Advertisment

মেসি ম্যাজিকে ধ্বংস অস্ট্রেলিয়া, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে আরও এগোল আর্জেন্টিনা

ঝলসে উঠল মেসির বাঁ পা, শেষ আটে পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনাও

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

আর্জেন্টিনা: ২ (মেসি, আলভারেজ)
অস্ট্রেলিয়া: ১ (এনজো ফার্নান্দেজ-আত্মঘাতী)

Advertisment

জীবনের শেষ বিশ্বকাপ রাঙিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে যথারীতি তিনি ফারাক গড়ে দিলেন।।অস্ট্রেলিয়ার চাপ সরিয়ে দলকে জয়ের সরণিতে পৌঁছে দিলেন। আর্জেন্টিনাও কাপ জয়ের দিকে আরও এগোল। শেষ ষোলো থেকে শেষ আটে আর্জেন্টিনা পৌঁছে গেল ২-১ জয়ে ভর করে। পরের সপ্তাহে সেমিফাইনালে ওঠার যুদ্ধে আর্জেন্টিনাকে নামতে হবে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। যাঁরা অন্য ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ৩-১ গোলে চূর্ণ করল।

২ গোলের লিড নিয়েও আর্জেন্টিনা রবিবার রাতে শেষদিকে কেঁপে গেল অস্ট্রেলীয়দের হুঙ্কারে। বিরতির আগে মেসি ম্যাজিকে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। প্ৰথম দিকে আর্জেন্টিনার আক্রমণ প্রতিহত করার ব্যাপারে পুরো রণকৌশল ঠিকঠিকভাবে প্রয়োগ করে চলছিল সকারুজরা। আর্জেন্টিনা নল পজেশনে অনেক এগিয়ে থাকলেও অজি রক্ষণে সেভাবে আতঙ্ক সঞ্চার করতে পারছিল না। অস্ট্রেলিয়া খেলার গতি স্লো করে দেওয়ার পথে হাঁটছিল। এমম আবহেই মেসির তফাৎ গড়ে দিয়েছিলেন প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিটে।

আরও পড়ুন: অন্ডকোষ আঁকড়ে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি বিশ্বকাপে! কদর্য রাজনীতিতে ভয়াবহ বিতর্ক কাতারের মাঠে

মেসি অস্ট্রেলিয়া রক্ষণে চ্যালেঞ্জ জানান আজিজ বেহহিচকে। ফাইনাল থার্ডে মেসিকে রোখার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর। মেসিকে আটকাতে গিয়েই ফ্রিকিক উপহার দিয়ে দিয়েছিলেন বেহহিচ। মেসির ফ্রিকিক রুখে দিয়েছিল অস্ট্রেলীয় রক্ষণ। তবে রিবাউন্ড থেকে মেসি বল পেয়ে যান। তিনি ম্যাকএলিস্টারকে পাস বাড়ান। তারপরে ওটামেন্ডির পা হয়ে বল ফিরে আসে মেসির কাছে। সেখান থেকে ফার্স্ট টাচেই মেসি স্বপ্নের গোলে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন।

মেসির ঐশ্বরিক উচ্চতার নিরিখে এই গোল হয়ত তাঁর সেরার সারিতে পড়বে না। তবে যে কোন থেকে, যে সূক্ষ্মতা নিয়ে বল জালে জড়িয়ে গেল, তা বিশ্বকাপের ব্লকবাস্টার গোলের ব্র্যাকেটেই থাকবে। অস্ট্রেলিয়া রক্ষণাত্মক ছকে ৪-৪-২ এ দল সাজিয়েছিল। গোল হজম করার পরে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় সমতা ফেরানো। তবে ম্যাচের বয়স যখন এক ঘন্টা, সেই সময়েই ব্যক্তিগত ভুলের খেসারত দিয়ে ০-২'এ পিছিয়ে পড়ে অজিরা। গোলকিপার ম্যাট রায়ানকে বক্সের মধ্যে চ্যালেঞ্জ করেন ডি পল। তবে ম্যাট রায়ান ডি পল কে কাটালেও পেরোতে পারেননি বক্সের মধ্যে সুযোগ সন্ধানী জুলিয়ান আলভারেজকে। হালকা শটে আলভারেজ ২-০ করতে ভুল করেননি।

দু-গোলের লিড নিয়ে আর্জেন্টিনা কোচ একের পর এক বদল ঘটান দলে। এরপরে আর্জেন্টিনা একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও সেই ঝাঁজ যেন উধাও হয়ে যায় হঠাৎ। তবে মেসি বরাবরই চাপে রেখে গেলেন অস্ট্রেলীয় রক্ষণকে। তাঁর পায়ে বল পড়লেই কেঁপে যাচ্ছিল অস্ট্রেলীয়রা। একাধিকবার তিনি ড্রিবল করে গোলমুখে পৌঁছে যাচ্ছিলেন। তবে এমন সময়েই ম্যাচে প্রবলভাবে ফিরে আসে অস্ট্রেলিয়া। ক্রেগ গডউইনের দূরপাল্লার শট এনজো ফার্নান্দেজের গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যাওয়ার পরে আচমকা ম্যাচে উত্তেজনার সঞ্চার হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ব্রাজিলের দর্প চূর্ণ করে জয় ক্যামেরুনের! ঘুম পাড়ানি ফুটবলে বিরক্ত করলেন সেলেকাওরা

চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের অন্যতম এক পরাশক্তি হিসাবে মেলে ধরেছে সকারুজরা। কেন, তা আর্জেন্টিনা ম্যাচে শেষ অর্ধে দেখিয়ে দিলেন তাঁরা। এক গোল দেওয়ার পর হঠাৎ করেই যেন চেগে যায় তাঁরা। বেহহিচ বাঁ প্রান্ত একসময় তছনছ করে তিন-চারজন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রায় গোল করে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত লিসেন্দ্র মার্টিনেজের ফাইনাল ট্যাকল আটকে দেয় অস্ট্রেলিয়ার সেই দুরন্ত মুভ। বারবার অস্ট্রেলীয়দের আক্রমণে সেই সময়ে বিশ্বখ্যাত আর্জেন্টাইন রক্ষণও কেঁপে গিয়েছিল।

শেষদিকে আর্জেন্টিনাও তৃতীয় গোলের জন্য বেশ কয়েকটা মুভ তৈরি করেছিল লিও মেসির সৌজন্যে। তবে ফাইনাল থার্ডে দু-দু বার পরিবর্ত হিসাবে নামা লাউতারো মার্টিনেজের দুর্বল ফিনিশিংয়ের জন্য তিন নম্বর গোল আর আসেনি আর্জেন্টিনার।

ম্যাচের একদম শেষ লগ্নে অস্ট্রেলিয়ান সাবস্টিটিউট গারং ক্রুল ক্রস থেকে প্রায় গোল করে দিয়েছিলেন। কে বলতে পারে ক্রুলের সেই শট গোলকিপার এমি মার্টিনেজ বাঁচিয়ে না দিলে ম্যাচের শেষটা অন্যরকম হতে পারত! যেভাবে ম্যাচের শেষদিকে আর্জেন্টিনা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল অজি আক্রমণের সামনে, তা নিশ্চয় চিন্তায় রাখবে কোচ লিওনেল স্কালোনিকে।

FIFA World Cup Argentina Australia FIFA World Cup. Football Qatar World Cup 2022
Advertisment