পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে দাপটে ২-০ গোলে জিতল আর্জেন্টিনা। আর এই ম্যাচেই বিশ্বফুটবলের দুই সুপারস্টার অদ্ভুত পরিস্থিতির সামনে পড়ে গেলেন। ম্যাচের মধ্যেই মেসিকে ফাউল করেন লেওয়ানডস্কি। তারপরে কিংবদন্তির কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এগিয়ে যান পোলিশ তারকা।
তবে ম্যাচে এতটাই মগ্ন ছিলেন এলএম১০ যে লেওয়ানডস্কিকে কার্যত পাত্তাই দেননি মেসি। ম্যাচের পরে অবশ্য সমস্ত তিক্ততা উধাও। একে অন্যকে আলিঙ্গন করলেন। করমর্দন করতেও দেখা গেল বিশ্ব ফুটবলের অধুনা দুই সুপারস্টারকে।
আরও পড়ুন: পরিচিত নীল-সাদা নয়, পোল্যান্ড ম্যাচে বেগুনি জার্সিতে কেন মেসিরা, ম্যাচের পরেই রহস্য ফাঁস
ম্যাচে নামার আগেই শিরোনাম কার্যত প্রস্তুত ছিল সংবাদমাধ্যমের। মেসি বনাম লেওয়ানডস্কি। একজন মহাতারকা, বিশ্বফুটবলকে দু-দশক ধরে শাসন করছেন। সর্বকালের অন্যতম সেরা তিনি। অন্যজন আবার আধুনিক ফুটবলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্ট্রাইকার। মেসি বনাম লেওয়ানডস্কির দ্বৈরথ অবশ্য উপভোগ্যই হল না। দুর্ধর্ষ আর্জেন্তিনা কার্যত পজেশন ভিত্তিক ফুটবলে দাঁড়াতেই দিল না ইউরোপীয় দলটিকে। গোলকিপার সেজেনি না থাকলে হাফডজন গোলও হজম করতে পারত পোল্যান্ড। মেসি গোল না পেলেও বারবার আতঙ্কের সঞ্চার করলেন। তবে লেওয়ানডস্কি সেভাবে সাপোর্ট না পেয়ে আর্জেন্টিনার রক্ষণে সেভাবে দাঁত ফোটাতে পারলেন না।
আরও পড়ুন: বাগান কোচের হাতেই তৈরি রিচার্লিসন সহ তিতের ৫ সুপারস্টার! বিশ্বকাপেই সবুজ-মেরুনের ব্রাজিল কানেকশন
গত কয়েক বছর ধরেই শীর্ষ পর্যায়ের পুরস্কারের ক্ষেত্রে মেসি, রোনাল্ডোকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন লেওয়ানডস্কি। আর এই ব্যক্তিগত পুরস্কারের প্রতিযোগিতার লড়াইয়েই দুজনের সম্পর্কে শৈত্য রয়েছে। গত বছর মেসি সপ্তম ব্যালন ডি'ওর পুরস্কার পান। ২০২১-এ জানুয়ারিতে লেওয়ানডস্কিও পাল্টা ফিফার সেরা পুরুষ ফুটবলারের তকমা পান।
তারপরে বিতর্কের দাবানল জ্বালিয়ে লেওয়ানডস্কি বলে দিয়েছিলেন, তাঁর পুরস্কারের গুরুত্ব মেসির ব্যালন ডি'ওরের থেকে অনেক বেশি। পোলিশ ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে লেওয়ানডস্কি বলে দিয়েছিলেন, "সম্প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে ফিফার পুরস্কার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের ভোটে ব্যালন ডি'ওরের পুরস্কার পাওয়া যায়। স্পষ্টভাবে যাচাইও করা হয় না। পরিবর্তে পেশাদারি ফুটবলাররা এবং মিডিয়া ফিফার ভোটে অংশগ্রহণ করে। প্রত্যেক জাতীয় দলের কোচ, ক্যাপ্টেন অনেকবেশি বাস্তব সম্মত ভাবে আমাদের পারফরম্যান্স যাচাই করে ভোট দেন। তাঁরা আমাদের ব্যক্তিগত রেকর্ড, ম্যাচ, চোট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন।"
আরও পড়ুন: লেওয়ানডস্কিদের থেঁতলে দিয়ে নকআউটে আর্জেন্টিনা, থ্রিলারে হেরেও বাজিমাত পোল্যান্ডের
"হয়ত সম্মানের বিচারে ব্যালন ডি'ওরের স্থান অনেক উঁচুতে। তবে ফিফার স্বীকৃতিতে আমি খুশি। কারণ আমি জানি এই পুরস্কারের জন্য কত পরিশ্রম করতে হয়েছে।"
যাইহোক, ম্যাচে পোল্যান্ড আর্জেন্টিনার কাছে হারলেও লেওয়ানডস্কি মুখে হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়লেন। সমর্থকদের।উড়ন্ত চুম্বনও দিতে দেখা গেল বার্সার ফরোয়ার্ডকে। গোল পার্থক্যে মেক্সিকোকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় জায়গা পাকা করল পোল্যান্ড। মেক্সিকো সৌদি আরবকে হারালেও শেষ ল্যাপে বাজিমাত করতে পারল না।
দুর্ধর্ষ আর্জেন্টিনার কাছে গোটা ম্যাচেই পাত্তা পেল না পোল্যান্ড। পোল্যান্ডের অর্ধে ২৪ বার গোলের প্রচেষ্টা চালাল আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে গোলমুখী শটই ছিল ১৩টি। অন্যদিকে পোল্যান্ডের গোটা ম্যাচেও একটাও গোলে শট নেই। গোটা ম্যাচেই নিষ্প্রভ রইলেন লেওয়ানডস্কি। পরে তিনি অবশ্য বলে যান, "যেভাবে আমরা খেলেছি, তাতে খুশি হওয়া যায় না। আমি অন্তত খুশি নই। তবে এই হারটা খুশির।"