বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষ। মেসির হাতে বহু প্রতীক্ষিত কাপও উঠেছে প্ৰথমবার। আর্জেন্টিনায় এখনও জাতীয় সেলিব্রেশন চলছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। তবে এর উল্টো চিত্র ফ্রান্সে। ফাইনাল ম্যাচের রেফারিং নিয়ে একদমই অসন্তুষ্ট ফ্রান্স। পোল্যান্ডের রেফারি মার্সিনিয়াক আপাতত ফ্রান্সে জাতীয় ভিলেন।
অনেকেই মনে করছে, রেফারি আর্জেন্টিনার হয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলে দিয়েছে। ভার ঠিকঠাক ব্যবহার না করারও অভিযোগ উঠেছে। প্ৰথমত, আর্জেন্টিনার প্ৰথম পেনাল্টির সময়ে ডি মারিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে পড়ে গিয়েছেন বক্সের মধ্যে। দেম্বেলের সঙ্গে কোনওরকম সংযোগ হওয়া সত্ত্বেও। এমনটাই দাবি ফরাসিদের। রেফারি ভার চেক না করেই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
আরও পড়ুন: এমবাপের গোল অবৈধ ছিল! ফুটেজ দেখিয়ে বিষ্ফোরক দাবি বিশ্বকাপ ফাইনালের রেফারির
দ্বিতীয়ত, ডি মারিয়া আর্জেন্টিনাকে ২-০ এগিয়ে যাওয়ার বিল্ড আপ প্লে-তে কিলিয়ান এমবাপেকে ফাউল করা হয়েছিল, এমনটাই মনে করছেন ফরাসি ফুটবল সমর্থকরা। যা পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে গিয়েছেন মার্সিনিয়াক। দাবি এমনটাই।
তৃতীয়ত, অতিরিক্ত সময়ে মেসির তৃতীয় গোলটিও বিতর্কবিদ্ধ। মেসির গোলের সময় মুহূর্তের উত্তেজনায় দু-জন পরিবর্ত ফুটবলার মাঠে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফিফার রুল অনুযায়ী, যা পুরোপুরি নিয়ম-বিরুদ্ধ। এই বিতর্কে ইন্ধন জুগিয়েছেজ ফরাসি প্রচারমাধ্যম লা ইক্যুয়েপ। যেখানে 'মেসির তৃতীয় গোল কেন বাতিল হওয়া উচিত' শিরোনামের প্রতিবেদন সাড়া ফেলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ জিতে জয় শাহকে স্পেশ্যাল গিফট মেসির! ভারতীয় বন্ধুকে ভুললেন না ফুটবল কিংবদন্তি
একের পর এই রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফ্রান্সে জনরোষ তীব্র হয়েছে। এতটাই যে ইতিমধ্যেই দুই লাখের বেশি সমর্থক ফাইনালের রি-ম্যাচ চেয়ে সই সংগ্রহ করে পিটিশন দাখিল করেছেন। 'মেসওপিনিয়ন' নামের এক ওয়েব প্ল্যাটফর্মে এই সই সংগ্রহের কাজ চলছে। যাঁর শিরোনাম, "রেফারিকে পুরোপুরি কিনে নেওয়া হয়েছিল। পেনাল্টি ছিল না। দ্বিতীয় গোলের সময় এমবাপেকে ফাউলও দেওয়া হয়নি। সই করে রি-ম্যাচের জন্য আওয়াজ তুলুন।" এতেই এখনও পর্যন্ত দুই লাখের বেশি ফরাসি ফুটবল সমর্থক সই করে ফেলেছে। জমা পড়েছে ৮৫ হাজারের বেশি কমেন্টও। ফ্রান্সে এখন পিটিশন-ই ট্রেন্ডিং।
এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন রেফারি মার্সিনিয়াকও। তিনি পোল্যান্ডে রীতিমত সংবাদিক সম্মেলনে ফোন বের করে ফুটেজ দেখিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, মেসির গোল-বাতিলের দাবি উঠলে এমবাপের গোলটিও অবৈধ। কারণ সেই সময়ে মাঠে সাতজন অতিরিক্ত ফরাসি ফুটবলার ঢুকে পড়েছিলেন।
সবমিলিয়ে এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।