FIFA Football World Cup 2018, Spain Vs Russia: রাশিয়ার ফুটবলের কথা বললে অবশ্যই চলে আসবে সেদেশের কিংবদন্তি গোলকিপার লেভ ইয়াশিনের কথা। পিটার দ্য গ্রেট, লেনিন-স্তালিন, ম্যাক্সিম গোর্কির মতোই তিনিও রাশিয়ার মানুষের হৃদয়ে থেকে যাবেন চিরকাল। তাঁর এক একটা সেভ সোনায় লেখা থাকবে ফুটবলের ইতিহাসে। তাঁর ক্লাব ডায়নামো মস্কো ও লুজনিকি স্টেডিয়াম আজও মনে রাখে মানুষটাকে।
ইয়াশিন এতটাই প্রাসঙ্গিক যে, কিছুদিন আগেই তাঁর গোল সেভ করার ছবি দিয়ে ১০০ রুবলের নোট এবং রাশিয়ান ডাকবিভাগ থেকে ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে।
শনিবাসরীয় লুজনিকিতে ইকর আকিনফিভ যা করলেন তারপর হয়তো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্বয়ং নিজে হাতে তাঁর বাঁ পা'টার বীমা করিয়ে দিতে পারেন। আকিনফিভের বিশ্বস্ত দস্তানায় বহু ম্যাচ বাঁচানোর ট্রেডমার্ক রয়েছে। এদিনের পর থেকে তাঁর পা'টাকে রুশ দেশের ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবেই ধরা হবে। এসপাসের শটটা আটকেই তো সেদেশের অল টাইম লেজেন্ড হয়ে গেলেন তিনি। তাঁর পায়ে আটকে গেল স্পেনের স্বপ্ন। রাশিয়া পৌঁছে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে।
এদিন চলতি বিশ্বকাপ দেখল প্রথম টাই-ব্রেকার। ১২০ মিনিট জুড়ে রাশিয়ান রক্ষণের জালে আটকে গেলেন প্রাক্তন ইউরো এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন। নির্ধারিত সময়ের খেলায় বিরতির আগেই স্কোরলাইন ১-১ হয়ে যায়। ম্যাচের ১২ মিনিটে ইগনাশেভিচের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। ৪১ মিনিটে দিয়ুবার পেনাল্টি আয়োজক দেশকে সমতায় ফেরায়। জেরার্ড পিকে বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবল করায় স্পেনকে গোল হজম করতে হয়েছিল। এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও রাশিয়ার রক্ষণ ভেদ করতে পারল না স্পেন। বাধ্য হয় খেলা গড়ায় পেনাল্টি শুট-আউটে।
ইনিয়েস্তা স্পেনের হয়ে প্রথম পেনাল্টি নিয়েই গোলে রাখেন। এরপর স্মলভ শোধ করলেন। দ্বিতীয় শট পিকের। গোল করলেন তিনি। এরপর ইগনাশেভিচ স্কোরলাইন ২-২ করলেন। এরপরেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। কোকের শট আটকে দিলেন আকিনফিভ। রাশিয়ায় সেলিব্রেশন শুরু। গোলোভিন গোল করে রাশিয়াকে এগিয়ে দেন। এরপর রামোস এবং চেরিশেভের শট খুঁজে নিল গোলের ঠিকানা। কিন্তু আসপাস আটকে গেলেন। রাশিয়া ৪-৩ টাইব্রেকার জিতে নিল।
১৯৮৬-তে বেলজিয়াম, ২০০২-তে দক্ষিণ কোরিয়ার পর ২০১৮-তে রাশিয়ার কাছে পেনাল্টি শুট আউটে হেরে স্পেন বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল। সেই লুজনিকি বলে দিল, লেভ ইয়াশিনের দেশে আকিনফিভরাই জন্মায়; রাশিয়ার কাছে স্পেনও হেরে যায়।