অতীতে একাধিকবার ধোনির সঙ্গে এমন অনেক বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন, যাতে মনে হয়েছিল গম্ভীরের সঙ্গে বিশ্বকাপজয়ী দলনেতার সম্পর্কে বোধহয় বিস্তর ফাঁক রয়েছে। ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে নিজের ৯১ রানের গুরুত্ব বোঝানো হোক বা ২০১২-য় সিবি সিরিজে ধোনির অধিনায়কত্বের খুল্লামখুল্লা সমালোচনা- গম্ভীরের সঙ্গে ধোনির সম্পর্ক নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল ক্রিকেট মহলে। তবে অতীতের সমস্ত বিতর্ক সরিয়ে গম্ভীরের গলায় ধোনির স্তুতি শোনা গেল শুক্রবার।
Advertisment
যতীন সাপ্রুর ইউটিউব শো 'ওভার এন্ড আউট'-এ নিজের সঙ্গে ধোনির সম্পর্কের জটিলতা একেবারে উড়িয়ে দিলেন গম্ভীর। সাফ জানিয়ে দিলেন, ধোনির মত একজন লেজেন্ডের জন্য তাঁর বরাবরই শ্রদ্ধা রয়েছে। জানালেন, যে কোনও সময়ে ধোনির পাশে দাঁড়াতে তিনি সবসময় এগিয়ে যাবেন। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ধোনির অবদানও স্বীকার করে নেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতির ময়দানে নাম লেখানো তারকা।
"ধোনির জন্য বরাবর অনেক শ্রদ্ধা রয়েছে আমার। সবসময়েই এটা থাকবে। আগেও বলেছি, তোমার চ্যানেলেও বলব, ভারতের ১৩৮ কোটি জনগণের সামনে যেকোনও সময় এই বিষয়ে বলতে তৈরি থাকব আমি। যে কখনও প্রয়োজন হলে, আমি প্ৰথম ব্যক্তি হিসেবে ধোনির পাশে দাঁড়াব। আশা করি, এরকম প্রয়োজনের মুহূর্ত আসবে না। একজন মানুষ হিসাবে, একজন ক্রিকেটার হিসাবে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি ও যা করেছে, তাতে আমি বরাবর ওঁর পাশে থাকব।" জানিয়ে দিয়েছেন গম্ভীর।
Advertisment
আইপিএলে কেকেআরের হয়ে দুবার ট্রফি জয়ী অধিনায়ক এবার লখনৌ সুপার জায়ান্টস দলের মেন্টর। তিনি অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, ধোনির সঙ্গে একাধিক বিষয়ে তাঁর মতপার্থক্য ছিল। তবে তাঁর জন্য ধোনির প্রতি সম্মান প্রদর্শনে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হবেন না তিনি।
গম্ভীর জানাচ্ছেন, "আমাদের সকলের মধ্যেই মতান্তর ঘটতেই পারে। আমি খেলাকে যে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখি, সেটা অন্যের সঙ্গে মিলতে না-ও পারে। আমার নিজস্ব মতামত রয়েছে। ধোনির স্বতন্ত্র মতামত থাকতেই পারে। ধোনি অধিনায়ক থাকাকালীন আমিই দীর্ঘদিন সহ অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলেছি। আমরা অন্য দলের হয়ে মাঠে নামলে চরম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতাম মাঠে। তবে ও যে ধরণের ক্রিকেটার, যে ধরণের মানুষ, তাতে ওঁর জন্য শ্রদ্ধা বরাদ্দ থাকবে সবসময়।"
সেই সঙ্গে গম্ভীর আরও জানাচ্ছেন লোয়ার অর্ডার ছেড়ে ধোনি যদি তিন নম্বরে ব্যাটিং করতেন, তাহলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের বহু রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল তাঁর। "আমি আবার-ও বলছি, ও যদি তিন নম্বরে ব্যাট করত, তাহলে সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিতে পারত। আমরা তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশনে গ্রেট ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রায়ই আলোচনা করি। তবে ধোনি নিয়মিত ওই পজিশনে ব্যাটিং করলে সমস্ত রেকর্ড চুরমার করে দিত।" বলেছেন গম্ভীর।
পরিসংখ্যানও গম্ভীরের যুক্তিতে সায় দিচ্ছে। ২০০৫-এ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ধোনির ১৮৩ রানের ইনিংস এসেছিল তিন নম্বরে ব্যাটিং করেই। ১৫ ইনিংসে তিন নম্বরে ব্যাট করতে দেখা গিয়েছে ধোনিকে। এই ১৫ ইনিংসেই ধোনির ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ৯৯৩ রান। গড়? ৮২ ৭৫!