সেমিফাইনালে ফ্রান্স জিতে যেতেই মরক্কোর সমর্থকরা হামলা চালু করে দিল ফ্রান্সের লিয়ন শহরে। দাঙ্গায় জ্বলে উঠল গোটা শহর। সেই রেশ আছড়ে পড়ল বেলজিয়ামেও। ১৯১২ থেকে ১৯৫৬- চার দশক ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল মরক্কো। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচ তাই কেবল ফুটবলের লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না। শাসক ফরাসিদের সমুচিত জবাব দেওয়ার মঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। দুই দেশের সম্পর্কের তিক্ততা ছড়িয়ে পড়েছিল ফুটবলের মাঠেও।
ফ্রান্সে এমনিতেই মরোক্কান অভিবাসী প্রচুর। উত্তর আফ্রিকার দেশটির জনসংখ্যা ৩৮ মিলিয়নের কাছাকাছি। এঁদের মধ্যে পাঁচ মিলিয়ন মরোক্কানই বর্তমানে থাকেন ফ্রান্সে। ২০১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্সে অ-ইউরোপীয় শরণার্থীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মরোক্কান শরণার্থীরা। ফ্রান্সের মোট শরণার্থীদের ১৮.৫ শতাংশই মরোক্কানদের দখলে।
আরও পড়ুন: মেসির আর্জেন্টিনা দলে কেন একজনও নেই কালো ফুটবলার! ভয়ঙ্কর সত্যিটা জানলে শিউরে উঠবেন
সেই মরোক্কানরাই এবার ফ্রান্সের পুলিশকে আক্রমণ করল দেশ হারতেই। টায়ার জ্বালিয়ে, দোকান-পাট লুঠ করে কেলেঙ্কারি করলেন জিয়াচ হাকিমের দেশের শরণার্থী জনগণ। পুলিশকে পাল্টা জলকামান চালাতে হয় কনকনে এই ঠাণ্ডায়।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টের সাংসদ মারি শার্লট গ্যারিন ভয়াবহ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমাইনকে টুইট করেন, “তোমার কঠিন হাতে অবস্থার মোকাবিলা করা আশু প্রয়োজন। লিয়নের রাস্তায় অপ্রয়োজনে এই দাঙ্গার তীব্র নিন্দা করছি। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অথবা এই তান্ডব প্রত্যক্ষ করেছেন, তাঁদের প্রতি আমার সমর্থন রইল।”
লিয়নের প্রাক্তন মেয়র টমাস রুডিগজ-ও এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। “আরও একবার আল্ট্রা রাইট গ্রুপের ছোটখাটো গ্রুপের সদস্যরা হিংসায় লিপ্ত হল। এই নিও ফ্যাসিস্টদের ক্ষমাহীনভাবে গ্রেফতার করতে হবে। তাঁদের এই আন্দোলন মিটিয়ে ফেলতে হবে দ্রুত।”
গত সপ্তাহেও প্যারিসের চ্যাম্প এলি এলাকায় ফ্রান্স সমর্থকদের সঙ্গে দাঙ্গা লাগে ফরাসি সমর্থকদের। পরিস্থিতি। নিয়ন্ত্রণ করতে তখনও টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে হয় পুলিশকে। এতে ফ্রান্সের দক্ষিণপন্থী দলের নেতা এরিক জেমাউর বলে দেন, “এটা অদ্ভুত লাগছে যে যাঁদের ফ্রান্সের সমর্থক হওয়ার কথা, তাঁরা মরক্কোর জয় সেলিব্রেট করছে। দু টো সমর্থন তো একসঙ্গে চালানো যায় না।”