বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে কাতারের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক ফুটবল মহা-যজ্ঞ যেন সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকের মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে সমকামী বিতর্কে কাতারের মন্ত্রীর মুখ খোলা কিংবা ভুয়ো সমর্থকদের হাজির করে ফুটবল দলকে অভ্যর্থনা জানানোর মত গনগনে বিতর্কের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে আগেই। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে ড্রেস-কোড সংক্রান্ত নিয়ম কানুনও।
বলা হচ্ছে, ম্যাচ দেখতে গিয়ে খোলামেলা ড্রেস পরলেই সোজা গারদে পুড়ে দেওয়া হতে পারে। বিশ্বকাপ উপভোগ করতে ইতিমধ্যেই লাখ লাখ মহিলা সমর্থক বিভিন্ন দেশ থেকে কাতারে হাজির হয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যেই এবার সতর্কবার্তা দিয়ে রাখা হল, যেন মাঠে বেশি ছোট পোশাকে দেখা যায় তাঁদের। তাহলে কাতারের আইন অনুযায়ী শাস্তি পেতে হতে পারে তাঁদের। এমনকি হাজতেও পুরে দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ডাবল ধাক্কায় আর্জেন্টিনা! সেরার সেরা দুই তারকাকে হারাল মেসিরা
কাতারের আইনে জনসমক্ষে অঙ্গপ্রদর্শন পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তবে ফিফার ওয়েবসাইটে মহিলাদের জন্য বার্তা দেওয়া হয়েছে, নিজেদের পছন্দ মত পোশাক তাঁরা পরতেই পারেন। তবে কোনওভাবেই যেন তা কাতারের আইনকে অশ্রদ্ধা দেখানো না হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান-এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শুধু অঙ্গপ্রদর্শনকারী স্বল্প পোশাকও নয়, কাতারের নিয়ম অনুযায়ী, আঁটোসাঁটো পোশাকও মহিলাদের জন্য নিষিদ্ধ। ফিফার ওয়েবসাইটে বিবৃতি জারি করে লেখা হয়েছে, "সমর্থকরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক বাছাই করতে পারেন। তবে মিউজিয়াম সহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ভ্রমণ করার সময় দর্শকদের বলা হচ্ছে, যেন কাঁধ ও হাঁটু ঢাকা পোশাক পরা হয়।"
বিশ্বকাপে এমনিতে মাঠের মধ্যেই সমর্থকদের উল্লাস সীমাবদ্ধ থাকে না। ফ্যান জোন সহ আয়োজক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমর্থকদের সেলিব্রেশনের মেজাজ বহাল থাকে। নৈশ পার্টি, উদ্দাম নৃত্য, মদ্যপান বিশ্বকাপের নিয়মিত দৃশ্য। কোনও বিশ্বকাপেই এর ব্যত্যয় ঘটেনি। তবে কাতার রক্ষণশীল ইসলামিক দেশ। সেখানে মহিলাদের নির্দিষ্ট পোশাক বিধি রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজির হওয়া মহিলা সমর্থকদের তাই প্রচারমাধ্যমে খুব বেশি খোলামেলা পোশাক পরতে বারণ করা হচ্ছে। এমনকি ম্যাচ চলাকালীন গ্যালারি মহিলা হোক বা পুরুষ কোনও সমর্থক যদি পোশাক খুলে ফেলেন, তাহলে গ্যালারিতে লুকোনো ক্যামেরা দিয়ে তাঁদের চিহ্নিত করে জেলে পোরা হতে পারে।
সবমিলিয়ে, বিশ্বকাপের এই পোশাক বিধি শেষমেশ মেনে চলা হয়, নাকি পুরোনো উদ্দাম মেজাজেই সমস্ত নিয়ম কানুনকে বুড়ো আঙুল দেখাবেন সমর্থকরা, সেটাই দেখার।