ফ্রান্স: ২ (হার্নান্দেজ, কোলো মুয়ানি)
মরক্কো: ০
থেমে গেল ফ্রান্সের রূপকথার সফর। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবথেকে রোম্যান্টিক দৌড় বলা হচ্ছিল মরক্কোকে। তবে সেমিফাইনালে দুর্ধর্ষ ফ্রান্সকে পেরিয়ে ফাইনালে ওঠা আর হল না। ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্সই। ম্যাচের প্রায় শুরুতেই ফ্রান্সকে লিড দিয়েছিলেন থিও হার্নান্দেজ। দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসাবে নেমে মাত্র ৪০ সেকেন্ডের হয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে ২-০ করে যান রান্দাল কোলো মুয়ানি।
মরক্কো একের পর এক হেভিওয়েট দলকে হারিয়ে সেমিতে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ফ্রান্সও গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে নিখুঁত ফুটবল উপহার দিয়ে এসেছিল। এমন অবস্থায় শেষ চারের লড়াইয়ে কোনও অঘটন ঘটে কিনা, তা দেখার অপেক্ষায় ছিল ফুটবল দুনিয়া।
মরক্কোর স্বপ্নের দৌড়ে ঠান্ডা জল ঢেলে দিতে ফ্রান্সের সময় লেগেছিল মাত্র ৫ মিনিট। পেনাল্টি বক্সে জটলার মধ্যে থেকে থিও হার্নান্দেজ বল পেয়েই দুর্ধর্ষ ভলিতে গোল করে যান।
বিরতির আগেই ২-০ করে ফেলতে পারত ফ্রান্স। মাঝমাঠ থেকে চুনামেনির দুরন্ত দৌড় ফিনিশিং টাচ দিতে পারেননি অলিভিয়ের জিরু। গোলকিপারকে সামনে পেয়েও গোল করতে পারেননি। তাঁর শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।
একদম শুরুতে গোল হজম করেও দমে যায়নি উত্তর আফ্রিকান দলটি। বরং বিশ্বকাপের সেরা গোল করে মরক্কোকে প্রায় সমতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জাভেদ এল ইয়ামিক। কর্ণার থেকে উড়ে এসে বলে বাইসাইকেল কিকে রোমাঞ্চ জাগিয়ে তুলেছিলেন মরোক্কান তারকা। তবে হুগো লরিস কোনও রকমে আটকে দেন সেই শট।
হুগো লরিস শেষ চারে নিজের জাত চিনিয়ে গেলেন। ওউনাহির টানা দুটো শট বাঁচিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে মরক্কো বল পজেশনে ফ্রান্সকে টেক্কা দিল। ফ্রান্সের অর্ধে সারাক্ষণ নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখলেও ফিনিশিংয়ের সমস্যা প্রকট হয়ে ধরা দিল মরোক্কাকে। গোল করার মোক্ষম সুযোগ নষ্ট করেন ইয়াইয়া আতিয়াত আলাহ।
ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোলের পিছনে এমবাপের বিধ্বংসী ড্রিবলিং। এলোমেলো দৌড়ে মরোক্কান ডিফেন্সকে তছনছ করে দিয়েছিলেন পিএসজি সুপারস্টার। তাঁর শট মরোক্কান ডিফেন্সে আটকে গেলেও বল চলে যায় সদ্য নামা কোলো মুয়ানির কাছে।।সেখান থেকেই ২-০ করে যান তিনি। ৪৪ সেকেন্ডে গোল করে বিশ্বকাপের পরিবর্ত স্কোরারদের মধ্যে তিনি আপাতত তৃতীয় দ্রুততম।
আপাতত সকলের নজর রবিবারের ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনার চূড়ান্ত লড়াইয়ে। ২০০২-এ ব্রাজিলের পর এই প্ৰথমবার কোনও দল টানা দুটো বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছল। রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরেই স্বপ্নভঙ্গ হয় আর্জেন্টিনার। সেই প্রতিশোধ নিয়ে মেসিরা জয়ের শিরোপা পরবেন নাকি ব্রাজিলের পর প্ৰথম দল হিসেবে টানা দু-বার বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস গড়বেন ল্যে ব্লুজ-রা, সেটাই আপাতত দেখার।