করোনা ভাইরাসের অতিমারীর মধ্যেই সুখবর। ক্যান্সারে আক্রান্ত সোনাজয়ী বক্সার ডিংকো সিং মারণ ভাইরাসকে বধ করলেন। দীর্ঘদিন প্রায় এক মাস আক্রান্ত হওয়ার পর এবার তার করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। করোনা-পজিটিভ ধরা পড়ার পরে ইমফলের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ ন্যাশনাল সায়েন্সেস (রিমস) এ চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
দেশবাসীকে প্রথম এই সুখবর দেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। তিনি নিজের টুইটারে লেখেন, "দিল্লি থেকে ফেরার পর বক্সিং জগতের আইকন এবং এশিয়ান গেমসের সোনাজয়ী ডিংকো সিংয়ের করোনার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এটা শুনেই ভালো লাগছে।"
এর আগে লকডাউনের মধ্যে ক্যানসার সমস্যা প্রকট হওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। দিল্লিতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার আগেই লকডাউন জারি করা হয় গোটা দেশে।
এরপরেই উপায়ন্তর না দেখে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হন ডিংকো সিং ও তার স্ত্রী। তারকা বক্সারের স্ত্রী বাবাই দেবী ফোনে মণিপুরের বাড়ি থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছিলেন, “ওর অবস্থা বেশ সংকটজনক। তাই দ্রুত দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এর আগেও ওখানে ওর চিকিৎসা হয়েছিল। এখনো অনেক টেস্ট সহ পুরো চিকিৎসা বাকি রয়ে গিয়েছে। ১০-১৫ দিন আগেই দিল্লিতে যাওয়ার কথা ছিল আমাদের। তবে লকডাউনে যেতে পারিনি।”
সাই-য়ের তরফে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। তিনি জানাচ্ছিলেন, “চিকিৎসার সমস্ত খরচ সাইয়ের তরফে বহন করা হচ্ছে। শেষবার যখন ডিংকো সিং হাসপাতালে ভর্তি ছিল, সেই সময়েও ওঁরা হাসপাতালের বিল মিটিয়েছিল।”
তারকা বক্সারের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এয়ারলিফট করে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে একপ্রস্থ চিকিৎসা সেরে এম্বুলেন্সেই দিল্লি থেকে ইমফল ফিরেছিলেন তিনি।
তারপরেই করোনা ধরা পড়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে দাঁড়ায়।সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে তিনি জানান, "হসপিটালে থাকার সময় পাঁচবার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। আমার পরে যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসছেন, তাঁরা আমার আগেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন, এসব দেখে ট্রমার মধ্যে চলে গিয়েছিলাম। তবে চিকিৎসক ও নার্সদের ধন্যবাদ আমাকে আরো নিয়ে যাওয়ার জন্য।"
১৯৯৭ সালে প্রথমবার প্রচারমাধ্যমের শিরোনামে আসেন ডিংকো সিং। ব্যাংককের কিংস কাপ জিতে নিয়েছিলেন তিনি। পরের বছরেই ব্যাংককে এশিয়ান গেমসের ৫৪ কেজি হেভিওয়েট ব্যান্টামওয়েট ক্যাটাগরিতে সোনা জেতেন। এরপরে পদ্মশ্রী এবং অর্জুন পুরস্কারও সম্মানিত। এখন অবশ্য সোনাজয়ী বক্সারের পাশে বসছে 'করোনা-জয়ী' শব্দবন্ধনীও।