অঞ্জু তামাং, বছর ২৬-এর মেয়েটি জাতীয় দলে দাপিয়ে বেড়ান। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার, দলকে খেলান। তিনকাঠিটাও চেনেন পিঠ চাপড়ে দেওয়ার মতোই। অঞ্জু ছাড়া বর্তমানে ভারতীয় মহিলা ফুটবল দল কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু, তারপরও স্পনসরও জোটে না। কারণ, এদেশে ক্রিকেটকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
অন্য খেলাগুলো স্পনসর জোটাতে হিমশিম খায়। ছেলেদের ফুটবলে তা-ও বা যেটুকু আছে। মহিলা ফুটবলে স্পনসরের হাল আর বলার মত নয়! এসব বিচার করে এবার অঞ্জুকে কিট স্পনসরের সিদ্ধান্ত নিল FPAI। এই নিয়ে অঞ্জুর সঙ্গে FPAI-এর চুক্তিও হয়ে গেছে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন, এদেশে মহিলা ফুটবলে স্পনসর প্রায় ব্রাত্য বলে অঞ্জুর মত প্রতিভাবান খেলোয়াড়রাও অবহেলায় কাটাবে? ২০১৯-এর মার্চে, নেপালের বিরাটনগরে সাফ কাপের আসর বসেছিল। ভারতীয় মহিলা দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনালে ভারত নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে। তার মধ্যে একটি ছিল অঞ্জু তামাংয়ের।
বাকি দুটো দালিমার চিবার আর গ্রেস দাংমেইয়ের। এটা একটা পরিসংখ্যান। আসলে অঞ্জু এমনই। সাফল্যের তালিকাটা এরকমই দীর্ঘ। বেশ কয়েক বছর জাতীয় দলে চুটিয়ে খেলছেন। দু'বার সাফজয়ী দলের সদস্য। এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপে খেলেছেন।
এসব দেখেই এগিয়ে এল FPAI। প্রায় ১৬ বছর আগে ২০০৬ সালের ১৩ আগস্ট, কলকাতা ময়দানের 'পাহাড়ি বিছে' ভাইচুং ভুটিয়ার হাত ধরে তৈরি হয়েছিল ফুটবল প্লেয়ারস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া বা FPAI, তার পরের বছরই আন্তর্জাতিক পেশাদার ফুটবলারদের সংগঠন FIFPro-র অনুমোদন পেয়ে যায়। ভাইচুং সিকিমের ছেলে। অঞ্জুর জন্ম যদিও পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু, সিকিমের বাসিন্দা। তাই অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের নথি অনুযায়ী তিনি সিকিমের খেলোয়াড়।
আরও পড়ুন- ফুটবলই একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান, জাগলিংয়ে গিনেস রেকর্ডের স্বপ্ন গুমার বিপাশার
তবে, সিকিমটা বড় কথা না। অঞ্জুর পারফরম্যান্সই তাক লাগানোর মত। বর্তমানে সেথু এফসিতে খেলছেন। তার আগে ২০১৯-২০ মরশুমে গোকুলাম কেরালার হয়ে খেলেছেন। তার আগে খেলছিলেন রাইজিং স্টুডেন্ট ক্লাবের হয়ে।
শেষ পর্যন্ত FPAI পাশে দাঁড়ানোয় খুশি অঞ্জু বললেন, "আধুনিক বিশ্বে পেশাদার ক্রীড়াবিদদের স্পনসরশিপ দরকার। আমরা সবাই জানি যে ভারতে মহিলা ফুটবলের কাঠামো এখনও খুব একটা পেশাদার না। এদেশে অন্যান্য খেলার পেশাদার খেলোয়াড়দের চেয়ে আমাদের আয় খুব কম। তাই আমি অ্যাসোসিয়েশনকে (FPAI) এই স্পনসরশিপের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এতে আমি আরও ভালো করে খেলতে পারব। আশা করব, সব মহিলা ফুটবলাররাই প্লেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তাদের সাহায্য পাবেন।"