বাকি আর পাঁচ দিন। তারপরেই রাশিয়ায় রণক্ষেত্র। ফুটবলের সেরা কার্নিভালে মাতবে সারা পৃথিবী। চলবে এক মাস ধরে ফুটবল ফিভার। মেসি-রোনাল্ডো-নেইমারদের দিকে যেমন চোখ থাকবে, ঠিক তেমনই নজর কাড়বেন মিডফিল্ডাররাও। ফুটবলের স্ট্রাইকিং ফোর্সের শিরদাঁড়া এই মাঝমাঠ। সাপ্লাই লাইনই বলে শেষ কথা। সে ২০০৬-এ আন্দ্রে পিরলো হোক বা ২০১০-এ আন্দ্রে ইনিয়েস্তা। শেষ বিশ্বকাপে জেমস রডরিগেজও হাজার ওয়াটের আলো জ্বালিয়েছিলেন। রাশিয়ার মাঝমাঠেও দাপাবেন বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডাররা। দেখে নেওয়া যাক সেরকমই পাঁচ খেলোয়াড়কে।
পল পোগবা (ফ্রান্স): খাতায়-কলমে অন্যতম ফেভারিট হয়েই মাঠে নামছে ফ্রান্স। সাম্প্রতিক অতীতে এটাই ফ্রান্সের সেরা টিম। বেঞ্জিমা, র্যাবিওট, মার্সালকে বাদ দিয়েই বিশ্বকাপের জন্য টিম করেছেন দিদিয়র দেশঁ। সবার চোখ থাকবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ফরাসি মিডফিল্ডার পল পোগবার দিকে। জোসে মোরিনহোর কোচিংয়ে পোগবার থেকে সেই খেলাটা পাওয়া যায়নি যেটা তিনি জুভেন্তাসে খেলেছিলেন। কারণ ম্যান ইউ-তে ম্যাটিকের সঙ্গে তাঁকে রক্ষণের দায়িত্বটাও নিতে হয়। কিন্তু দেশের জার্সিতে পোগবা অনেকটাই স্বাধীনভাবে খেলতে পারবেন। টোলিসো, কান্তে রয়েছে তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য়। আক্রমণভাগে এমবাপে, গ্রিজম্যান, দেম্বেলে ও লেমাররা তো আছেনই। প্রাক্তন ফরাসি ফুটবলার রবার্ট পিরেস বলছেন পোগবাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। তাঁকে এই প্রজন্মের নেতা হতে হবে।
ইস্কো (স্পেন): ইস্কোর এই মরশুমটা একটু অন্যরকমই কেটেছে। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ধারাবাহিক ভাবে খেলার সুযোগ পাননি। কিন্তু যখনই লা রোজাদের হয়ে নেমেছেন তখনই আগুন জ্বালিয়েছেন। বিশ্বকাপের আগে প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। ইতালিকেও ধরাশায়ী করে দিয়েছিলেন তিনি। জাতীয় দলে খেলার চাপটা রীতিমতো উপভোগ করেন ইস্কো। বিশ্বকাপে নির্বাচিত একাদশে ডেভিড ভিয়ার পাশে তাঁকে চাইবেন কোচ জুলেন লোপেতেগুই। স্পেনের মাঝমাঠে স্থপতির ভূমিকাতেই ইস্কোকে দেখার আশা থাকবে। বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না জীবনের শেষ বিশ্বকাপে নিজের সেরাটাই উজাড় করে দেবেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও।
টনি ক্রুস জার্মানি): এই মুহূর্তে ক্রুস বিশ্বের অন্যতম সেরা সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। ২০১৪-র বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে প্রায় প্রতি ম্যাচেই মাঠে থাকেন তিনি। কর্নার কিক আর ক্রুস প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছে। ক্রুসের পায়ের দূরপাল্লার শট একেক সময় ব্রহ্মাস্ত্রের মতো কাজ করে। রিয়ালকে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর অন্যতম কারিগর তিনিই। আর এই মানুষটাকে সঙ্গে নিয়েই কিন্তু জার্মানি ব্যাক-টু-ব্যাক বিশ্বকাপ জিততে পারে।
কেভিন ডি ব্রুইন (বেলজিয়াম): গত বিশ্বকাপেও প্রত্যাশা ছিল বেলজিয়ামের থেকে। ইডেন হ্যাজার্ডের চেয়েও ভালো খেলেছিলেন কেভিন ডি ব্রুইন। বেলজিয়ামের এই দলটাকে ইতিমধ্যেই সোনালী প্রজন্ম বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এই মুহূর্তে তিন নম্বরে তারা। হ্য়াজার্ড, ব্রুইন ছাড়াও লুকাকু, কারাসকো, উইটসেলরা রয়েছেন দলে। কিন্তু মাঝমাঠে ব্রুইনের সৃষ্টিশীলতা আলাদা কথা বলে।
ক্যাসেমিরো (ব্রাজিল): এটাই স্বাভাবিক যে ব্রাজিল মানেই এখন নেইমার। শেষবার দেশের মাটিতে অভিশপ্ত বিশ্বকাপের স্মৃতি ভোলাতে মরিয়া সাম্বার দেশের খেলোয়াড়রা। ট্রফির হেক্সার স্বপ্নে বিভোর ব্রাজিলিয়ানদের ভরসা সেই নেইমারই। কিন্তু এই দলে আরও একজন রয়েছেন যিনি ম্যাচের রঙ বদলে দিতে পারেন। হয়তো ক্যাসেমিরোর নামটা একবারেই মাথায় আসবে না। কারণ ব্রাজিলিয়ান দৃষ্টিনন্দন ফুটবলটা তাঁর থেকে প্রত্যাশিত নয়। তবে মাঝমাঠে ইঞ্জিনের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হতে পারেন রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডিও। গোলটাও ভাল চেনেন তিনি।