বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টারে ইংল্যান্ডের কাছে পেনাল্টি শুট আউটে হেরে বিদায় নিয়েছে কলম্বিয়া। রাদামেল ফালকাওর দেশের হয়ে পেনাল্টি হাতছাড়া করেছিলেন ম্যাটিউস উরিব ও কার্লোস বাকা। দেশের জনগণ কিন্তু কলম্বিয়ার হার মেনে নিতে পারছেন না। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন উরিব এবং বাকাকে। এমনকি উরিব-বাকা পেতে শুরু করেছেন মৃত্যুর পরোয়ানা।
গত মঙ্গলবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে হ্যারি কেনের পেনাল্টিতে ইংল্যান্ড ৯৩ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচে এগিয়ে ছিল। কিন্তু ইয়েরি মিনা ৯৪ মিনিটে গোল করে কলম্বিয়ার বিশ্বকাপের আশা জিইয়ে রাখেন। এক্সট্রা টাইমে কোনও ফলাফল না-হওয়ায়, খেলা গড়িয়েছিল পেনাল্টি শুট আউটে।
ইংল্যান্ড দল বিশ্বকাপ (১৯৯০, ১৯৯৮, ২০০৬) এবং ইউরোর (১৯৯৬, ২০০৪, ২০১২) মতো মেজর টুর্নামেন্টে কখনও পেনাল্টিতে জিততে পারেনি। কিন্তু ইংল্যান্ড গোলকিপার জর্ডন পিকফোর্ডের হাতযশে সেদিন ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছিল ইংল্যান্ড। ম্যাচটা তারা ৪-৩ জিতেই সুইডেনের সঙ্গে সেমি ফাইনালের টিকিট সংরক্ষণ করে। উরিবের পেনাল্টি ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়েছিল। বাকার শট রুখে দেন পিকফোর্ড। এরপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যুর হুমকি পেতে শুরু করেন তাঁরা। এমনকি জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা যেন রাশিয়া থেকে দেশে না ফেরেন।
শুধু বাকা বা উরিব নন, মৃত্যুর শমন পেয়েছেন কলম্বিয়ার ৩২ বছর বয়সী ডিফেন্ডার কার্লোস সাঞ্চেজও। নক-আউট পর্বের প্রথম ম্যাচে জাপানের বিরুদ্ধে কলম্বিয়াকে হারতে হয়েছিল ১-২ গোলে। সেই ম্যাচে আত্মঘাতী গোল করেছিলেন সাঞ্চেজ। তারপর থেকেই মৃত্যুর হুমকি পেতে থাকেন।
সাঞ্চেজ মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন গত ২ জুলাই। ঘটনাচক্রে ওদিনই ১৯৯৪ সালে দুস্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার আন্দ্রেস এস্কোবার। ১৯৯৪-তে আমেরিকা বিশ্বকাপে আত্মঘাতী গোলের মূল্য দেন নিজের প্রাণের বিনিময়ে। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার দশ দিনের মধ্যে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
এস্কোবারের ২৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাঞ্চেজ মৃত্যু হুমকি পান। অশনি সঙ্কেতের আগাম আন্দাজ পেয়ে বুকটা কেঁপে উঠেছিল এস্কোবারের ভাই সান্টিয়াগো এস্কোবারের। বিশ্বকাপে কলম্বিয়া যাদি হেরে যায়, সেদেশের ফুটবলার বা তাঁদের পরিবারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস ছিল তাঁর। নিজের দাদার দৃষ্টান্ত দিয়েই বলেছিলেন, কলম্বিয়ার ফ্যানেরা ভীষণ ভয়ঙ্কর। এস্কোবারও আগাম কোনও মৃত্যুর হুমকি পাননি। আতাতায়ীরা সোজা এসে তাঁকে গুলি করে দিয়েছিল। সান্টিয়াগো আরও বলছেন, তাঁর দাদার মৃত্যুর ঘটনায় কোনও পরিবর্তন আসেনি মানুষের ভাবনায়। তিনি বলছেন যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম হুমকি দিচ্ছে, তাঁদের হাজতবাস হওয়া উচিৎ।