Gautam Gambhir and Mahela Jayawardene likely to be next Team India coach: স্টিফেন ফ্লেমিং, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, রিকি পন্টিং, এমনকি ভিভিএস লক্ষ্মণ নন, বোর্ডের ফোকাসে আপাতত এই মুহূর্তে নাকি টপ প্রায়োরিটি গৌতম গম্ভীর এবং মাহেলা জয়াবর্ধনে। রাহুল দ্রাবিড়কে সরিয়ে হেড কোচের সিংহাসনে বসার জন্য গৌতম গম্ভীরকেই এবং জয়াবর্ধনেকেই উপযুক্ত মনে করছে জয় শাহের বিসিসিআই।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, বোর্ডের তরফে নাকি সম্প্রতি যোগাযোগ করা হয়েছিল গম্ভীরের সঙ্গে। ফ্লেমিংয়ের সঙ্গেও একপ্রস্থ কথা চালায় বোর্ড। তবে কোচিংয়ের মেয়াদ সেই ২০২৭ পর্যন্ত- সেটা ভেবেই কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছেন আইপিএলের সফলতম কোচ। পন্টিংও টানা ভারতে কোচিংয়ে আগ্রহী নন। এমন পরিস্থিতিতেই বোর্ডের হট ফেভারিট গৌতম গম্ভীর।
মাহেলা জয়াবর্ধনে ভারতীয় ক্রিকেটে বেশ কিছুদিন কাজ করে চলেছেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-এর হেড কোচ ছিলেন। বর্তমানে সেই ফ্র্যাঞ্চাইজির-ই হেড অফ ক্রিকেট। শুধু আইপিএল নয়, বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজির বিভিন্ন দেশে ক্রিকেটীয় সমস্ত বিষয় দেখভাল করেন। আইপিএল জয়ের অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর।
অন্যদিকে, গম্ভীরের আবার কোচিংয়ের কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। তবে আইপিএলে লখনৌ এবং কেকেআরের সঙ্গে মেন্টর হিসাবে সমর্থকদের প্রিয় 'গৌতি' যা 'পারফর্ম' করেছেন সেটাই নজর কেড়েছে বোর্ডের। লখনৌয়ের টানা দু-বার প্লে অফে ওঠার পিছনে অন্যতম মস্তিষ্ক ছিলেন গম্ভীরের। পুরোনো সংসার কেকেআরের ফিরে চমক দিয়েছেন তিনি। নাইটরা আইপিএল ইতিহাসে প্ৰথমবার শীর্ষ স্থান অর্জন করা হিসেবে কেকেআর খেলবে প্লে অফে। এতদিন ধুঁকতে থাকা কেকেআর হঠাৎ করেই যেন গম্ভীরের আগমনে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, তাঁর ছেড়ে আসা লখনৌ এখন বিতর্কে জর্জরিত। প্লে অফে প্ৰথমবার উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন কেএল রাহুলরা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দুজ ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই গম্ভীরের অবদান কোচ নয় মেন্টর হিসাবে।
এখনও পর্যন্ত বোর্ডের সঙ্গে গম্ভীরের আলোচনা একদম প্রাথমিক পর্যায়ে। জানা যাচ্ছে গম্ভীরের বেতন নিয়ে বোর্ডের আলোচনা হতে পারে। রাহুল দ্রাবিড়ের বার্ষিক বেতন ছিল ১০ কোটি টাকা। গম্ভীরের দাবি অবশ্য কিছুটা বেশিই। তিনি আইপিএলে মেন্টর হিসাবে তো বটেই ধারাভাষ্যকার হিসেবেও বড় অঙ্কের অর্থ উপার্জন করতেন। হেড কোচ হলে লাভজনক সমস্ত পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। সবদিক বিবেচনা করে গম্ভীরের বেতন পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
বোর্ডের কাছে কোচের পদে আবেদন করার শেষ তারিখ ২৭ মে। আইপিএল শেষ হচ্ছে ২৬ মে। কেকেআরের খেলা শেষ হলেই আলোচনা যে গতি বাড়াবে, তাতে সন্দেহ নেই।
বোর্ডের তরফে হেড কোচের আবেদনের জন্য যে মানদণ্ড প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আবেদনকারীর অবশ্যই নূন্যতম ৩০ টেস্ট অথবা ৫০ ওয়ানডে খেলার যোগ্যতা থাকতে হবে। দু-বারের বিশ্বকাপজয়ী গম্ভীর অথবা জয়াবর্ধনের যোগ্যতা সেই মানদণ্ড পেরোনোর সামর্থ রাখে।
গত বছর পর্যন্ত গম্ভীরের ক্রিকেটের সঙ্গে সংযোগ ছিল অল্পস্বল্প ধারাভাষ্য করা, তাও একমাত্র আইপিএল সিজনে। মাঝে দিল্লি উত্তর কেন্দ্র থেকে জিতে লোকসভার সদস্যও হয়েছেন। তবে এবার রাজনৈতিক কেরিয়ারে সংযোগ ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেকেআরে ফিরেই তাঁর ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখছেন তিনি।
এমনিতে রোহিত-কোহলির মত সিনিয়র তারকারা কোচিংয়ে অভ্যস্ত একজন মুখকে খুঁজছেন। গম্ভীরের সঙ্গে দুজনের সম্পর্ক বেশ মসৃন। রোহিত বরাবরই গম্ভীরের কাছের। তবে বিরাট কোহলির সঙ্গে এক সিজন আগে যে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছিল লখনৌ-আরসিবি ম্যাচের সময়, সেই অভিজ্ঞতা থেকে দুজনেই সরে এসেছেন। চলতি সিজনেই কেকেআর-আরসিবি ম্যাচে গম্ভীর-কোহলিকে দীর্ঘক্ষন আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে।
জয়াবর্ধনে আবার রোহিত শর্মার ঘনিষ্ঠ। দুজনেই মুম্বইয়ের কোচ-ক্যাপ্টেন পদে ছিলেন। এছাড়াও আইসিসি ইভেন্টে অতীতে জয়াবর্ধনেকে শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের হয়ে উপদেষ্টা কোচের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে।
বোর্ড এমন একজনকে চাইছেন, যিনি তারকাদের সামলানোর কাজে সমানভাবে দক্ষ। বোর্ডের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও সরাসরি লেখা হয়েছিল সেই মাপকাঠি। আর গম্ভীর বরাবর-ই ঠোঁটকাঁটা হিসাবে পরিচিত। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে দ্বিধা করেন না। জয়াবর্ধনে আবার কিছুটা নীরবে কাজ করেন। তারকা খচিত মুম্বইয়ের ড্রেসিংরুম সামলে চ্যাম্পিয়ন করতে সাহায্য করেছেন দলকে। কোহলি-রোহিত-বুমরাদের মত তারকা বোঝাই ড্রেসিংরুম সামলানোর জন্য গম্ভীর এবং জয়াবর্ধনের মত একজনকে আদর্শ মনে করছে বিসিসিআই।
সবমিলিয়ে, গম্ভীর নাকি জয়াবর্ধনে পরবর্তী টিম ইন্ডিয়া হেড কোচ, তা ঠিক হয়ে যাবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই।