চলে গেলেন দেশের প্রখ্যাত ফুটবলার এম প্রসন্নন। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে ৭৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সত্তরের দশকে দুরন্ত মিডফিল্ডার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। ইন্দর সিং, দরাইস্বামী নটরাজের মত রথী-মহারথীদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছেন। সন্তোষ ট্রফিতে কেরালা, মহারাষ্ট্র, গোয়ার হয়ে অংশ নিয়েছেন।
১৯৭৩ সালে যে জাতীয় দল মারডেকা কাপে খেলেছিল,সেই দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন ইন্দর সিং, কোচ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দলেরই সদস্য ছিলেন প্রসন্নন। পঞ্চম স্থানের প্লে অফে ভিয়েতনামের বিপক্ষে গোলও করেছিলেন সেই টুর্নামেন্টে। ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার সক্রেটিসের মতই মাঠে হেডব্যান্ড পরে নামতেন। সেই কারণে ভারতের সক্রেটিসও বলা হত তাঁকে।
কেরালায় কোঝিকোড়েতে জন্ম। ফুটবল কেরিয়ার শুরু করেন সেন্ট জোসেফ স্কুলে। ১৯৬৫ সালেই কেরালার জুনিয়র দলে সুযোগ পান। তার তিন বছর পরেই একবারে সিনিয়র দল। কেরালায় এরপর এক্সিলেন্ট এসসি, ইয়ং জেমস, ইয়ং চ্যালেঞ্জার্স ক্লাবের মত প্রথম সারির দলে খেলে নিজের পরিচিতি সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যান।
আরো পড়ুন: সবুজ মেরুনে কি নাম লেখাচ্ছেন সুপারস্টার মান্দজুকিচ! বিশাল আপডেট দিলেন কোচ হাবাস
কেরালা ছেড়ে প্রসন্ননকে ডেম্পো গোয়ায় নিয়ে যায় ১৯৭০-এ। গোয়ান ক্লাবে ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ক্লাবের প্রোফাইলে এখনো জ্বলজ্বল করছে তাঁকে নিয়ে স্তুতিবাক্য, "দুরন্ত স্কিল এবং কৌশল সমেত কেরালা থেকে গোয়ায় আসা সেন্ট্রাল এই মিডফিল্ডার মাঠে প্রভাব বিস্তার করেন। ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ওঁর জুড়ি মেলা ভার। দুরন্ত পাসিং দক্ষতার মাধ্যমে সেরা ডিফেন্সকেও নাস্তানাবুদ করতে পারতেন তিনি।"
ডেম্পোয় খ্যাতির শীর্ষে থাকার সময়েই ক্লাব ছাড়েন। নাম লেখান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায়। কলকাতার ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের মত সেরা সেরা ক্লাবের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও কেরিয়ারের শেষদিনে পর্যন্ত ছিলেন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াতেই। সিবিআই-য়ের হয়ে তিনি একাধিকবার হারউড কাপ জেতেন। খেলেন রোভার্স কাপেও।
সেইসময় গোয়া এবং মহারাষ্ট্রে ভাস্কো এবং ওকরা-র হয়ে খেলতেন টিকে টিকে চাত্তুনি। প্রসন্নন-র কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন তিনিও। বলেন, "ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, মফতলাল, ওকরে মিলস, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার মত অনেক দল ছিল। প্রসন্নন উঠতি ফুটবলারদের এই ক্লাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে সাহায্য করতেন।"
আরো পড়ুন: মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট এই মুহূর্তে অনেক ভাল! লাল-হলুদ কর্তাদের একহাত নিয়ে বিস্ফোরণ রাইডারের
ফুটবল কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ব্যাঙ্গালোরের এনআইএস-এ কোচিং কোর্স করেন। তারপরে মহারাষ্ট্র দলকে কোচিং করিয়ে সন্তোষ ট্রফিতে রানার্স আপ-ও করেন।
স্ত্রী আশা এবং দুই পুত্র সনোদ এবং সূরজকে রেখে না দেখার দেশে পাড়ি দিলেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন