Team India coach Gautam Gambhir: কোচ হওয়ার পর গৌতম গম্ভীরকে পুরোপুরি ক্ষমতা ছাড়া হয়েছিল। তাঁর কোচিংয়ের মেয়াদ মাত্র মাস তিনেকের। তবে এর মধ্যেই জাতীয় দলে গম্ভীরের কোচিং কেরিয়ার প্রশ্নের মুখে। কোচ হয়েই পুরোপুরি বোর্ডের নীতির বিরুদ্ধে হেঁটেছিলেন।
রবি শাস্ত্রী, রাহুল দ্রাবিড় জমানায় ভারত পুরোপুরি দেশীয় কোচিং স্টাফে আস্থা রেখেছিল। সেই নীতিকে তুড়ি মেরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একাধিক বিদেশি কোচকে কোচিং স্টাফে অন্তর্ভুক্ত করেছেন গম্ভীর। কোচিং স্টাফ নির্বাচনে পুরো ক্ষমতা দেওয়ায় নীতি বিরুদ্ধ হলেও আপত্তি জানায়নি বোর্ড। মর্নি মর্কেল, রায়ান টেন দুশখাতেদের নিয়েই কোচিং পর্ব শুরু করেছেন গম্ভীর।
তবে শুরুতেই পরপর হোঁচট খেতে হয়েছে গম্ভীরের টিম ইন্ডিয়াকে। প্ৰথমে শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘূর্ণিতে ওয়ানডে সিরিজ খুঁইয়ে বসে টিম ইন্ডিয়া। তারপর লজ্জাজনকভাবে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর বিপদ ঘন্টা বেজে গিয়েছে গম্ভীরের কেরিয়ারে।
কিউইদের বিপক্ষে যেভাবে বিধ্বস্ত হতে হয়েছে ঘরের মাঠে তাতে বোর্ডের একাংশ গম্ভীরের কোচিং নীতিকেই দায়ী করছেন। রাহুল দ্রাবিড়ের জমানায় ভারত রাঙ্ক টার্নারে খেলা বন্ধ করে দিয়েছিল। স্পোর্টিং পিচে খেলেই এসেছিল একের পর এক সাফল্য। তবে গম্ভীর কোচ হওয়ার পর দ্রাবিড় নীতির বিসর্জন দিয়ে বসেন। বনবন ঘূর্ণি পিচ-ট্যাকটিক্স-এ ফিরে গিয়েছিল গম্ভীরের ভারত।
টিম ম্যানেজমেন্টের একাংশ, এবং সিনিয়র তারকাদের নাকি গম্ভীরের এই নীতিতে সায় ছিল না। গম্ভীর সকলের বিপক্ষে গিয়ে নিজের গোঁ বজায় রাখতে গিয়েই বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। এমনটা বলা হচ্ছে। বোর্ডের এক কর্তা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, "রাঙ্ক টার্নারে ফেরত যাওয়ার নীতিতে বোর্ডের কয়েকজন চোখ কপালে তুলেছিলেন। গম্ভীরের নতুন সাপোর্ট স্টাফদের কাছে জানতে চাওয়া হবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের দর্শন কী হতে চলেছে!"
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টার্নিং পিচে খেলার স্ট্র্যাটেজি শুধু নয়, মহম্মদ সিরাজকে নাইটওয়াচম্যান করে পাঠানোর বিষয়, সরফরাজ খানকে মুম্বইয়ে আট নম্বরে নামানোর ঘটনা নজর এড়িয়ে যায়নি বোর্ড কর্তাদের। প্ৰশ্ন উঠছে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে।
বোর্ডের এক কর্তা সংবাদসংস্থা পিটিআইকে আবার বলেছেন, "রবি শাস্ত্রী, রাহুল দ্রাবিড়রা যে সুযোগ সুবিধা পাননি। সেই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল গম্ভীরকে। নির্বাচক কমিটির বৈঠকে থাকতে দেওয়া হয় গম্ভীরকে। সাধারণত নির্বাচকদের বৈঠকে জাতীয় দলের কোচের থাকার অনুমতি দেওয়া হয় না। গম্ভীরের ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। সফরের গুরুত্ব বিবেচনা করে হেড কোচের উপস্থিতিতে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল।" তবে লজ্জার হোয়াইটওয়াশের পর স্কোয়াড নির্বাচনি সভায় এবার গম্ভীরের উপস্থিতিতে সম্ভবত আর ছাড়পত্র দেবে না বোর্ড।
গম্ভীর অস্ট্রেলিয়া সফরে দুজন তারকার অন্তর্ভুক্তিতে জোরাজুরি করেন। প্ৰথমজন নীতিশ রেড্ডি। দ্বিতীয়জন কেকেআরের হর্ষিত রানা। বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে অভিষেক ঘটানোর সুযোগ না পেলেও হর্ষিতকে সরাসরি রাখা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া সফরে। বর্ডার গাভাসকার ট্রফির আগে রঞ্জিতে খেলানো হলেও ইন্ডিয়া এ দলের সঙ্গে রাখা হয়নি হর্ষিতকে। অনভিজ্ঞ তারকার নির্বাচন এমনিতেই প্রশ্নবিদ্ধ।
এর ওপরে নীতিশ রেড্ডিকে নিয়েও প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকছে। গম্ভীর হার্দিক পান্ডিয়ার বিকল্প পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসাবে ভাবছেন নীতিশ রেড্ডিকে। ইন্ডিয়া এ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া এ দলের হয়ে ম্যাকেতে বেসরকারি টেস্টে অংশ নিয়েও যিনি আপাতত নজর কাড়তে পারেননি। তাঁর পেস বোলিং পাতে দেওয়ার নয় বলেই টিম ম্যানেজমেন্টের একাংশের অভিমত।
সবমিলিয়ে, কোচ হয়েই আসল উত্তাপ এবার বোধহয় টের পেতে শুরু করেছেন গুরু গম্ভীর। অস্ট্রেলিয়া সফর যে তাঁর কোচিং মেয়াদের লিটমাস টেস্ট, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।