Harmanpreet Kaur World Cup 2025 Win: হরমনপ্রীতদের বিশ্বজয়, চমকে যাওয়ার মত এসব পেল নতুন প্রজন্ম?

Harmanpreet Kaur World Cup 2025 Win: হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে ভারত মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫ জিতেছে। তা থেকে নতুন প্রজন্ম যা পেল, সত্যিই চমকে দেওয়ার মত।

Harmanpreet Kaur World Cup 2025 Win: হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে ভারত মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫ জিতেছে। তা থেকে নতুন প্রজন্ম যা পেল, সত্যিই চমকে দেওয়ার মত।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Harmanpreet Kaur World Cup 2025 Win: হরমনপ্রীতরা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটকে সোনালি পাতায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন।

Harmanpreet Kaur World Cup 2025 Win: হরমনপ্রীতরা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটকে সোনালি পাতায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন।

Harmanpreet Kaur World Cup 2025: হরমনপ্রীত কৌর, নামটা এখন ভারতের খেলার ইতিহাসে সোনালি পাতায় ঢুকে গেছে। প্রথমবারের মতো ভারতের মেয়েরা জিতেছে আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ (ICC Women’s World Cup)। আর সেই রাতটা যেন ১৯৮৩ সালের গৌরবময় মুহূর্তের পুনর্জন্ম ঘটাল। 

Advertisment

তবে এই জয়ের তাৎপর্য শুধু ট্রফি জিতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মেয়েদের কাছে তো বটেই। অনেকেই জানেন না, হরমনপ্রীত কৌর একসময় ছেলেদের সঙ্গেই খেলতেন। কারণ তখন মহিলা ক্রিকেটের কথা তেমন একটা শোনা যেত না। তিনি নিজেই বলেছিলেন, 'আমি মিতালি রাজ ছাড়া আর কোনও মহিলা ক্রিকেটারের নামই জানতাম না।' 
আজ সেই হরমনই হয়ে উঠেছেন প্রথম ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। এমন অধিনায়ক, যিনি বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুললেন।

আরও পড়ুন- গয়না বন্ধক রাখতে হয়েছিল মাকে, বাবা হয়েছিলেন সাসপেন্ড, তবু থামেননি ক্রান্তি, আজ তিনি বিশ্বজয়ী!

Advertisment

মিলল বিরাট অনুপ্রেরণা, কারণটা জানেন?

এই দলের প্রত্যেক সদস্যের জীবনেই আছে এক লড়াইয়ের গল্প। শেফালি ভার্মা ছোটবেলায় নিজের ভাইয়ের জায়গায় খেলতে চুল কেটে ফেলেছিলেন। দীপ্তি শর্মা ক্রিকেটে আসেন ভাইয়ের অনুশীলন দেখে। প্রতীকা রাওয়াল এখন হুইলচেয়ারে। তারপরও দলের সঙ্গে পুরস্কার মঞ্চে ছিলেন। তিনিই রোহতক রোড জিমখানার প্রথম মহিলা ক্রিকেটার।

আরও পড়ুন- মেয়ে জিতেছে বিশ্বকাপ, লিখেছে নয়া ইতিহাস! রিচার সাফল্যে 'গর্বিত' বাবা মানবেন্দ্র

এই জয়ের ফলে আজকের ভারতের ছোট মেয়েরা শুধু টিভিতে পুরুষদের নয়, ১৬ জন মহিলা বিশ্বজয়ীকে রোল মডেল হিসেবে পেল। একসময় যেমন ছেলেরা কপিল দেব, ধোনি বা কোহলিকে দেখে বড় হয়েছে, এখন মেয়েরাও বলবে— 'আমি হরমন হতে চাই।' জেমিমা রডরিগেজ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'আমি যখন স্কুলে খেলতাম, তখন একমাত্র মেয়ে ছিলাম। এখন সেখানে আলাদা গার্লস টিম আছে, আলাদা নেট আছে। মেয়েরা প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলছে।' এটাই প্রমাণ করে, পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে— আর এখন তা স্থায়ী করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত।

আরও পড়ুন- বিশ্বকাপ জিততেই পুরস্কারের বন্যা, রাতারাতি কোটিপতি হরমনপ্রীত, রিচা, শেফালিরা!

অনেকে বলছেন, এই জয় মেয়েদের ক্রিকেটের ১৯৮৩ মুহূর্ত। যদিও কপিল দেব নিজেই বলেছেন, তুলনার দরকার নেই। তিনি তুলনাতে নারাজ। তবু বাস্তবটা হল, এই জয় ভারতের মহিলা ক্রিকেটকে এক নতুন উচ্চতায় তুলে ধরেছে। ২০১৭ সালে মিতালির দল ফাইনালে পৌঁছেও ট্রফি জিততে পারেনি। কিন্তু, সেই পৌঁছনোই বদলে দিয়েছিল আজকের খেলোয়াড়দের দৃষ্টি। এবার সেই গল্প সম্পূর্ণ হল ট্রফি জয়ের মধ্যে দিয়ে।

আরও পড়ুন- বিশ্বকাপ জিততেই পুরস্কারের বন্যা, রাতারাতি কোটিপতি হরমনপ্রীত, রিচা, শেফালিরা!

এখন কী করা জরুরি

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাফল্য যাতে ফিকে হয়ে না যায়, তার জন্য বিসিসিআই (BCCI)-এর পরিকল্পিত পদক্ষেপ দরকার। জাতীয় দলের আরও বেশি আন্তর্জাতিক ট্যুর প্রয়োজন। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের শক্তিশালী অনূর্ধ্ব-১৯ এবং এ টিম দরকার। মেয়েদের ক্রিকেটে তৃণমূল পর্যায়ে বিনিয়োগ দরকার। ডব্লিউপিএল বা ওমেনস প্রিমিয়ার লিগ (WPL, Women’s Premier League) সম্প্রসারণের প্রয়োজন রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, 'ভারত যদি তাদের ঘরোয়া মহিলা ক্রিকেট সিস্টেম উন্নত করে, তবে তারা ১০ বছরের মধ্যেই অপরাজেয় হয়ে উঠবে।' এই ভবিষ্যদ্বাণী এখন বাস্তবের পথে।  

এই বিশ্বকাপ শুধু জয় নয়, এটি একটি সংস্কৃতি পরিবর্তনের সূচনা। এখন ভারতের মেয়েরা জানে — ক্রিকেট শুধু ছেলেদের খেলা নয়। আর এই আত্মবিশ্বাসের পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন হরমন, শেফালি, দীপ্তি, রিচা, রেণুকারা। তাঁরা এখন এক প্রজন্মের রোল মডেল। আগামী বিশ্বকাপে হয়তো সেই মেয়েরাই মাঠে নামবেন, যাঁরা আজ টিভির সামনে বসে হরমনদের জয় দেখেছেন। তাঁদের জন্য এখন পথ তৈরি। আর, সেটাই এই জয়ের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

World Cup Harmanpreet Kaur