Advertisment

ধোনি কিংবদন্তি, তবে আমার কীর্তি ছুঁয়ে দেখাক কেউ, শহরে বসেই চ্যালেঞ্জ মেরির

তাঁর বায়োপিকের সৌজন্যে অনেকেই হয়তো মেরি কমের জ্বলন্ত স্ট্রাগলের সঙ্গে পরিচিত। বিয়ে, তিন সন্তানের জন্ম - কোনও কিছুই তাঁকে 'প্রথম প্রেম' বক্সিং থেকে সরিয়ে আনতে পারেনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mary Kom

অলিম্পিকের লক্ষ্যে কঠোর প্রস্তুতিতে মেরি। (ছবি- ফেসবুক)

"পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের শক্তিকে মান্যতা দেওয়া হয় না। আমরাও কিন্তু শক্তির প্রতীক হতে পারি। নারীরা পুরুষদের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়।"

Advertisment

কিংবা, "আমার কীর্তি গড়ে দেখাক কোনও পুরুষ ক্রীড়াবিদ। চ্যালেঞ্জ রইল।"

তিনি যখন কঠিন মুখে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন বাইপাসের পাঁচতারা হোটেলে, তখন বলরুম গমগম করছে হাততালির শব্দে। কে বলবে ভদ্রমহিলার বয়স কিছুদিন পরেই ৩৭ ছোঁবে। এখনও অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে ভরপুর চুংনেই।

Mary Kom অনুষ্ঠানে মেরি কম। ছবি: শুভাশিস হাজরা 

জম মেরি কম হামাঙ্গতে। গোটা বিশ্বে যাঁর পরিচিতি 'ম্যাগনিফিসেন্ট মেরি' নামে। এক সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে এসেছিলেন শহরে। সেখানেই ছ'বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দৃঢ়, আত্মপ্রত্যয়ী ট্রেডমার্ক ব্র্যান্ড নিয়ে আবির্ভূত সকলের সামনে, বরাবরের মতো।

আরও পড়ুন: IPL 2019: রাসেলই নাকি ‘বাহুবলী’, শাহরুখ প্রকাশ্যে আনলেন তারকার নয়া পরিচিতি

তিনি নাকি বক্সিংয়ের মহেন্দ্র সিং ধোনি! বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বমঞ্চে নতুন নতুন কীর্তি গড়ছেন। নতুনদের সামনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হচ্ছেন। মেরি অবশ্য নিজস্ব পরিচয়ে বাঁচতে চান। মৃদু হেসে বলে দেন, "আমি মোটেও ধোনি নই। ধোনি ক্রিকেটের কিংবদন্তি। দুরন্ত কীর্তির মালিক ও। তবে আমার খেলাটাও কিন্তু বেশ কঠিন। আমার মতো বয়সে কেউ এসে আমার নজির ছুঁয়ে দেখাক, তাহলে বুঝব! চ্যালেঞ্জ রইল সকলের সামনে।" কিংবদন্তিকে অশ্রদ্ধা নয়, আবার খ্যাতির ভুবনে নিজস্ব পরিচিতিও ম্লান হতে দেওয়া যাবে না। মেরির মিনিট কুড়ির সাংবাদিক সম্মেলনের নির্যাসে যেন বারবার ফুটে উঠল এই বার্তা।

আগামী বছরেই টোকিওতে অলিম্পিক। সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। 'ইনটেন্স ট্রেনিং'য়ের জন্যই সরে দাঁড়িয়েছিলেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে। এখন শয়নে স্বপনে মননে মেরির দুনিয়ায় অলিম্পিক-ই। তিনি নিজেই কৈশোরের উচ্ছ্বাস নিয়ে বলছিলেন, "সামনেই রাশিয়ার কোয়ালিফাইং রাউন্ডের খেলা রয়েছে। সেখানে প্রস্তুতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। দিল্লিতে সতীর্থদের সঙ্গেই প্রস্তুতি সারছি। অলিম্পিকে অভিজ্ঞতাই আমার ভরসা।"

তাঁর বায়োপিকের সৌজন্যে অনেকেই হয়তো মেরির জ্বলন্ত স্ট্রাগলের সঙ্গে পরিচিত। বিয়ে, তিন সন্তানের জন্ম - কোনও কিছুই তাঁকে 'প্রথম প্রেম' বক্সিং থেকে সরিয়ে আনতে পারেনি। প্রতিদিন লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন সামাজিক ট্যাবু, ধ্যান-ধারণা এবং প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে। দমে যান নি। সেই 'অবাধ্য প্রেম' বক্সিংয়ের জন্যই হয়তো তিনি বলতে পারেন, "গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে বিভিন্ন খেলায় প্রচুর বিনিয়োগ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেতাব জিতলেই রয়েছে আর্থিক পুরস্কার। তবে পুরস্কার পেয়ে অনেকেই আত্মতুষ্টিতে ভোগে। খেলার মান কমে যায়। অথচ, আজও আমার পদক জয়ের খিদে গেল না। প্রতিদিন জেতার স্বপ্ন নিয়ে ঘুম থেকে উঠি। ছ'বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। পাঁচবার এশিয়ার সেরা। কমনওয়েলথেরও সেরা হয়েছি। কখনও থেমে যাই নি।"

রন্ধ্রে রন্ধে খেলার নেশা, আর জেতার উদগ্র বাসনা। তাই নিয়ে এখনও 'বেঁচে রয়েছেন' তিনি। রাজ্যসভার সাংসদ তিনি। অথচ সক্রিয় রাজনীতিতে কোনওদিন আসবেন না। জানিয়েই মঞ্চ ছাড়েন নারীশক্তির প্রতীক।

mary kom MS DHONI
Advertisment