FIFA Football World Cup 2018, Germany vs Mexico: ইস্টবেঙ্গল ও জার্মানি প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে প্রত্যাবর্তন করে ম্যাচে। বিষয়টা অনেকটা অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদের মতো। এখন মজাটা হলো, প্রবাদ এবং বিবাদ কয়েনের এপিঠ ওপিঠ। রাশিয়ার লুঝনিকি স্টেডিয়ামে আরও একবার সেই কথাই প্রমাণ করল।
২১ তম বিশ্বকাপের আজ প্রথম সুপার সানডে। কোস্তা রিকা-সার্বিয়া ম্যাচ দিয়ে দিন শুরু হলেও কারোর মাথাব্যথা ছিল না এই ম্যাচ নিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে জার্মানি বনাম মেক্সিকো। জার্মানি, যারা সদর্পে বলতে পারে 'মাই নেম ইজ এনাফ'। চারটে বিশ্বকাপ জেতা দলের এই অহং প্রাসঙ্গিক। সর্বোপরি দেশের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ এক বিশ্ববরেণ্য কোচ রয়েছেন। নাম জোয়াকিম লো। এহেন জার্মানি বুকিদের এবং ফুটবল পণ্ডিতদের বিচারে ফের কাপ ঘরে তোলার এক নম্বর দাবিদার।
টিম, কোচ, বংশমর্যাদা এবং আভিজাত্য মিলিয়ে জার্মানির সঙ্গে মেক্সিকোর তুলনা চলে না। এই মেক্সিকোর স্টার ফুটবলারের নাম জানতে চাইলে গুগলও ওই চিচারিতোর কথাই বলবে। অন্যদিকে লো'র বিবিধ ভাণ্ডারে অভিজ্ঞতা চাইলে মুলার, তারুণ্য বললে ড্রেস্কলার আছে। রবিবাসরীয় রাশিয়া দেখল উলট-পুরাণ। শেষবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা একটা বিভাগেও মেক্সিকোকে মাত করতে পারল না।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2018, Brazil vs Switzerland: বড় দলের অপ্রত্যাশিত খেলায় চিন্তিত ব্রাজিল কোচ
দলে আক্রমণ আছে জার্মানির। ফিনিশার খুঁজতে মাইক্রোস্কোপ লাগবে। সুসংবদ্ধ শব্দটা জার্মানদের অভিধান থেকে উধাও। ডিফেন্স বলতে গেলে শুধু গোলটার বর্ণনাই যথেষ্ট। পিএসভি-র উইঙ্গার হিরভিং লোজানো সোলো রানে শুধু ডি-বক্সে ঢুকলেন না, তাঁকে ইনস্টেপ-আউটস্টেপ করার স্বাধীনতাও দিল জার্মানির রক্ষণ। লোজানো বল দেখে রীতিমতো বসিয়ে গোলে রাখলেন।
লো'র সবচেয়ে বড় পাওনা তিনি একজন অদৃশ্য ডিফেন্ডার নিয়ে খেলেন। পোশাকি ভাষায় যাকে সুইপার-কিপার বলে। সার্জারি সরিয়ে বিশ্বকাপের দলে ঢোকা এবং প্রথম একাদশে সুযোগ করে নেওয়ার ক্ষমতা ম্যানুয়েল নয়ারই রাখেন। কারণ তিনি নিজেই একজন প্রতিষ্ঠান। তাঁর থেকে প্রত্যাশা গগনচুম্বী।
নয়ারের ৯০ ডিগ্রি বিপরীতে দাঁড়ানো মানুষটা শেষ বিশ্বকাপেই বুঝিয়ে ছিলেন কেন তিনি 'দ্য গ্রেট ওয়াল অফ মেক্সিকো।' গিলেরমো ওচুয়া আজও অনবদ্য। দুর্ভেদ্য তাঁর দস্তানা। জার্মানির যাবতীয় সুযোগের সম্ভাবনা ফিস্ট করে মাঠের বাইরে পাঠালেন। মেক্সিকো খেলার গতি আর হঠাৎ হঠাৎ আক্রমণ তাদেরকে নিয়ে ভাবাতে বাধ্য করবে বাকি দলগুলিকেও। জার্মানিকে কিন্তু আবার নতুন করেই ভাবতে হবে। লো' এখনও আরেকটা ক্লোজে বা সোয়াইনস্টাইগার তৈরি করতে পারেননি। ফলে কাজটা সহজ নয়।
তবে জার্মানি শেষবার তাদের বিশ্বকাপ অভিযান পরাজয় দিয়ে শুরু করে ১৯৮৬ সালে। সেবছর ফাইনাল খেলে তারা। সেটাও কিন্তু মনে রাখা উচিত।