কুস্তিগীরদের আন্দোলনে উত্তাল দিল্লির রাজপথ। ব্রিজভূষণের গ্রাফতারির দাবিতে অনড় প্রতিবাদী কুস্তিগীররা। এর মাঝেই বেশ কয়েকটি মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয় আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক। খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। যদিও এই খবর সম্পুর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাক্ষী মালিক বলেছেন, 'এই খবর সম্পূর্ণ ভুল। ন্যায়ের পথে লড়াইয়ে আমরা কেউ পিছপা হইনি, হবও না। সত্যাগ্রহের পাশাপাশি রেলের প্রতিও দায়িত্ব পালন করছি। ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে। দয়া করে কোন ভুল খবর ছড়াবেন না'। শনিবার গভীর রাতে দিল্লিতে অমিত শাহের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন কুস্তিগীররা। মধ্যরাত থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক।
কুস্তিগীর বজরং পুনিয়াও মিডিয়া রিপোর্টগুলিকে একবারে ভুল বলে উল্লেখ করে বলেন, "“আন্দোলন প্রত্যাহারের খবরটি কেবল একটি গুজব। আমাদের ক্ষতি করার জন্য এসব খবর ছড়ানো হচ্ছে। আমরা পিছু হটিনি বা আন্দোলন প্রত্যাহারও করিনি। মহিলা কুস্তিগীরদের এফআইআর তুলে নেওয়ার খবরও মিথ্যা। ন্যায়বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে,”।
ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের গ্রেফতারির দাবিতে অনড় প্রতিবাদকারী কুস্তিগীররা। কুস্তিগীররা শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। অমিত শাহের বাসভবনে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে চলে বৈঠক। কুস্তিগীররা ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে গ্রেফতারের পাশাপাশি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ এবং চার্জশিট পেশের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার রাত ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কুস্তিগীরদের এই বৈঠকে সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাট এবং বজরং পুনিয়ারা হাজির ছিলেন। অমিত শাহ এমন সময়ে কুস্তিগীরদের সঙ্গে দেখা করেছেন যখন খাপ পঞ্চায়েত কেন্দ্রীয় সরকারকে ৯ জুন পর্যন্ত ডেড লাইন দিয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, অমিত শাহ কুস্তিগীরদের নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
ভিনেশ সহ বেশ কয়েকজন মহিলা কুস্তিগীর WFI সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। সকলেই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবিতে এক মাস ধরে দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ করেছেন। প্রতিবাদী কুস্তিগীররাও সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হন। যেখানে আদালত তাদের কথা শুনে দিল্লি পুলিশকে নোটিশ দেয়। নোটিশের পরে, পুলিশ দেরি না করে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের করে।
সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন মহিলা সম্মান পঞ্চায়েতের দাবিতে সংসদ ভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে কুস্তিগীরদের বচসা হয়। আটক করা হয় বেশ কয়েকজন কুস্তিগীরদের। পরে তারা বৃহত্তর প্রতিবাদের ডাক দিয়ে পদকগুলি গঙ্গায় বিসর্জন দিতে হরিদ্বারে যান। কিন্তু কৃষক নেতাদের অনুরোধে তারা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
এর আগে, ক্রীড়া মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কুস্তিগীরদের "তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করার" এবং "আইনকে তার নিজস্ব পথে চলতে" সেই সঙ্গে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।