দুজনে ক্লাব ফুটবলে সতীর্থ। তবে দুজনের মধ্যেও রয়েছে চোরা প্রতিদ্বন্দিতা। বিশ্বকাপের ফাইনাল সেটা উগ্রভাবে প্রকাশ করে দিল। রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল মানল না সৌজন্য, শ্রদ্ধা, সম্প্রীতির বাতাবরণ। মেসি এবং এমবাপের এক ভাইরাল ফুটেজ বেরিয়ে গেল যেখানে দেখা যাচ্ছে দুই তারকা নিজেরা নিজেদের গোল উদযাপন করছেন একে অন্যের মুখের ওপর।
ফাইনালে দুই তারকাই নেমেছিলেন গোল্ডেন বুটের দখল নিতে। দুজনেই ফাইনালের আগে পাঁচ গোলে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে এমবাপে হ্যাটট্রিক করলেও মেসি জোড়া গোলের বেশি করতে পারেননি। এতেই চলতি বিশ্বকাপে ৮ গোল করে সোনার বুট নিয়ে বেরিয়ে যান ফরাসি সুপারস্টার।
আরও পড়ুন: কালো আলখাল্লা পরেই বিশ্বকাপ ট্রফি তুললেন মেসি! কেন, পিছনের রহস্য জানলে চমকে উঠবেন
এমন চরম আবহেই মেসি-এমবাপের মধ্যে লুকোনো শত্রুতা বেরিয়ে এল নিজেদের দেশের জার্সিতে। আর্জেন্টিনা গোটা ম্যাচে তিনবার লিড নিয়েছিল। তিনবারই ফ্রান্সকে মৃত্যুমুখ থেকে গোল করে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিলেন। আর তৃতীয়বারের মত সমতা ফেরানোর পরেই এমবাপেকে দেখা যায় মেসির দিকে তাকিয়ে হাত মুঠো করে সেলিব্রেশন করছেন। যদিও নীল-সাদা জার্সির মহানায়ক শেষ হাসি হেসে যান।
আরও পড়ুন: ও ফুটবলটাই বোঝে না! ফাইনালের আগে এমবাপেকে জ্বলিয়ে পুড়িয়ে অপমান আর্জেন্টিনীয় গোলকিপারের
এর আগে গত অগাস্টে মেসি-এমবাপের মধ্যে এক ঘটনা ঘটেছিল, যাতে উত্তাল হয়েছিল ফুটবল দুনিয়া। পিএসজিতে খেলার সময় মন্তেপিলারের বিরুদ্ধে খেলার সময় মেসির কাছ থেকে ক্রস পাননি বলে মহাতারকাকে ধাক্কাও দিয়ে বসেন এমবাপে। মেসি সেই ঘটনায় আশ্চর্য হয়ে যান।
সেই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়েন রুনি বলে দেন, “ফুটবল মাঠে এত বড় ইগো সর্বস্ব ফুটবলার আগে দেখিনি। একজন ২৩ বছরের ফুটবলার কিনা ধাক্কা দিচ্ছে মেসিকে! ওঁকে কেউ মনে করিয়ে দিক মেসি ২৩ বছর বয়সে চারবার ব্যালন ডি’ওর জিতে ফেলেছিল।”
আরও পড়ুন: এমবাপের সঙ্গে একই ক্লাবে থাকা সম্ভব নয়! PSG ছাড়ছেন মেসি
নখ-দাঁত কামড়ানো উত্তেজনা। আর সেই সেরার সেরা ফাইনালে আর্জেন্টিনা টাইব্রেকার শ্যুট আউটে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সকে হারাল ৪-২ ব্যবধানে। মেসি জোড়া গোল ঢেকে দিল এমবাপের হ্যাটট্রিকের স্মরণীয় কৃতিত্ব।
আরও পড়ুন: ট্রফি যেন যৌনাঙ্গ, পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেই চ্যাম্পিয়ন মার্টিনেজের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, দেখুন ভিডিও
কেরিয়ারে প্ৰথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেন মেসি। সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনা তৃতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল। ফাইনালে হিরোগিরি দেখিয়েই গোল্ডেন বুট জিতে নিলেন এমবাপে। ফাইনালে আর্জেন্টিনার ত্রাতা হয়ে উঠল এমিলিয়ানো মার্টিনেজের গ্লাভস। নেদারল্যান্ডস ম্যাচেও বাঁচিয়ে দিয়েছিল তাঁর হাত। ফাইনালেও মেসিকে অপূর্ণ রাতের স্বাদ এনে দিলেন আস্টন ভিলার গোলকিপার। তিনিই জিতলেন গোল্ডেন গ্লাভস।
আরও পড়ুন: এমবাপে তো মরে গেল! খোঁচায় খোঁচায় ফরাসি সুপারস্টারকে রক্তাক্ত করলেন বাজপাখি মার্টিনেজ
বিশ্বকাপের পরেই মেসি-এমবাপে পিএসজি-র ড্রেসিংরুম শেয়ার করবেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় মেসি-এমবাপের দল মুখোমুখি হবে বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে। প্ৰথমবার পিএসজিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ দিতে মরিয়া দুজনেই। ক্লাবের জার্সিতে দুজনের মধ্যে এই পারস্পরিক শৈত্য রয়ে যায় কিনা, সেটাই দেখার।