হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন। মাঠেই যেন বৃষ্টি শুরু হল তাঁর চোখ থেকে। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের জন্য এভাবেই আবেগী হয়ে পড়লেন নেদারল্যান্ডসের তারকা ডেলে ব্লাইন্ড। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রবিবার জোয়ান ক্রুয়েফের নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলতে নেমেছিলেন ডাচ তারকা। সেই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ৩-২ গোলে হারাল ইউক্রেনকে।
তবে কমলা জার্সির জয় নয়, ম্যাচের সেরা সময় থাকল ব্লাউন্ডের কান্না। দ্বিতীয়ার্ধের পরিবর্ত হিসাবে তুলে নেওয়া হয় তাঁকে। আর মাঠ ছাড়ার সময়েই প্রবল কান্না। প্রাক্তন সতীর্থের জন্য। তারপরেই তাঁকে সান্ত্বনা দেন নেদারল্যান্ডসের কোচ ফ্রাঙ্ক ডি বোয়ের এবং অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফরা।
আরো পড়ুন: এরিকসেনের মত ভাগ্যবান নন, মাঠেই মৃত্যু শিবপুরের রাজার! এখনো আঁতকে ওঠেন সঞ্জয় সেন
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলে যান, "আবেগের অনুভূতি সরিয়ে প্রচন্ড কষ্ট করে খেলতে হচ্ছিল।" ডেনমার্কের টিম ডাক্তার বলেছেন, ডিফ্রাইব্রিলেটর দিয়ে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের বন্দোবস্ত করে কার্যত মৃত্যু হওয়া এরিকসেনকে ফেরানো হয়েছে। ঘটনা হল, ডেলে ব্লাউন্ডের হৃদপিন্ডে অসঙ্গতি রয়েছে। সেই কারণে ২০১৯-এ তাঁর হৃদযন্ত্রে ডিফ্রাইব্রিলেটর প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই কারণেই ডাচ মিডিয়াকে তারকা মিডফিল্ডার জানিয়ে দিয়েছেন, "ওই যন্ত্রণাটা বুঝতে পারি। সেই জন্য পরিবার, বাবা-মা, স্ত্রী-সকলেই বিষন্ন হয়ে পড়েছিলাম।"
নেদারল্যান্ডসে খেলেই ফুটবল বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন এরিকসেন। ২০১০-১৩ তিন বছর ড্যানিশ তারকা খেলেছেন আমস্টারডামে, আয়াক্স এর হয়ে। তারপর টটেনহ্যাম এবং ইন্টারে পাড়ি জমান। ইতালিতে গিয়ে আবার সতীর্থ হিসাবে পাশে পেয়েছেন ডাচ স্টেফান ভিজ কে।
আরো পড়ুন: কেরিয়ার শেষ এরিকসেনের! তারকার ভারতীয় চিকিৎসক জানিয়ে দিলেন খুল্লমখুল্লা
আমস্টারডামে এরিকসেনকে নিয়ে যথারীতি আবেগের সুনামি। কমলা জার্সি পরিহিত দুই ডাচ সমর্থককে দেখা গেল বলছেন, "এরিকসেন শক্ত থাকো।" তাঁদের পাশেই হৃদয়ের চিহ্ন এবং এরিকসেনের ১০ নম্বর জার্সি।জায়ান্ট স্ক্রিনে যখনই এরিকসেনের জন্য বার্তা ফুটে উঠছিল- 'দ্রুত সুস্থ হও এরিকসেন, সেই সময়েই সমর্থকরা চিয়ার করছিলেন।
রবিবারের ম্যাচে আবার ব্লাইন্ড খেলতেই নামতে চাননি। "এরিকসেনের ওই শুয়ে পড়া। অভাবে,,, আমার ওপরে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলে গিয়েছে। সেই কারণেই মাঠে নামতে প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছিল।" আয়াক্সে খেলার সময়ে ডাচ কোচ ফ্রাঙ্ক ডি বোয়েরের তত্ত্বাবধানেই খেলতেন এরিকসেন। সেই কারণে আবেগে ভেসেছেন তিনিও। বলে দিয়েছেন, "আমিও আবেগের রোলার কোস্টারে উথাল পাতাল খেয়েছি। ডেলে ব্লাইন্ডের জন্য সত্যি ঘটনাটা দুঃখের ছিল।"
এরিকসেনের শুয়ে পড়া ডাচ ফুটবলে ফিরিয়ে দিয়েছে আয়াক্সের প্রাক্তন তারকা আবদেলহল নৌরির স্মৃতিও। যিনি প্রাক মরশুমের এক ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার সময় মাঠেই ব্রেন ড্যামেজের শিকার হন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন