আইপিএল খেলা, তাও আবার মাত্র ৪০০ টাকার বিনিময়ে। গুজরাটের গ্রামেই এবার বসল নকল আইপিএলের আসর। রাশিয়ান বুকিদের ঠকাতে এমনই অভিনব প্রতারণার চিত্রনাট্য সাজানো হল। নকল আইপিএলে আয়োজনে আয়োজককারীরা স্থানীয় চাষিদের এবং গ্রামের বেকার যুবকদের গায়ে চাপিয়ে দিল বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির জার্সি। গুজরাটের মেহসানা জেলার ভাদনগর তালুকের মলিপুর গ্রামের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নকল আইপিএল কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গড়ানোর পর পুলিশ হানা দেয় মাঠে। বোর্ডের আইপিএল শেষ হওয়ার তিন সপ্তাহ পরে এই ভুয়ো আইপিএলের আসর বসেছিল।
রাশিয়ান বুকিরা ভের, ভেরনেজ, মস্কো শহরে বসে বেট লড়ছিল এই নকল আইপিএলের জন্য। নকল এই টুর্নামেন্টের বিষয়ে রাশিয়ানদের কার্যত কোনও ধারণাই ছিল না। তাঁদের কাছ থেকে বেটিংয়ের টাকা আদায় করাই ছিল নকল আইপিএল আয়োজনের উদ্যোক্তাদের।
আরও পড়ুন: টিম ইন্ডিয়া থেকে খুব শীঘ্রই বাদ কোহলি! বিরাট ঘোষণার পথে সৌরভের BCCI
ইউটিউবে আইপিএল নামক এক নকল চ্যানেল খুলে সেই ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচারিত হত। চেন্নাই সুপার কিংস, গুজরাট টাইটান্স, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন একুশ জন শ্রমিক। স্টেডিয়ামে দর্শকের উপস্থিতি বোঝাতে নকল শব্দও ব্যবহার করা হচ্ছিল।
টেলিগ্রামে এই বাজি ধরার পর্ব চলত। হর্ষ ভোগলের স্বর নকল করার জন্য মেরুট থেকে একজন ভুয়ো ধারাভাষ্যকারকে ভাড়া করা হয়। সবমিলিয়ে এই নকল আইপিএলে চালানোর জন্য চারজনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। মেহসানার পুলিশ আধিকারিক ভবেশ রাঠোর জানিয়েছেন, শোয়েব ডাবদা নামের এক যুবক রাশিয়ানদের বেটিং বোঝার জন্য আট মাস রাশিয়ার বিভিন্ন পাবে কাটিয়ে এসেছে। গোটা বিষয়টি তাঁর ই মস্তিষ্কপ্রসূত।
রাঠোর জানিয়েছেন, "গুলাম মাসির ফার্ম ভাড়া নিয়ে চড়া হ্যালোজেনের আলো বসায়। ২১ জন চাষীদের ম্যাচ পিছু ৪০০ টাকার বিনিময়ে এই ভুয়ো টুর্নামেন্টে খেলতে রাজি করিয়েছিল। তারপর ক্যামেরাম্যান থেকে আইপিএলের সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজির টি-শার্ট ভাড়া করে। পুলিশ আগাম খবর পেতেই আয়োজকরা কোনওভাবে বুঝতে পারে তাঁদের পর্দাফাঁস হতে চলেছে শীঘ্রই।" শোয়েব পরে জানান, রাশিয়ান পাবে আসিফ মহম্মদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড সেই।
রাঠোর আরও জানিয়েছেন, "শোয়েব বাজি লাগাত। তারপর ভাড়া করা আম্পায়ার কলুকে নির্দেশ দিত কখন চার বা বাউন্ডারির সিগন্যাল দিতে হবে। তার আগে আম্পায়ার শোয়েবের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে ব্যাটসম্যান এবং বোলারকে ইশারা করত। এমনকি ব্যাটসম্যানকে ওভার বাউন্ডারি হাঁকানোর জন্য স্লো বল করত বোলার। বোলার সপাটে হাঁকানোর পর ক্যামেরা আকাশের দিকে প্যান করে দেখাত বল মাঠের বাইরে। এরপরে আম্পায়ারকে জুম ইন করে দেখানো হত ছয়ের সিগন্যাল দিচ্ছেন। তবে ফার্ম হাউসে যে খেলা হচ্ছে তা যাতে রাশিয়ানরা বুঝতে না পারে, সেই জন্য ক্যামেরা কখনই জুম আউট করা হত না।"