ইস্টবেঙ্গলঃ ১ (২) গোকুলম কেরালাঃ ১ (৩)
(সামাদ আলি মল্লিক) (মার্কাস জোসেফ, পেনাল্টি)
তাঁর ফেসবুক পেজের কভার ফোটো এবং ডিসপ্লে পিকচারে এখনও জ্বলজ্বল করছে ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে খেলার ছবি। দল বদলে ফেললেও এখনও পুরনো ক্লাবকে ভুলতে পারেননি কেরালার গোলকিপার। সেই উবেইদের হাতেই এবার থেমে গেল আলেয়ান্দ্রো মেনেন্ডেজের ডুরান্ডের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন। অতিরিক্ত সময় সহ প্রায় দু-ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের একাধিক আক্রমণ যেমন ভোঁতা করে দিলেন। তেমনই টাইব্রেকার শ্যুট আউটে তিনটে শট বাঁচিয়ে দলকে তুলললেন ফাইনালে।
ডুরান্ডের সেমিফাইনাল। ভাবা হয়েছিল গোকুলমকে ফর্মে থাকা ইস্টবেঙ্গল তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবে। তবে ফলাফল হল উলটো। ১ গোলে সারাক্ষণ এগিয়ে থেকেও মোক্ষম সময় গোল হজম করে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল ইস্টবেঙ্গল। সংযোজিত সময়ে মেহতাব সিংয়ের একটা ভুল। আর সেই ভুলেই ১৬বারেরর টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ডের শেষ চারের গাঁট পেরোতে ব্যর্থ।
আরও পড়ুন
প্রথমার্ধের ১৮ মিনিটেই সামাদের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সামাদের থ্রু বল রিসিভ করে ডানপ্রান্তিক শট নিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর সিং। সেই বল গোকুলম গোলরক্ষক উবেইদ ক্লিয়ার করতে পারেননি। ডিফেন্ডার ইরশাদও বল বিপদসীমার বাইরে পাঠাতে পারেননি। সেই লুজ বল ধরে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে দারুণ গোল করে যান সামাদ।
তারপর পুরো ম্যাচ ধরে চলল টাগ অফ ওয়ার! কখনও গোকুলম কখনও আবার ইস্টবেঙ্গল সুযোগ তৈরি করেও জালে বল জড়াতে পারছিলেন না। ইস্টবেঙ্গল কোচ এদিন বোরহাকে বাইরে রেখে মার্তি ক্রেসপি স্টপারে মেহতাবের সঙ্গে জুড়ি করে নামিয়েছিলেন। পাশাপাশি বিদেশি কোটায় নামানো হয়েছিল কাশিদ আইদারা এবং হাইমে স্যান্টোসকে। সামাদ ডান প্রান্ত ধরে সাবলীল খেলে গেলেও লেফট ব্যাট পজিশনে মনোজকে এদিন ওভারল্যাপে কার্যত উঠতেই পারলেন না। আর মনোজের ব্যর্থতাতেই বাঁ প্রান্ত ধরে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়ে গেল গোকুলম।
খেলায় যখন শেষ মুহূর্তের বাঁশি বাজার অপেক্ষা। সেই সময়েই বক্সের মধ্যে আবার ইরশাদকে ফাউল করেন মেহতাব সিং। পেনাল্টি থেকে গোল করে যান মার্কাস জোসেফ। এরপরে দশ জনে হয়ে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল যে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট ধরে গোল হজম করলেন না তাঁর কৃতিত্ব অনেকটাই মির্শাদের।
জয়ের পরে গোকুলম কেরালার ফুটবলাররা (এক্সপ্রেস ফোটো)
অতিরিক্ত সময়েও খেলার মীমাংসা না হওয়ায় টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে প্রথম দুটো শটেই গোল করতে ব্যর্থ হন ডিকা এবং হাইমে। ডিকা বারপোস্টে মারার পরে হাইমের শট সেভ করে দেন উবেইদ। তারপরে ক্রেসপি, বৈথাং ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে গোল করলেও তনদম্বার শট রুখে ইস্টবেঙ্গলের হার নিশ্চিত করেন উবেইদ। মাঝে অবশ্য গোকুলমের মেইতেইয়ের শট মির্শাদ বাঁচিয়ে দিলেও তা ইস্টবেঙ্গলের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
ইস্টবেঙ্গলঃ হাইমে কোলাডো, পিন্টু মাহাতো, কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে, মার্তি ক্রেসপি, সামাদ মল্লিক (কমলপ্রীত সিং), বিদ্যাসাগর সিং (বৈথাং), মেহতাব সিং, ব্রেন্ডন, মির্শাদ কে, মনোজ মহম্মদ
গোকুলম কেরালাঃ উবেইদ সিকে, নাওচা সিং, আন্দ্রে এঁতেইন, মহম্মদ ইরশাদ, জেস্টিন, সেবাস্টিয়ান, মহম্মদ রশিদ, মার্কাস জোসেফ, মেইতেই, শিলবিল মহম্মদ, হেনরি কিসেক্কা