Advertisment

নিজের একাদশে আমাকে রেখেছিলেন চুনীদা, আজ সব অতীত

শেষবার চুনীদার সঙ্গে দেখা মোহনবাগান দিবসে। প্রসূন যখন মোহনবাগান রত্ন পেল। হুইলচেয়ারে চুনীদা যে এসেছিল তা দেখেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দেশের ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। সময় হলে সকলকেই যেতে হয়। তবু চুনিদার যাওয়া মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। খেলায় অনন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। শুধু ফুটবল নয় যেকোনো খেলায় ওঁর মতো পারদর্শিতা চোখে পড়ার মত। এরকম ক্রীড়াবিদ তো বারবার আসে না। আগামী একশো বছরেও এই পর্যায়ের ক্রীড়াব্যক্তিত্ব আসবে কিনা, সন্দেহ!

Advertisment

চুনীদা আমার জীবনে ফাদার ফিগার ছিলেন প্রকৃত অর্থে। ৮৬-র বিশ্বকাপ কভার করতে গিয়েছিলাম যুগান্তর পত্রিকার হয়ে। তার একটু অসুস্থ ছিলাম। তবে চুনীদা ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমাকে পরিচিত চিকিৎসকের কাছে পাঠিয়ে আমাকে সুস্থ করে তোলেন। চুনীদা কে নিয়ে পুরোনো কথা বলতে গেলে সেই আলোচনা সম্ভবত শেষই হবে না। খেলার সব্যসাচী বলতে যা বোঝায় একদম তাই ছিলেন। ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটের দক্ষতা তো অনেকেই জানেন। তবে লন টেনিসও দুরন্ত খেলতেন। শুনেছি সোবার্স নাকি ক্রিকেট ফুটবল সমান দক্ষতায় খেলতেন। তবে আমাদের কাছে চুনীদাই ছিলেন খেলার জগতের শেষ কথা।

তখন কলকাতা ময়দানে ইতিমধ্যেই চার বছর খেলা হয়ে গিয়েছে। চুনীদা ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটের মাঠও মাতিয়ে রাখতেন। সেই সময় বিদেশি ক্রিকেট দলগুলো কলকাতায় খেলতে এলে অনেক সময় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হতো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের বিপক্ষে চুনীদার তাণ্ডব দেখেছি চোখের সামনে। ব্যাটে রান করার সঙ্গে নিয়মিত উইকেটও নিতেন। সেই ম্যাজিক এখনও চোখে ভাসে। মোহনবাগান মাঠে ৬৭-এ চুনীদার বিরুদ্ধে আইএফএ শিল্ডে খেলেছি ইস্টার্ন রেলের হয়ে। এরকম কত স্মৃতি রয়েছে। বৃহস্পতিবারের পর সব অতীত হয়ে গেল।

চুনীদা স্পোর্টসপার্সন ইন দ্য ট্রুয়েস্ট সেন্স অফ দ্য টার্ম। উনি নিজের সেরা ভারতীয় একাদশে আমাকে আর সুধীর কর্মকারকে দুজনকেই রেখেছিলেন। এটা আমার জীবনের অন্যতম বড় পাওনা।

শেষবার চুনীদার সঙ্গে দেখা মোহনবাগান দিবসে। প্রসূন যখন মোহনবাগান রত্ন পেল। হুইলচেয়ারে চুনীদা যে এসেছিল তা দেখেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সঙ্গে বৌদি এসেছিলেন। চুনীদা আমাকে দেখেই আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, "কেমন আছিস?" বৌদি আমাকে বললেন, আমাকে খুব স্নেহ করেন উনি। আমি আবার পাল্টা বললাম, সেকথা কি আমাকে নতুন করে বলতে হবে!

দুপুরে সাধারণত ঘুমাই না। গতকালই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠতেই মেয়ে খবর দিলো। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। এই শোক কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে আমার।

Kolkata Football Chuni Goswami
Advertisment