ব্রাজিল: ০
ক্যামেরুন: ১ (আবুবকের)
সুইজারল্যান্ড: ৩ (শাকিরি, এমবেলো রেমো)
সার্বিয়া: ২ (মিত্রোভিচ, ভ্লাহোভিচ)
ব্রাজিলের অপরাজিত জয়রথ থেমে গেল গ্রুপ পর্বেই। ইনজুরি টাইমে গোল হজম করে গ্রুপ পর্বের অভিযান শেষ করল সেলেকাওরা। তবে তাতেও শেষরক্ষা করতে পারল না ক্যামেরুন। ব্রাজিলের সঙ্গে গ্রুপে দ্বিতীয় দল হিসাবে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছল সুইজারল্যান্ড। যারা এদিন গ্রুপ-জি'এর অন্য ম্যাচে সার্বিয়াকে ৩-২ গোলের থ্রিলারে জিতল। এই নিয়ে টানা তৃতীয় বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব অতিক্রম করল সুইজারল্যান্ড।
আফ্রিকার প্ৰথম দল হিসেবে বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে হারানোর কৃতিত্ব অর্জন করল ক্যামেরুন। ১৯৯০ সালে গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল ক্যামেরুন। ৩২ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে সেই বৃত্ত যেন সম্পন্ন করল আফ্রিকান দেশটি।
নকআউটে ওঠার জন্য সার্বিয়াকে জিততেই হত। ব্রাজিল আগেই শেষ ষোলোয় পৌঁছনো নিশ্চিত করে ফেলেছিল। বাকি দুই দল হিসেবে লড়াইয়ে ছিল সার্বিয়া এবং সুইজারল্যান্ড। সুইজারল্যান্ড শুক্রবার রাতে হারলেও ক্যামেরুন-ব্রাজিল ম্যাচের ফলাফলের ওপর নির্ভর করত তাঁদের ভাগ্য।
আরও পড়ুন: অঘটনে ছারখার বিশ্বকাপ, রোনাল্ডোদের হারিয়ে সুয়ারেজদের ছুটি করল এবার দক্ষিণ কোরিয়া
২০ মিনিটেই 'আলপাইন মেসি' জারদান শাকিরি জোরালো শটে গোল করে সুইসদের এগিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরে পাল্টা প্রত্যাঘাত করে সার্বিয়া। আলেকজান্ডার মিত্রোভিচ দুর্ধর্ষ হেডে বল জালে জড়িয়ে দিয়ে সমতা ফেরান সার্বদের হয়ে। কিছুক্ষণ পরেই সুইস ডিফেন্সের শ্লথতার সুযোগ নিয়ে ২-১ করে যায় সার্বিয়া। মাঝমাঠে বল পজেশন হারিয়ে ফেলেছিলেন শাকিরি। আয়াক্সে খেলা দুসান ট্যাডিচ ডিফেন্স চেরা পাস বাড়ান। সেখান থেকেই গোল করে যান ডুসান ভ্লাহোভিচ। জুভেন্তাসে খেলা তারকা বাঁ পায়ের শটে পরাস্ত করে যান সুইস গোলকিপার গ্রেগর কোবেলকে।
তবে সার্বিয়ার এই উচ্ছ্বাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বিরতির আগেই সুইজারল্যান্ডের হয়ে ২-২ করে যান ব্রেল এমবেলো। সিলভার উইডমারের পাস থেকে স্রেফ ট্যাপ ইন করে জালে বল জড়িয়ে দেন তারকা।
প্রথমার্ধের মতই তেজ নিয়ে সুইজারল্যান্ড বিরতির পরেও ঝাঁপিয়ে পড়ে। শাকিরি বারবার আক্রমণে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করতে থাকেন সার্ব ডিফেন্সকে। সুইজারল্যান্ডের ম্যাচ জেতানো গোল আসে সেই শাকিরির টাচ থেকেই। এমবেলোর থেকে বল পেয়ে হালকা করে বল রেখেছিলেন রুবেন ভার্গাসের জন্য। নো-লুক পাসে যিনি বল বাড়িয়ে দেন রেমো ফ্রুয়েলারকে। রেমোই গোল করে সুইজারল্যান্ডকে গ্রুপে দ্বিতীয় করে পরের রাউন্ডে পৌঁছে দেন।
সার্বিয়াকে জয়ের জন্য এরপরে জোড়া গোল দিতে হত। নাছোড় সুইসদের বিরুদ্ধে যা অসম্ভব ছিল। সেটা হয়ওনি।
গ্রুপ জি-র অন্য ম্যাচে নেমেছিল ব্রাজিল-ক্যামেরুন। সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ড দ্বৈরথ যদি দুর্ধর্ষ থ্রিলারের জন্ম দেয়, ব্রাজিল ম্যাচ যেন ঘুমপাড়ানি গান। শেষ ষোলো নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় প্ৰথম একাদশের অধিকাংশ তারকাকে বিশ্রাম দিয়ে দ্বিতীয় সারির দল নামিয়েছিলেন কোচ তিতে।
দোহার অন্য মাঠে ক্যামেরুন ব্রাজিলকে হারাল সংযোজিত সময়ে। ডান প্রান্ত থেকে এনগম বেকেলির ক্রস ধরে গোল করে যান ভিনসেন্ট আবুবকের। ব্রাজিলের সেন্টার ব্যাকরা সেই সময় স্থাণুর মত দাঁড়িয়ে। হারলেও গোল পার্থক্যে শীর্ষে থেকেই শেষ ষোলোয় গেল তিতে বাহিনী। গ্রুপ পর্ব থেকে শেষ দুই দল হিসেবে শুক্রবার রাতে নক আউটে যাওয়া নিশ্চিত করল ব্রাজিল এবং সুইজারল্যান্ড। ক্যামেরুন এবং সার্বিয়া গ্রুপের হার্ডল পেরোতে ব্যর্থ।