মরক্কোর কাছে আটকে যাওয়ার পরে আবেগে রুদ্ধ হয়ে গেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এটাই যে শেষ বিশ্বকাপ। দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।
নব্বই মিনিট পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়ের শেষ লগ্ন পেরিয়ে যখন রেফারির খেলা শেষের বাঁশি বাজল, তখন রোনাল্ডো মাঠেই বসে পড়লেন। চাইলেন আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে। পারলেন না। হাত দিয়ে মুখ ঢাকলেন। হতাশ মহাতারকা বুঝে গেলেন বিশ্বকাপ আর কোনওদিন জেতা হবে না। ট্রফি ক্যাবিনেটে একের পর এক সুদৃশ্য ট্রফি থাকলেও রইবে না সোনালী সেরা খেতাবের স্মারক।
আরও পড়ুন: মারাত্মক ভুল করলেন! রোনাল্ডোর বিশ্বকাপ বিদায়ে কোচ স্যান্টোসকে চরম হুঁশিয়ারি বান্ধবী জর্জিনার
প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ড ম্যাচের মতই রোনাল্ডোকে বেঞ্চে বসিয়ে দল সাজিয়েছিলেন পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। সুইজারল্যান্ডকে রোনাল্ডোর কোনও অবদান ছাড়াই দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিলেন পর্তুগিজরা। মরক্কো ম্যাচে অবশ্য সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল না।
রোনাল্ডোকে বাধ্য হয়ে কোচ দ্বিতীয়ার্ধের ছয় মিনিটের মাথায় নামান কোচ। তবে রিকার্ডোকে একটা পাস বাড়ানো বাদে সেভাবে ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারেননি। রোনাল্ডোর একমাত্র গোলের সুযোগ বাঁচিয়ে দেন মরোক্কান গোলকিপার ইয়াসিন বোনু।
আরও পড়ুন: রোনাল্ডোকে বাদ দেওয়া ঠিক সিদ্ধান্ত! বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েই বিষ্ফোরণ পর্তুগাল কোচ স্যান্তোসের
রোনাল্ডো বিশ্বকাপে অতীত হয়ে গেলেন। আর কোনওদিন ফুটবলের সর্বোত্তম মঞ্চে পাওয়া যাবে না কিংবদন্তিকে। শনিবার রাতে রোনাল্ডোর বিদায় নিশ্চিত হতেই ফিফার সরকারি টুইটার হ্যান্ডল থেকে 'বিদায়'-বার্তা জানানো হয় তাঁকে। রোনাল্ডোর বিশ্বকাপ কেরিয়ারের জ্বলজ্বলে কিছু মুহূর্তের কোলাজ-ভিডিও পোস্ট করা হয় মহাতারকার উদ্দেশ্যে। ২০০৬ থেকে টানা পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলা মহানায়কের জন্য ফিফার তরফে লিখে দেওয়া হয়, "একজন মিথ, একজন লেজেন্ড, একজন মেশিন! ধন্যবাদ ক্রিশ্চিয়ানো।"
সবথেকে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড এতদিন ছিল কুয়েতের বাদার আল মুটাওয়ার। শুক্রবার রাতে সেই রেকর্ড ভেঙে রোনাল্ডো ১৯৬তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামলেন। তবে সেই রেকর্ড গড়ার ম্যাচই বেদনার হয়ে থাকল শেষ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: রোনাল্ডোর স্বপ্ন দুমড়ে মুচড়ে দিল নির্মম মরক্কো! বিশ্বকাপ ‘লাল কার্ড’ দেখালো পর্তুগালকেও
আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবথেকে বেশি গোলের মালিক রোনাল্ডো (১১৮টি)। নিজের ভবিষ্যত নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি তিনি। স্টেডিয়াম থেকে লকার রুম, তারপরে সোজা টিম বাসে চড়েন তিনি। মুখে টু শব্দটি না করে।