টিম ইন্ডিয়ার দুই প্রাক্তন সতীর্থ গৌতম গম্ভীর এবং এস শ্রীসন্থ এবার ঝামেলায় জড়ালেন। তা-ও লিজেন্ডস লিগের ম্যাচ চলাকালীন। দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হল। দুই দলের ক্রিকেটাররা তো বটেই অন-ফিল্ড আম্পায়াররাও দুজনকে থামিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
সেই ঘটনার পর শ্রীসন্থ নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে গম্ভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে ভয়ঙ্কর কড়া কিছু মন্তব্য করা হয়েছে। টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন স্পিডস্টার বলেছেন, "মিস্টার ফাইটারের সঙ্গে কী হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে দিতে চাই। একজন যে সবসময় নিজের সতীর্থদের সঙ্গে লড়াই করে, কোনও কারণ ছাড়াই। এমনকি নিজের দলের সিনিয়র প্লেয়ার, বীরুকেও সম্মান জানায় না। এটাই আজকে হল। ও আমাকে এমন কিছু কড়া কথা বলে চলেছিল যেটা মিস্টার গৌতম গম্ভীরের বলা উচিত নয়।"
"আমি মোটেই এখানে দোষী নয়। সেটাই সোজাসুজি বলতে চাইছি। গৌতি কী করেছে, সেটা সবাই খুবসল শিগগিরই জানতে পারবেন। ম্যাচ চলাকালীন ওঁর মুখ থেকে যে কথা বেরিয়েছে, সেটা কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমার পরিবার, আমার রাজ্য, প্রত্যেকেই এত খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সকলের সমর্থন নিয়ে এই লড়াই আমি চালিয়ে গিয়েছি। এখন কিছু মানুষ আমাকে আবার টেনে নামাতে চাইছে কোনও কারণ ছাড়াই। ও যেটা বলেছে, সেটা মোটেও বলা উচিত হয়নি। আমি আপনাদের জানাব, ও কী বলেছে।"
এমনকি গম্ভীরকে একহাত নেওয়ার সময় আইপিএলের সময় কোহলির সঙ্গে দ্বৈরথ নিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়েননি শ্রীসন্থ, "মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করে লাভ কী যদি কেউ নিজের সতীর্থদের সঙ্গেই ঝামেলা করে। এমনকি লাইভ সম্প্রচারের সময়েও ওঁকে বিরাটকে নিয়ে প্রশ্ন করলে চুপ থাকে। ও অন্য কথা বলতে শুরু করে দেয়। আমি খুব বেশি গভীরে ঢুকতে চাইছি না। আমি স্রেফ এটাই বলব, আমি তো বটেই আমার পরিবার, আমার একান্ত ব্যক্তিরাও দারুণভাবে আহত। আর ও যা বলেছে, সেটা আরও খারাপ। আমি কিন্তু একটাও অপশব্দ বা গালিগালাজ ব্যবহার করিনি। ও যেটা করে থাকে, সেভাবেই বারবার বলেই চলেছিলম"
শ্রীসন্থের কেরিয়ারের কালো দাগ ছিল ২০১৩। সেই সময় দিল্লি পুলিশ অভিযোগ করে বলেছিল শ্রীসন্থ এবং আরও দুই তারকা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিলেন আইপিএলে। পরে দিল্লির আদালত থেকে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এলএলসি-তে গম্ভীর-শ্রীসন্থের দ্বন্দ্বযুদ্ধের অবতারণা ঘটে দ্বিতীয় ওভার চলাকালীন। সেই ওভারে শ্রীসন্থকে পরপর দু-বলে বাউন্ডারিজ ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। পরের বলে গম্ভীরের শট সরাসরি ফিল্ডারের হাতে জমা হয়। এরপরই শ্রীসন্থকে কিছু বলতে শোনা হয়। পাল্টা দেন গম্ভীর-ও।
এই ঘটনা সরিয়ে গম্ভীরের ক্যাপিটালস এলিমিনেটরের এই ম্যাচ জিতে নেয় ১২ রানে। শ্রীসন্থের গুজরাট জায়ান্টস ছিটকে যায় টুর্নামেন্ট থেকে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের গম্ভীরের ক্যাপিটালস মুখোমুখি হবে মণিপুর টাইগার্স-এর। ফাইনালে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে আর্বানাইজার্স হায়দরাবাদ।
গম্ভীর এবং শ্রীসন্থ দুজনেই মাঠের মধ্যে বিতর্কিত চরিত্র। গম্ভীরের সঙ্গে শাহিদ আফ্রিদির লড়াই ভোলার নয়। ২০০৭-এ কানপুরে গম্ভীর ওয়ানডে ম্যাচ চলার সময় রান নিতে গিয়ে আফ্রিদির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। শ্রীসন্থ আবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আন্দ্রে নেলের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। এমনকি আইপিএলে হরভজন সিংয়ের সঙ্গে বাক্য বিনিময় করে চড়-ও হজম করেন।