খোদ ফিফা-র বিচারে যিনি বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ভারতীয় ফুটবলার, আজ দুপুরে প্রয়াত সেই প্রদীপ কুমার ব্যানার্জীর কেরিয়ারে যে ঝলমলে মাইলফলক একাধিক, তা আর লেখার অপেক্ষা রাখে না। ফুটবলার পিকে-র সাফল্যসড়ক থেকে তবু আমরা বেছে নিলাম সেরা পাঁচ দিকচিহ্ন।
১৯৫৫, ঢাকা কোয়াড্রাঙ্গুলার কাপ
বয়স কুড়িও ছাড়ায়নি। পিকে তখন সবে উনিশ। পাঁচের দশকের মধ্যভাগে, ১৯৫৫ সালে, ঢাকার কোয়াড্রাঙ্গুলার কাপে দেশের হয়ে অভিষেক ঘটল তরুণ প্রতিভা প্রদীপ কুমার ব্যানার্জির। শুধু অভিষেক নয়, মনে রাখার মতো অভিষেক। টুর্নামেন্টে পাঁচ-পাঁচটা গোল করে 'টপ স্কোরার'। অভিষেকেই পিকে দেশের ফুটবল মহলকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি থাকতে এসেছেন। রাজত্ব করতে এসেছেন।
১৯৫৬, মেলবোর্ন অলিম্পিক্স
সমর (বদ্রু) ব্যানার্জির নেতৃত্বে যে ভারতীয় দল দুর্দান্ত ফুটবল খেলে বিশ্বের নজর কেড়েছিল, পিকে ছিলেন সেই দলের অন্যতম সদস্য। সেমিফাইনালে সেবার হেরে গিয়েছিল ভারত। অলিম্পিক পদক একটুর জন্য থেকে গিয়েছিল নাগালের বাইরে। টুর্নামেন্টে আগাগোড়া দুর্দান্ত খেলেছিলেন পিকে। সেই থেকে টানা প্রায় বারো বছর জাতীয় ফুটবল দলে চুটিয়ে খেলেছেন পিকে।
১৯৬০, রোম অলিম্পিক্স
ভারতীয় ফুটবল দল রোম অলিম্পিক্সে নেমেছিল পিকে-র নেতৃত্বে। ক্যাপ্টেন পিকে অধিনায়কোচিত ফুটবলই খেলেছিলেন টুর্নামেন্টে। ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী টিমের বিরুদ্ধে সমানে-সমানে লড়েছিল পিকে-র ভারত। ম্যাচ শেষ হয়েছিল ১-১। ভারতের হয়ে গোল করেছিলেন, কে আবার, পিকে! পদকহীন অবস্থাতেই দেশে ফিরেছিল ভারত, কিন্তু কুড়িয়ে নিয়েছিল ফুটবল-দুনিয়ার সম্ভ্রম।
১৯৬২, জাকার্তা এশিয়ান গেমস
ভারতীয় ফুটবলের সোনার বছর, সোনার মুহূর্ত। এশিয়ান গেমসে সেই প্রথম ফুটবলে সোনা জিতেছিল ভারত। টিম ইন্ডিয়ার কোচ সেবার সর্বজনশ্রদ্ধেয় রহিম সাহেব। ফরোয়ার্ড লাইনে পিকে-চুনী-বলরামের ত্রিভুজ সোনা ফলিয়েছিল টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ। পিকে ছিলেন আগাগোড়াই অপ্রতিরোধ্য, বিপক্ষ ডিফেন্সের কাছে মূর্তিমান ত্রাস।
১৯৬৪, এএফসি এশিয়া কাপ
ফুটবলার পিকে-র কেরিয়ারে আরেক গৌরবজ্জ্বল মাইলস্টোন। এশিয়াসেরা হওয়ার এই ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টে এই প্রথম ভারত রানার্স আপের শিরোপা পেয়েছিল। যার নেপথ্যে থেকে গিয়েছিল প্রতিটি ম্যাচেই পিকে-র চোখ-ধাঁধানো পারফরম্যান্স। পিকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, কেন তাঁকে ছাড়া ভারতীয় টিম কল্পনাও করা যায় না।
প্রণাম পিকে।