আর্জেন্তিনা ২ ( মেসি ১৪', রোহো ৮৬')
নাইজেরিয়া ১ (ভি মোসেস ৫১', পেনাল্টি)
মার্কাস রোহোর কাঁধে চেপে মাঠে ঘুরছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্তাইন কোচ জর্জ সাম্পাওলি শিশুর মতো ডাগ-আউটের সামনে ছোটাছুটি করছেন। রিজার্ভের ফুটবলাররাও বাঁধন ভাঙা আনন্দে মাতোয়ারা।
নাইজেরিয়াকে হারানোর পর সেন্ট পিটার্সবার্গ আর শুধুই রাশিয়ার কোনও মাঠ হয়ে থাকল না আর্জেন্তিনার কাছে। তাদের কাছে পুন্যভূমি হয়ে গেল এই ভেন্যু। মন্দিরের গর্ভগৃহের মতো পবিত্র হয়ে গেল রোজারিওদের কাছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাড়ায় যেন শাপমোচন করলেন মেসিরা।
আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা আর্জেন্তিনা দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে তিন গোলে হারল। ফলে বুধবার লা আলবিসেলেস্তের কাছে এই ম্যাচ ছিল ডু-অর-ডাই। বিশ্বকাপে বেঁচে থাকার জন্য জয় ছাড়া সে অর্থে কোনও সোজা রাস্তা খোলা ছিল না। প্রথম ম্যাচে পেনাল্টিতে গোল হাতছাড়া করার পরেই মেসির সমালোচনায় মত্ত হয় সোশ্যাল মিডিয়ার এক অংশ।
ম্যাচের বয়স তখন ১৪ মিনিট। সেন্ট পিটার্সবার্গ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেল মেসি ম্যাজিকে। হাফ লাইনের একটু ওপর থেকে বানেগার লফ্ট। ভাসানো বল খুঁজে নিল এল এম টেন। কোমরে রিসিভ করে ডান পায়ের আগুনের গোলায় নিজের জাত আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন মেসি। পাশাপাশি চলতি বিশ্বকাপের শততম গোলটিও এল তার পা থেকে। ঝড়-জল বন্যা, আজও গোটা দেশের স্বপ্ন মেসির কাঁধে। সেই প্রত্যাশা বছরের পর বছর একইভাবে নিয়ে চলছেন লিও।
বিরতিতে আর্জেন্টিনার ১-০ ফলের পিছনেও অনেক সফল রসায়ন আছে। মেসির সঙ্গেই এই প্রথম আর্জেন্তিনার খেলায় দেখা মিলল আমূল পরিবর্তন। দ্য সুপার ঈগলসদের বিরুদ্ধে ঘুম ভেঙে উঠল টিমের। রুদ্ধশ্বাস আক্রমণ ও সাজানো মাঝমাঠ। একেবারে চ্যাম্পিয়নদের মতোই দেখাল আর্জেন্তিনাকে । মারিয়া, বানেগা, মাসচেরানো ও পেরেজদের উইং-প্লে ছিল চোখে পড়ার মতো। এরকমই হওয়া উচিত সাপ্লাই লাইন। আজ মেসিও পেলেন অনেক বল।
দ্বিতীয়ার্ধে মাসচেরানো বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল করে বসলেন। ভিএআর দেখেই পেনাল্টি পেল নাইজেরিয়া। ৫১ মিনিটে ভি মোসেসের গোল করতে কোনও সমস্যাই হল না। আজকের ম্যাচ ড্র হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ম্যাচ শেষের ছয় মিনিট আগে এলো রোহোর অনবদ্য গোল। মার্সেডোর ক্রস থেকেই দেশকে বিশ্বকাপের লড়াইতে টিকিয়ে রাখলেন তিনি। বিরতির পর যে পরিবর্তনগুলো দলে এনেছেন আর্জেন্তাইন কোচ, সেগুলোও লেগে গেল এদিন। মেসিরা প্রমান করলেন যে, চ্যাম্পিয়নরা বারবার ফিরে আসেন—।