গত সপ্তাহেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল বছর পনেরোর জ্যোতি কুমারী। নিজের অসুস্থ বাবাকে সাইকেলে চাপিয়ে গুরগাঁও থেকে বিহার- ১৫০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েছিল সে। স্রেফ সাইকেলে তার কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই ভাইরাল হয়ে যায় জ্যোতি কুমারী। তাঁর সাইকেল-কাহিনীর সৌজন্যে এবার তাঁকে ট্রায়ালে ডেকে নিল সাইকেল ফেডারেশন।
লকডাউনের মধ্যেই বাড়িওয়ালার তাড়িয়ে দিতে পারেন। এই ভয় থেকেই কিশোরী জিনিসপত্র গুছিয়ে অসুস্থ বাবাকে সাইকেলের কেরিয়ারে বসিয়ে প্যাডেলে পা রাখে। সেই কাহিনী বলতে গিয়ে জ্যোতির বাবা বলেছিলেন, "এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে জ্যোতি আমাকে বলে বাড়ি ফেরার জন্য। আমি বলেছিলাম, এখন ট্রেন, বাস কিছু পাওয়া যাবে না। আর আমি এই অবস্থায় হাঁটতেও পারবো না। তখন জ্যোতি বাইসাইকেলে ফেরার কথা বলে।"
এই কাহিনী, জেদের গল্পই ছুঁয়ে গেছে সাইকেল ফেডারেশনের কর্তাদের। দেশের সাইকেল ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ওঙ্কার সিং পিটিআইকে জানান, যদি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জ্যোতি কুমারী ট্রায়ালে উত্তীর্ণ হয়, তাহলে ন্যাশনাল সাইকেল একাডেমির নয়া দিল্লির আইজিআই স্টেডিয়ামে একজন ট্রেনি হিসাবে নির্বাচিত হবে। তিনি আরো জানান, "সকালেই জ্যোতির সঙ্গে কথা হয়েছে। ওকে জানানো হয়েছে, লকডাউন উঠে গেলে যত শীঘ্র সম্ভব পরের মাসেই ওকে দিল্লিতে ট্রায়ালে ডাকা হবে। ওর যাতায়াত, থাকা এবং অন্যান্য খরচ ফেডারেশন বহন করবে।"
পাশাপাশি ওঙ্কার সিংয়ের আরো সংযোজন, "যদি ওর সঙ্গে কেউ আসতে চান পরিবারের, সেই ব্যবস্থাও আমরা করবো। ওকে কিভাবে দিল্লিতে ট্রায়ালে আনা যায় সেই বিষয়ে বিহারের রাজ্য সংস্থার সঙ্গেও আমরা কথা বলছি।"
কী কারণে এই ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যাও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, "ওঁর মধ্যে বিশেষ কিছু রয়েছে। আমার মনে হয় সাইকেলে করে ১২০০ কিমি পথ পাড়ি দেওয়া মোটেই সহজ নয়। ওর শক্তি ও সহনশীলতা বাকিদের থেকে আলাদা। এই বিষয়টিই আমরা পরীক্ষা করে দেখতে চাই।"
"আমাদের কম্পিউটার চালিত সাইকেলে বসিয়ে দেখা হবে নির্বাচনের জন্য সাত-আটটা প্যারামিটার ও পেরোতে পারে কিনা! সেটা পেরোলেই ও আমাদের ট্রেনি হতে পারবে। এবং নিখরচায় ট্রেনিং নিতে পারবে।" এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, সাইকেল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া সবসময় তরুণ প্রতিভাদের তুলে আনতে চায়।