ নয়। রয়-বেয়ারস্টোর জুটি গোটা পনের ওভার টিকে গেলে ম্যাচে রাজত্ব করবে মর্গ্যানের বাহিনী। উইকেট চাই কিউইদের, শুরুতেই উইকেট চাই বোল্ট আর হেনরির কাছ থেকে।
নির্ধারিত ৫০ ওভারে নিউজিল্যান্ড ২৪১ তুলল স্কোরবোর্ডে। ৮ উইকেটের বিনিময়ে। এর মধ্যে শেষ ওভারে ম্যাট হেনরিও আউট হয়ে গেলেন। ইংল্য়ান্ডের সামনের লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই সহজ। তবে কিউয়িরা যদি প্রথমে ব্য়াটিং অর্ডারে ভাঙন ধরাতে পারে, তাহলে খেলার ফলাফল অন্যরকম হতেই পারে।
৪৭ রান করে একা কিউয়ি দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন টম ল্যাথাম। তবে পুরো ৫০ ওভার টিকতে পারলেন নাষ। ওকসের ফুলটসে ভিনসের হাতে ক্যাচ অনুশীলন করানোর ভঙ্গিতে আউট হয়ে গেলেন তিনি। ৫৬ বলে তাঁর অবদান ৪৭।
ওকসের স্লোয়ারে ঠকে গিয়ে গ্র্যান্ডহোমকে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হল। ক্যাচ নিলেন পরিবর্ত ক্রিকেটার জেমস ভিনস। ২৮ বলে ১৬ রান করে বিদায় তাঁর। ক্রিজে এলেন মিচেল স্যান্টনার। ৪৭ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ড ২২০ রান। ৬ উইকেট হারিয়ে।
৪৫ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটের বিনিময়ে ২১১। কিউয়ি ব্যাটিংকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন টম ল্যাথাম (৪০) এবং গ্র্যান্ডহোম (১৩)।লিয়াম প্লাঙ্কেটের ১০ ওভারের কোটা শেষ। দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে নিজের কোটায় মাত্র ৪২ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ডেথ ওভারে রান আটকানোর দায়িত্ব জোফ্রা আর্চার এবং ক্রিস ওকসের।
লিয়াম প্লাঙ্কেট ফের একবার কিউয়ি-ঘাতক হিসেবে আবির্ভূত। ক্রিজে টিকে যাওয়া জিমি নিশামকে ফিরিয়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংকে কার্যত কোমায় পাঠিয়ে দিলেন। ফুল লেংথের বল মিড অনে তুলে মারতে গিয়ে রুটের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন নিশাম (১৯)। হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়াসমসনের পর প্লাঙ্কেটের তৃতীয় শিকার এই নিশাম। অন্যদিকে টম ল্যাথাম ২৪ রানে ব্যাটিং করছেন। ক্রিজে এলেন কলিন গ্র্য়ান্ডহোম।
রস টেলর আউট হয়ে ফিরে গিয়েছেন। গোটা বিশ্বকাপেই চূড়ান্ত ব্যর্থ কিউয়ি তারকা। এদিনও মার্ক উডের বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১৫ রানের বেশি করতে পারলেন না তিনি। কিউয়িদের হয়ে আপাতত লড়ছেন টম ল্যাথাম (১৩) এবং জিমি নিশাম (৯)। ৩৬ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ড ১৫৪। ৪ উইকেটের বিনিময়ে।
ইংল্যান্ডের অভিমুখে খেলা ঘুরিয়ে দিচ্ছেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। এবারে তিনি ফিরিয়ে দিলেন সদ্য হাফসেঞ্চুরি ফেরা ফেলা কিউয়ি ওপেনার নিকোলস। ৭৭ বলে ৫৫ করে এবার আউট হয়ে গেলেন নিকোলস। নিজের সংযমী ইনিংসে ৪টে বাউন্ডারি হাকিয়েছেন তিনি। ক্রিজে ব্যাট করছেন রস টেলর (৮) এবং টম ল্যাথাম (২)। ২৮ ওভারে নিউজিল্যান্ড ১২২। ৩ উইকেটের বিনিময়ে।
ফিফটি করে ফেললেন হেনরি নিকোলস। ৭১ বলে ফিফটির কোটায় পৌঁছে যান কিউয়ি ওপেনার। ক্রিজে ব্যাট করতে এলেন রস টেলর।
ঠিক যে মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, ক্রিজে জমে গিয়েছেন কেন উইলিয়ামসন এবং হেনরি নিকোলস। সেই সময়েই কিউয়ি শিবিরে ধাক্কা দিলেন লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট। উইকেটকিপার বাটলারের হাতে ক্যাচ তুলে ৩০ রানে বিদায় কেনের। কিউয়ি নেতা ওপেনার নিকোলসের সঙ্গে ৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছিলেন। তবে হতাশ হতে হল তাঁকে।
ক্রিজে টিকে গিয়েছেন কেন উইলিয়ামসন এবং হেনরি নিকোলস। নিকোলস হাফসেঞ্চুরির ঠিক আগেই (৬৫ বলে ৪৫)। অন্যদিকে, পিভটের ভূমিকা পালন করছেন কেন উইলিয়ামসন (৫১ বলে ৩০)। ২১.২ ওভারে শতরান পূর্ণ করে ফেলল নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ড ইতিমধ্যেই পাঁচ বোলার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করে ফেলেছে। তবে কেউই এই জুটি ভাঙতে পারছেন না। ২২ ওভার শেষে কিউয়িরা ১০২। ১ উইকেটের বিনিময়ে। রান রেট বেড়েছে আগের থেকে।
১৩.৪ ওভারে স্কোরবোর্ডে ফিফটি তুলে ফেলল নিউজিল্যান্ড। গুপ্টিল তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যাওয়ায় রান তোলার গতি ধাক্কা খেয়েছে। চারেরও কম রান রেটে ব্যাটিং করছে নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকোলস (২৭) এবং কেন উইলিয়ামসন (৪) রানে ব্যাটিং করছেন। ১৪ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ড আপাতত ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫।
প্রথম দু-বার বেঁচে গিয়েছিলেন গুপ্টিল-নিকোলস। তবে তৃতীয়বারে আর রিভিউ নিয়েও বাঁচলেন না মার্টিন গুপ্টিল। ক্রিস ওকসের বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরতে হল তাঁকে। ১৮ বলে ১৯ রানের ছোট ইনিংসেই বিদায় তাঁর। নিজের ইনিংসে জোড়া বাউন্ডারি এবং একটা ওভার বাউন্ডারি হাকিয়েছেন গুপ্টিল।
দ্বিতীয় ওভারে জোফ্রা আর্চারের বলে আউটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কট বিহাইন্ডের আবেদন জানিয়েছিলেন ইংরেজরা। তবে রিভিউয়ে দেখা যায়, বল থাই-গার্ডে লেগে উইকেটরক্ষকের কাছে যায়। সেই নট আউটের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একবার আউট! আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আউট দিয়েছিলেন হেনরি নিকোলসকে। ক্রিস ওকস আবেদন করতেই আঙুল তুলে দেন তিনি। পরে নিউজিল্যান্ড রিভিউ নিলে দেখা যায় বলের উচ্চতা অনেকটাই বেশি ছিল।
প্রথমবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি দু-দলের সামনে। যে জিতবে, তারাই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন। লর্ডসে শেষ হাসি হাসবে কে?
মার্টিন গুপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, জেমস নিশাম, টম ল্যাথাম, কলিন ডে গ্র্য়ান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন।
সেমিফাইনালের একাদশই খেলাচ্ছে ইংল্যান্ড।
একাদশঃ জনি বেয়ারস্টো, জেসন রয়, জো রুট, ইওন মর্গ্যান, বেন স্টোকস, জস বাটলার, ক্রিস ওকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদ, জোফ্রা আর্চার এবং মার্ক উড।
টসে জিতল নিউজিল্যান্ড। টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিল ব্ল্যাক ক্যাপস বাহিনী। অর্থাৎ রান তাড়া করতে হবে ইংল্যান্ডকে।