ভারতীয় ফুটবলে তিনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন বাইচুং ভুটিয়া নামের এক বিস্ময় প্রতিভার। নিজের দেশ উজবেকিস্তানে কার্যত প্রচারের আড়ালে থেকেই চলে গেলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রুস্তম আক্রামভ। শুধু ভারতকে বাইচুং ভুটিয়ার মত সুপারস্টারের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়াই নয়, রুস্তম আক্রামভ ফিফা ক্রমতালিকায় এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
উজবেকিস্তানের ন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির খবর অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। রবিবার তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। উজবেকিস্তানের অলিম্পিক সংস্থা জানিয়েছে, "উজবেকিস্তানের ন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি, উজবেকিস্তানের কাউন্সিল অফ স্পোর্টস রুস্তম আক্রামভের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করছে। ওঁর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি সমবেদনা রইল।"
আরও পড়ুন: বাস্তেনের আগেই ০ ডিগ্রিতে গোল ছিল সুরজিতের! আক্ষেপ-হতাশায় বিষণ্ণ সাব্বির
নিজের কোচিং কেরিয়ারে তৎকালীন সোভিয়েত ফুটবল এবং উজবেকিস্তানের ফুটবল প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের হেড কোচ ছিলেন ১৯৯৫-১৯৯৭ পর্যন্ত। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছে ভারতীয় ফুটবল সংস্থাও। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, "জাতীয় দলের প্রাক্তন হেড কোচ রুস্তম আক্রামভের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করা হচ্ছে।"
নিজের স্বল্পকালীন কোচিং কেরিয়ারে ভারতকে কোনও ট্রফি এনে দিতে পারেননি। তবে ভারতকে চিনিয়ে দিয়েছিলেন বাইচুং ভুটিয়ার মত তারকাকে। আক্রামভের কোচিংয়েই নেহেরু কাপে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে অভিষেক ঘটান পাহাড়ি বিছে বাইচুং। বাইচুংয়ের সঙ্গেই সেই সময় ভারতীয় ফুটবলে ছিল আইএম বিজয়ন, কার্লটন চ্যাপম্যান, ব্রুনো কুটিনহোর মত তারকারা।
আক্রামভের কোচিংয়ে ভারত ফিফা ক্রমপর্যায়ে ৯৪ স্থানে পৌঁছেছিল, যা এখনও পর্যন্ত ভারতের ফিফা রাঙ্কিংয়ে সেরা। ২০১৭, ২০১৮-য় ভারত কাছাকাছি পৌঁছয়, ৯৬-এ।
১৯৪৮ সালে উজবেকিস্তানের তাসখনতে জন্ম আক্রামভের। ১৯৭০-এ উজবেক স্টেট ইনস্টিটিউট অফ ফিজিক্যাল কালচার থেকে শরীরশিক্ষায় স্নাতক হন তিনি। মস্কোয় শারীরশিক্ষায় মাস্টার্স করেন।
আরও পড়ুন: কৃশানুর সেই ছেঁড়া কার্টিলেজ এখনও রেখেছেন সঙ্গে, প্রেমদিবসে নস্ট্যালজিক স্ত্রী পনি
সোভিয়েত ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরে উজবেকিস্তান জাতীয় দলের প্ৰথম কোচ ছিলেন তিনি। ১৯৯২-১৯৯৪ সালে যে দু বছর জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন, সেই সময় হিরোশিমা এশিয়ান গেমস (১৯৯৪) এবং সেন্ট্রাল এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতে উজবেকিস্তান। উজবেকিস্তান ফুটবলের প্রসারে সাহায্যের জন্য আক্রামভ সেদেশের জাতীয় শুক্রাট মেডেল এবং দেশের সম্মানীয় কোচের পদকে ভূষিত হন তিনি।
ভারত ছাড়াও আলজেরিয়ার জাতীয় দল তো বটেই একাধিক ক্লাবেও কোচিং করিয়েছেন তিনি। বিখ্যাত তাসকেন্ট পাখতাকুর এবং মস্কো সিএসকেএ-র যুব দলের কোচিংও করেছেন। পরবর্তীতে ফিফা ইন্সট্রাক্টর এবং এএফসি টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হয়েছেন।