Fitness and Bowling Form: Key Factors for Hardik Pandya's World Cup Selection: টি২০ বিশ্বকাপে কি জায়গা পাবেন হার্দিক পান্ডিয়া? পুরোটাই আপাতত সংশয়ের চাদরে। আইপিএলের বাকি অংশে মুম্বই অধিনায়ক কতটা বোলিং করেন, তার ওপরেই নির্ভর করছে টি২০ বিশ্বকাপে তাঁর জায়গা পাওয়ার বিষয়টি। গত সপ্তাহেই মুম্বইয়ে বিসিসিআইয়ের হেডকোয়ার্টার্স-এ বৈঠকে বসেছিলেন জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা, কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং নির্বাচক কমিটির প্রধান অজিত আগারকার। সেই বৈঠকেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, হার্দিককে বিশ্বকাপগামী টিম ইন্ডিয়ায় জায়গা পেতে হলে নিয়মিত বোলিং করতে হবে। বৈঠকের অধিকাংশ সময় জুড়েই আলোচনায় ছিলেন সিম-বোলিং অলরাউন্ডার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার খোঁজ রয়েছে একজন সিম বোলারের যিনি ব্যাটিংও করতে পারবেন। এমনটাই বলা হয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদনে।
হার্দিকের আইপিএল অভিযান দুঃস্বপ্নের হয়ে উঠেছে। মাঠে নামলেই দর্শকদের তরফে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ সহ্য করতে হচ্ছে। সমর্থকরা কোনওভাবেই রোহিতকে সরিয়ে হার্দিকের ওপর নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পণ করায় সন্তুষ্ট নন। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে হার্দিকের শোচনীয় পারফরম্যান্স। ব্যাট এবং বল হাতে নিজের সেরা ফর্মের ধারেকাছেও নেই তিনি। রবিবার ধোনির কাছে ছক্কার হ্যাটট্রিক হজম করার পর তাঁর ওপর দর্শকদের অসুয়া আরও বেড়েছে।
এমনিতেই জাতীয় দলে একাধিক ব্যাটসম্যান রয়েছে। হার্দিককে স্রেফ ব্যাটার হিসাবে নির্বাচকরা ভাবতে চাইছেন না। অলরাউন্ডারের কোটায় হার্দিককে ভাবা হচ্ছে, যাতে দলে ভারসাম্য আনতে পারেন তিনি।
আইপিএলে প্রত্যাবর্তন করার পর হার্দিক ছয় ম্যাচের মাত্র চারটিতে বোলিং করেছেন। গুজরাট টাইটান্স।এবং সানরাইজার্স ম্যাচে তিনি তিন এবং চার ওভার হাত ঘুরিয়েছিলেন যথাক্রমে। এরপর দুই ম্যাচে আবার বোলিং করেননি। আরসিবি ম্যাচে এক ওভার করার পর হার্দিক রবিবার সিএসকে ম্যাচে তিন ওভার বোলিং করেন। ধারাবাহিকভাবে যেমন বোলিং করছেন না। তেমন হার্দিকের ইকোনমি রেট (১২.০০) তাঁর বোলিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
হার্দিকের বোলিংয়ের সবথেকে বড় শক্তি হল হার্ড লেন্থে বল করে অতিরিক্ত বাউন্স আদায় করে নেওয়ার সক্ষমতা। অতীতে স্ক্র্যাম্বলড সিম ডেলিভারি এবং কাটার হার্দিককে উইকেট এনে দিয়েছে। তবে এবার যে কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে, সেখানে হার্দিক সুইংয়ের কোনও সুবিধাই পাচ্ছেন না। এতেই তাঁর বোলিং প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। পুরোনো বলে হার্দিকের স্টক বল যে আর কার্যকরী নয়, তা আগের ম্যাচেই ধোনি বুঝিয়ে দিয়েছেন।
মিডল ওভারে দলের ব্যাটাররা প্রতিপক্ষ দলের দুর্বল বোলারকে টার্গেট করে। হার্দিক মিডল ওভারে মুম্বইয়ের এই দুর্বল লিঙ্ক হয়ে উঠেছেন। গুজরাটের বিপক্ষে ১৫তম ওভারে হার্দিক ১০ রান খরচ করেন। হায়দরাবাদের বিপক্ষে হার্দিক ৯ এবং ১৪তম ওভারে নিজেকে আক্রমণে আনেন। দুই ওভারেই ১১ করে রান খরচ করেন। আরসিবির বিপক্ষে ১০ম ওভারে হার্দিকের বিলিয়েছেন ১৩ রান। সিএসকের বিপক্ষে হার্দিক ১০ম ওভারে খরচ করেন ১৫ রান। ডেথ ওভারে সিএসকে ম্যাচে হার্দিক ২৬ রান খরচ করেন ধোনির বল্লার সামনে।
পান্ডিয়ার ফর্ম নির্বাচকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। ব্যাট হাতেও নির্বাচকদের বার্তা দেওয়ার মত পারফরম্যান্স করতে পারছেন না হার্দিক। ৬ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৩১ রান। নির্বাচকরা বিশ্বকাপের স্কোয়াডে অলরাউন্ডার হিসাবে বরং চাইছেন শিবম দুবেকে। স্পিনারদের যম হয়ে উঠেছেন তিনি। ক্রিজে নামলে দুবের সামনে স্পিনার আনছেন না প্রতিপক্ষ ক্যাপ্টেনরা। এমনকি ওভার পিছু ২ বাউন্সারের নিয়ম থাকলেও দুবে ঘায়েল হচ্ছেন না পেসের সামনেও। দুবের পাওয়ার হিটিং সিএসকে স্কোয়াডে নতুন বৈচিত্র্যের সন্ধান দিয়েছে। ঘটনা হল, দুবেকে বল হাতে সেভাবে ব্যবহার করছে না সিএসকে। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে খেলানো হচ্ছে তারকাকে। তাই জাতীয় দলে দুবেকে নিলেও পার্টটাইম বোলারের বেশি ভাবা হচ্ছে না তাঁকে।
আপাতত তাই জাতীয় দলে আর কোনও পেসার-অলরাউন্ডার না থাকায় নির্বাচকরা চাইছেন দ্রুতই ফর্মে ফিরুক পান্ডিয়া। হার্দিক যদি বল হাতে ছন্দে ফিরতে পারেন, তাহলে দলের ভারসাম্য অনেকটাই বজায় থাকবে, এমনটাই ভাবা হচ্ছে। হার্দিক খেললে ব্যাটিংয়ের গভীরতা যেমন বাড়বে, তেমন বোলিংয়েও অপশন বাড়বে। তবে অফ ফর্ম এবং বোলিংয়ে ধারাবাহিকতার অভাব শেষ মুহূর্তে ভাবতে বাধ্য করাচ্ছে নির্বাচকদের। একজন পার্ট-টাইমার বোলার যে কিনা ব্যাট হাতে বিশ্বস্ত, এমন ভূমিকায় নয়, বরং বল হাতে প্রতি ম্যাচেই অবদান রাখবেন, এমন অবতারেই পান্ডিয়াকেসি চাওয়া হচ্ছে।
নিউ ইয়র্কে খেলার জন্য কী কী প্রয়োজন, তা ইতিমধ্যেই বোর্ডের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে। ভারতীয় বোর্ডের তরফে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে নিউ ইয়র্কে। সেখানে হোটেল, মাঠের কন্ডিশন, অনুশীলনের যাবতীয় বিষয় রেকি করে দেখছে বোর্ডের প্রতিনিধিরা।