দীর্ঘ পাঁচ বছরের লড়াইয়ের শেষ হয়েছে। মহম্মদ শামিকে মাসিক ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খোরপোশ দিতে হবে বিবাহ-বিচ্ছিনা স্ত্রী হাসিনকে। তবে এখনও লড়াই শেষ হয়নি। আলিপুর আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট নন হাসিন। সোমবারের রায়ের পর মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র কাছে নিজের অসন্তোষ সরাসরি জানিয়ে দিলেন হাসিন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে হাসিন জাহান বলছেন, "দীর্ঘ দিনের একটা লড়াই শেষ হল। ভালো লাগছে। তবে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই আমি। আমার কাছে এই লড়াই এখনও শেষ নয়। মাসিক ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায় কীভাবে সংসার চলবে! আমরা যে জীবনযাপনে অভ্যস্ত তাতে এই টাকা কিছুই নয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা ৩০ দিনের মধ্যেই উচ্চতর আদালতে আবেদন করব।"
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এবং গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনে শামির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন একসময়ের মডেল হাসিন জাহান। তারপর গঙ্গা-পদ্মা দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু জল। প্রথমে খোরপোষ মামলায় ৭ লক্ষ টাকা দাবি করেন হাসিন। তবে সেই মামলায় হার হয় হাসিনের। এতেও লড়াই ছাড়েননি। আদালতের প্রাথমিক রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মহম্মদ শামির স্ত্রী।
আরও পড়ুন: শাকিরার আচার খেয়ে নিল অন্য কেউ! ধরা পড়ল পিকে অন্য নারীতে আসক্ত
শেষ পর্যন্ত আলিপুর আদালতের বিচারপতি অনিন্দিতা গঙ্গোপাধ্যায় সোমবার নির্দেশ দেন, হাসিনকে ৫০ হাজার এবং মেয়ে আইরার পড়াশুনার খরচ বাবদ আরও ৮০ হাজার। অর্থাৎ মাসিক ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে মহম্মদ শামিকে। যেদিন থেকে মামলা করেছেন হাসিন সেদিন থেকেই সমস্ত টাকা দিতে হবে শামিকে।
এই রায়ের আপত্তি জানিয়ে মঙ্গলবার বিষ্ফোরক হাসিন জানাচ্ছেন, "কালো টাকা সাদা করার খেলা চলছে। শামি ইনকাম ট্যাক্সের নথি জমা দিয়ে দেখিয়েছে বার্ষিক ও উপার্জন করে মাত্র ৭ কোটি টাকা। যা পুরোপুরি মিথ্যা। বোর্ডের এ গ্রেডে থাকা ক্রিকেটার হিসাবে যেমন ও ৫-৬ কোটি টাকা পেয়ে থাকে, তেমন আইপিএলে হায়দারবাদের সঙ্গে ওঁর চুক্তি রয়েছে ৬ লক্ষ টাকার। তাছাড়া মোহনবাগান, সিএবি-র সঙ্গে চুক্তি তো বটেই এন্ডোর্সমেন্ট থেকেও বহু টাকা ইনকাম করে ও। সেই সঙ্গে রিয়েল এস্টেট, ব্রাশের ব্যবসা রয়েছে ওঁর।"
আরও পড়ুন: মেসি-রোনাল্ডোর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়েই ‘বড় ভুল’ বিগ বি-র! ভিডিও নজরে আসতেই তুঙ্গে বিতর্ক
হাসিন যেন মঙ্গলবার দুপুরে থামছিলেনই না। বলেই চলেছিলেন, "আমি এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে তিরিশ দিনের মধ্যেই আবেদন করব। এই জন্য আমার আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। দরকার হলে আদালত বা ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে বোর্ডের তরফে শামির চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ও জানতে চাওয়া হবে। এখনই লড়াইয়ে রণে ভঙ্গ দিচ্ছি না।"
সময় কমেছে। কিন্তু বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ এখনও মেটেনি হাসিনের গলায়। হাসিন যেন নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বলতে থাকেন, "কেন লড়াই থামাব বলুন তো! যে নিজের মেয়ের জন্মদিনে গিফট দেওয়া তো দূরের কথা, সামান্য খোঁজখবরই রাখে না, তাঁর জন্য কীসের সহানুভূতি!"
খেলা চলছিল, খেলা চলবেই! হাসিনের কথাতেও স্পষ্ট।