Advertisment

বিশ্বকাপের অমর ম্যাচে টাইব্রেকার ক্ল্যাসিক! মেসির স্বপ্ন বাঁচিয়ে কমলা ঝড় থামালেন মার্টিনেজ

কমলা বিপ্লব থামিয়ে সেমিতে পৌঁছে গেল মেসির আর্জেন্টিনা

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

আর্জেন্টিনা: ২ (৪) (মলিনা, মেসি-পেনাল্টি)

নেদারল্যান্ডস: ২ (৩) (ওয়েঘর্স্ট-২)

Advertisment

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চিও ছেড়ে না দেওয়ার ম্যাচ। হৃদয় বাজি রেখে লুসেইল স্টেডিয়ামে খেলতে নেমেছিল আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ডস। উত্তেজনার ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে টাইব্রেকারেই হল ম্যাচের ফয়সালা। ২-২ গোলে খেলা অমীমাংসিত থাকার পরে পেনাল্টি শ্যুট আউটে আর্জেন্টিনা শেষ হাসি হাসল ৪-৩ ব্যবধানে।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ম্যাচের কাহিনী লিখে গেলেন মেসি, মেমফিস ডিপেরা। মারামারি, ঠেলাঠেলি যেমন দেখা গেল লুসেইল দেখিয়ে দিল একটা মেসির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এসিস্ট, ১৩টা হলুদ কার্ড, ১০০ মিনিটের একটা অসম্ভব চতুর ডাচ ক্ল্যাসিক ফ্রিকিক যা ম্যাচ টেনে হিচড়ে নিয়ে গেল এক্সট্রা টাইমে এবং সেখান থেকে টাইব্রেকারে।

আরও পড়ুন: নাচতে নাচতেই বিদায়! টাইব্রেকারের থ্রিলারে ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ঘরে পাঠাল ক্রোয়েশিয়া

আর অতিরিক্ত সময়েও যখন গোলের দেখা পাওয়া গেল না। তখন ফয়সালা হল সেই রোমাঞ্চকর পেনাল্টি শ্যুট আউটে। যেখানে মেসির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলেন এমি মার্টিনেজ।

গোটা ম্যাচে একটাই ট্যাকটিক্স নিয়ে মাঠে নেমেছিল স্কালোনির আর্জেন্টিনা। বল পেলেই মেসিকে পাস বাড়াও। তারপরে যদি ম্যাজিসিয়ানের দুই পা ঝলসে ওঠে, মহাকাব্য লিখে যায় সবুজ গালিচায়। নিজের দুই দশকের কেরিয়ারে বহু ম্যাচ একার হাতে উতরে দিয়েছেন মহানায়ক। শুক্রবার সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।

ডাচদের রক্ষণ ফালাফালা করে মেসির বাঁ পা ঝলসে উঠতে সময় নিয়েছিল ৩৫ মিনিট। স্কালোনি নাহুয়েল মলিনাকে উইংয়ে রেখে আক্রমণ সাজিয়েছিলেন। সেই মলিনার কাছ থেকেই পাস পেয়েছিলেন মেসি। মেসিকে পাস বাড়িয়েই নেদারল্যান্ডসের গোলমুখে হানা দিয়েছিলেন মলিনা।

সেই সময় মেসিকে ঘিরে ধরেছেন চার ডিফেন্ডার- একজন সামনে, পাশে দুজন এবং একজন শ্যাডো মার্কার। যাতে মেসির জন্য কোনও এঙ্গেলই না অবশিষ্ট থাকে। তবে ফুটবল ঈশ্বরকের রোখা অতই সোজা! মলিনাকে স্পট করে মেসি যে দুজনের মাঝখান দিয়ে পাস বাড়ালেন, তাঁরা এই মুহূর্তে দুনিয়ার অন্যতম সেরা দুই ডিফেন্ডার ভ্যান জিক এবং ডালে ব্লাইন্ড। সেই অপূর্ব পাস ধরে গোল করতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি মলিনা।

টেকনিক্যালি কোনও ভুলই করেননি ডাচ ডিফেন্ডাররা। পুরো ডিফেন্স ছিল জমাটি। মেসির গোলমুখী এঙ্গেলও ছোট করে দিয়েছিলেন ভ্যান জিকরা। তা সত্ত্বেও থামানো গেল না মেসিকে।

প্ৰথমে মেসি গোল করানোর পর দ্বিতীয়ার্ধে মেসি স্কোরশিটে নাম লেখালেন ঠান্ডা মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে। আর্জেন্টাইন কোচ ডাচদের মোকাবিলা করার জন্য পছন্দের ৪-৩-৩ ছক বদলে দিয়েছিলেন ৩-৫-২'এ। মাঝমাঠে যাতে ডাচদের কোনও আধিপত্য করার পরিস্থিতি তৈরি না হয়, মেসিকে অনেকটা নীচে নেমে বল কন্ট্রোল না করতে হয়, উইঙ্গারদের বিরুদ্ধে যাতে উইঙ্গারদের লেলিয়ে দেওয়া যায়- সেটাই নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন স্কালোনি।

মেসির পেনাল্টিতে ২-০ হয়ে যাওয়ার পরে ভাবা হয়েছিল ম্যাচ খতম। তবে নাছোড় নেদারল্যান্ডস যে এভাবে ফিরে আসবে কে ভেবেছিল! পরিবর্ত হিসাবে নামা ওয়েঘর্স্ট জোড়া গোল করে দেওয়ার পরেই কাঁপুনি শুরু হয়ে গিয়েছিল নীল-সাদা জার্সিধারীদের।

তবে অবিশ্বাস্য ক্ল্যাসিক ম্যাচের রাতে হাসতে হাসতেই মাঠ ছাড়লেন বিখ্যাত ১০ নম্বর। ম্যাচে আদর্শ ব্যান্ডমাস্টারের মত দলের খেলা পরিচালনা করলেন, ডাচ ডিফেন্ডারদের নাস্তানাবুদ করলেন, ফ্রিকিক থেকে প্রায় দুর্ধর্ষ গোল করে ফেলেছিলেন। স্পট কিক থেকে দুবার জালে বল জড়ালেন। এমনকি ফাউল করে কার্ডও হজম করলেন। ডিসেম্বরের এই রাত মেসির স্মরণে থাকবে। আজীবন।

FIFA World Cup. Football FIFA World Cup Lionel Messi Qatar Argentina Netherlands
Advertisment