জীবনে উত্থান, পতন থাকে। তাই বলাই হয়ে থাকে, সেরা সময়ের প্রত্যাশা করার সঙ্গে খারাপ সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকাও দরকার। পাকিস্তানের জাতীয় দলের তারকা আর্শাদ খান সম্ভবনাময় তারকা ছিলেন। দ্রুত গতিতে উত্থান ঘটেছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। তবে এখন সেসব থেকে অনেকটাই দূরে তিনি।
পাকিস্তানের স্পিন ডিপার্টমেন্টের একসময় যিনি নেতৃত্ব দিতেন, তিনি এখন পেটের ভাত জোগাড় করার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় ট্যাক্সি চালান। খ্যাতির দুনিয়া থেকে বহু দূরে সরে গিয়েছেন তিনি।
২০০০ সালে ভারত-পাকিস্তান সিরিজে একাই কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শচীন তো বটেই বিধ্বংসী বীরেন্দ্র শেওয়াগকেও হার মানতে হয়েছিল আর্শাদ খানের স্পিনের সামনে। শচীন-শেওয়াগদের ঘূর্ণি বলে বিধ্বস্ত করা তারকা স্পিনারই নাকি সিডনির রাস্তায় ট্যাক্সি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
আরো পড়ুন: কোকাকোলার বোতল দেখেই খাপ্পা রোনাল্ডো! হাঙ্গেরি ম্যাচের আগেই বিতর্ক তুঙ্গে, দেখুন ভিডিও
কিছুদিন আগেই আর্শাদ খানের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে সিডনিতে এক ক্রিকেট ভক্তের ট্যাক্সি চড়ার সময়। তিনিই হঠাৎ আবিষ্কার করেন, যাঁর ট্যাক্সিতে তিনি চড়ে বসেছেন, তিনিই সেই বিখ্যাত আর্শাদ খান।
পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুঙ্খানুপুঙ্খ সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি লেখেন, "যে ড্রাইভারের গাড়িতে আমরা চড়েছিলাম, কথায় কথায় জানতে পারি, সে পাকিস্তানি। সিডনিতে থাকেন বর্তমানে। ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে খেলার সময় হায়দরাবাদে বেশ কয়েকবার লাহোর বাদশা দলের হয়ে খেলতে আসার কথা বলে। কৌতূহলবশত তাঁর পুরো নাম জিজ্ঞাসা করার পরেই ওঁর মুখ পুরোপুরি দেখতে পাই। তখনই বুঝতে পারি, কেন তাঁর মুখ এত চেনা চেনা লাগছিল। তারপর আমি করমর্দন করে ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়ি।"
২০০৫ সালে পাকিস্তানের ভারত সফরের সময়ে খ্যাতির তুঙ্গে পৌঁছন আর্শাদ খান। পেশোয়ারের এই তারকা ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ খেলেই ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। পাক তারকা অফস্পিনারের উইকেট শিকারের তালিকায় রয়েছেন এমএস ধোনি, যুবরাজ সিং, মহম্মদ কাইফ, হরভজন সিংয়ের মত বড় বড় নাম-ও।
দ্বিপাক্ষিক সেই সিরিজে একের পর এক তারকাকে আউট করেন তিনি। আরবাব নিয়াজ স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটান আর্শাদ খান। রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষেই শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন তিনি। অধুনালুপ্ত আইসিএল (ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ) খেলায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেটাই তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারের দ্রুত পতন ঘটিয়ে দেয়। জীবন সত্যিই অনিশ্চিত!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন