জার্মানি ২ ( রিউস ৪৮', ক্রুস ৯৫')
সুইডেন ১ ( টোলভনেন ৩২')
সোচির ফিস্ত স্টেডিয়ামের প্রায় ৪৭ হাজার দর্শক শনিবার বিশ্বকাপের ফুটবল ম্যাচ দেখলেন না, তাঁরা প্রত্যক্ষ করলেন কোনও হলিউডের থ্রিলার।কী নেই সেখানে! টানটান চিত্রনাট্য দানা বাঁধল ভরপুর আক্রমণ, লাল কার্ড ও রেফারির শেষ বাঁশির কিছু আগে জয়সূচক বিশ্বমানের ফ্রি-কিকে। ফুটবল ফ্যানেরা চলতি বিশ্বকাপের এমন একটা ম্যাচ দেখলেন যার পরতে পরতে ছিল একটাই সাবধান বাণী, এই খেলা দুর্বল হৃদয়ের জন্য নয়।
গতবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও ফিফা-র এক নম্বর টিম জার্মানিকে কার্যত কাঁদিয়ে ছাড়ল সুইডেন, যারা ফিফা ক্রম তালিকায় ২৪ নম্বরে। কী খেলাটাই না খেলল তারা। জার্মান রক্ষণে ফাটল ধরিয়ে গোল করা থেকে শুরু করে চোখে চোখ রেখে জার্মান ট্যাঙ্কের নল ধরে নাস্তানাবুদ করা।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2018, Germany vs Mexico: কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে জার্মানি?
জোয়াকিম লো'র জার্মানি গত ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হেরেই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল। চারবারের বিশ্বকাপ জয়ীদের ইতিহাসে আর একবারই এরকম হয়েছিল। ১৯৮২-র বিশ্বকাপে তারা আলজেরিয়ার কাছে হেরেই টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল। তারপর এই দ্বিতীয় বার।
প্রথম ম্যাচ হেরে লো চাপেই ছিলেন। এই ম্যাচ জিততে না-পারলে তাদের অবস্থা আর্জেন্তিনার মতো হত বা তার চেয়েও খারাপ। এদিন শুরু থেকেই আক্রমণে ঝাঁপিয়েছিল জার্মানরা। কিন্তু দুর্ভাগ্য আর ফিনিশারের অভাব, এ দু'টো খেয়ে নিল তাদের। এই ফাঁকেই ও টোলভনেন ৩২ মিনিটে জার্মানিকে পিছিয়ে দেন। যদিও বিরতির আগেই সুইডেনের একটি পেনাল্টির দাবি রেফারি নাকচ করায় বিতর্কও তৈরি হয়।
বিরতির পর জার্মান অল-আউট ঝাঁপায়। দ্বিতীয়ার্ধের তিন মিনিটেই ফল চলে আসল হাতেনাতে। মার্কাস রিউসের গোলে সমতায় ফেরেন জার্মানরা। কিন্তু এরপর থেকে ভাগ্যবিধাতা মুখ ফেরানোয় শত প্রচেষ্টাতেও গোল আসছিল না। তারওপর তে-কাঠির নিচে এদিন দুর্ভেদ্য হয়ে উঠেছিলেন সুইডিশ গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। তাঁর বিশ্বস্ত দস্তানা অনেক হিসেব বদলে দিয়েছে এদিন। নির্ধারিত সময়ের আট মিনিট আগে চূড়ান্ত নাটক দেখল এই ম্যাচ। জোড়া হলুদ কার্ড পেয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। দশ জনে হয় যায় জার্মানি।
আরও পড়ুন:FIFA World Cup 2018: তারকা নয়, ছকেই আস্থা রাখেন জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো
এই ম্যাচ ড্র হবে ধরেই জার্মানির বিশ্বকাপ অভিযান প্রায় শেষ বলেই অনেক ধরে নিতে শুরু করেছিলেন। ঠিক তখনই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ৯৫ মিনিটে একটি বিশ্বমানের ফ্রি-কিক নেন টোনি ক্রুস। রিউসের পা ছুঁয়ে সেই শট নেন ক্রুস। তাঁর পিকচার পারফেক্ট ইনসুইং টপ কর্নার দিয়ে ঢুকে গেল। ওলসেন নেহাতই নীরব দর্শক। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে শতকরা একশো ভাগ কর্নার নেওয়া ক্রুস এদিন বুঝিয়ে দিলেন কেন তিনি জার্মানির সেরা স্টার।জার্মানির এই জয় প্রমাণ করে দিল যে, তারা 'কিং অফ কাম ব্যাক'।