নির্বাচকদের প্রতি আগেই অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন সুরেশ রায়না, ইরফান পাঠানের মত তারকারা। এবার সদ্য প্রাক্তন নির্বাচক প্রধান এমএসকে প্রসাদকে একহাত নিলেন গৌতম গম্ভীর। সরাসরি জানিয়ে দিলেন, এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচকমণ্ডলী বেশ কিছু হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি গম্ভীরের বক্তব্য, নির্বাচনে কোচ ও অধিনায়কের আরো বেশি মতামত গুরুত্ব পাওয়া উচিত।
স্টার স্পোর্টসের ক্রিকেট কানেক্টেড অনুষ্ঠানে এসে গম্ভীর জানিয়ে দিলেন, "এখন সময় এসেছে অধিনায়কেরও নির্বাচনে ভূমিকা পালন করার। ক্যাপ্টেন ও কোচ দুজনকেই সিলেক্টর হতে হবে। প্রথম একাদশ কী হবে, তা নিয়ে নির্বাচকের কোনো মতামতই থাকা উচিত নয়। প্রথম একাদশ পুরোপুরি ক্যাপ্টেনের নিজের দায়িত্বে বানানো উচিত। একইভাবে অধিনায়ক ও কোচকেও নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া উচিত। কারণ সেই দলের পারফরমেন্স এ তাদেরও দায়িত্ব থাকে।"
এর আগে এমএসকে প্রসাদ জানিয়েছিলেন, "আমাদের নিয়ম অনুযায়ী, ক্যাপ্টেনের নিজস্ব মতামত থাকে। তবে নির্বাচনে ভোটিং প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন না।"
গম্ভীর এই প্রসঙ্গে এমএসকে প্রসাদকে থ্রি ডি বিতর্কের প্রসঙ্গ এনে ঠুকেছেন। দিল্লির বাঁ হাতি জানিয়েছেন, "বিশ্বকাপে বিজয় অথবা যাকেই নেওয়া হোক না কেন, বেশ কিছু সিদ্ধান্ত পুরোপুরি চমকে দেওয়ার মত। আম্বাতি রাইডুকে নির্বাচন না করে ৪ নম্বর পজিশনে আর কাউকে পেলো না ওঁরা। টানা দু বছর ধরে রায়াডুকে ৪ নম্বর পজিশনে খেলানো হল। তারপর হঠাৎ বিশ্বকাপের আগেই বাদ দেওয়া হল। নির্বাচক প্রধান বললেন থ্রি ডি ক্রিকেটার প্রয়োজন। এরকম বিবৃতি নির্বাচক প্রধানের কাছ থেকে আশা করা যায় না।"
বিজয়শঙ্করকে নেওয়ার যুক্তি হিসাবে এমএসকে প্রসাদ জানিয়েছিলেন, "পরিষ্কার করে বলা যাক, টপ অর্ডারে সবাই ব্যাটসম্যান- শিখর, রোহিত, বিরাট। এমন কেউ নেই যে বোলিং করতে পারে। বিজয়শঙ্করের মত এমন একজন যে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করার পাশাপাশি বল হাতে ইংলিশ কন্ডিশনে সফল হতে পারে।"
বিতর্কের এখানেই শেষ নয়। এর আগে একাধিক প্রাক্তন ক্রিকেটাররা নির্বাচকদের অভিজ্ঞতার অভাবের কথা বলেছিলেন। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত জানিয়েছেন, প্রসাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ খেলার একদমই অভিজ্ঞতা নেই। স্বয়ং সুনীল গাভাস্কারের বক্তব্য ছিল, নির্বাচকরা মোটেই অভিজ্ঞ নন। ওরা অনেকটা "কুঁড়ে হাঁসের মত।"
কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত বলেন, "আমি গৌতম গম্ভীর কিংবা এমএসকে প্ৰসাদের হয়ে বলছি না। ঘটনা হল, আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটের মধ্যে ফারাক বিশাল।" কিছুদিন আগেই আবার সুনীল জোশি প্রসাদের ছেড়ে যাওয়া পদে বসেছেন। এমএসকে প্রসাদ আবার শ্রীকান্তকে পাল্টা বলেছিলেন, "আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটের পার্থক্য নিয়ে চিকা (শ্রীকান্ত) যা বলেছে তাতে আমি পুরোপুরি একমত। তাঁর অভিজ্ঞতাই সবসময় নির্বাচকদের মাপকাঠি হয় না। এতে অনেক ক্রিকেটার বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।"
এসব কথা অবশ্য মানছেন না গম্ভীর। তিনি সাফ জানান, "নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানকে অবশ্যই অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হতে হবে। যার অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যে ক্রিকেটের অনেক উত্থান পতনের সাক্ষী থেকেছেন। যতই খেলার অভিজ্ঞতা থাকবে ততই ক্রিকেটার বাছাইয়ে সুবিধা হবে।"